পূর্নিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রূটি
চিয়াংনান তাসুয়ে (Jiangnan University) চিয়াংসু প্রভিয়েন্স এর উশি সিটিতে অবস্থিত। অতীতে ভার্সিটি টি উশি সাইন্স এন্ড টেকনোলজী কলেজ নামে পরিচিত ছিল। চির তরূন এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রয়েছে ফুড সাইন্স, কেমিকেল, টেক্সটাইল, মেকানিক্যাল, বিজনেস সহ আরো অনেক গুলো স্কুল। ফুড সাইন্স এন্ড টেকনোলজী এর জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়টি চায়নাতে প্রথম স্থান অধিকার করেছে।
গত বছর জুনে ইন্সিটিউট অব ফুড টেকনোলোজিস্ট IFT (১৯৩৮), শিকাগো ভিত্তিক একটি অরগানাইজেশন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড সাইন্স ডিগ্রিকে সীকৃতি দেয়।
IFT কতৃক সীকৃত সারা বিশ্বের কয়েকটি হাতে গোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চিয়াংনান তাসুয়ে একটি।
এবছর মে মাসে এর মধ্যে এখানে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ইনটারন্যাশনাল কালচারাল উইক। আমাদের ডরমে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নাগরীকের বাস। সংগত কারনেই অধিকাংশ স্টুডেন্ট ফুড সাইন্সের।
আমাদের সকল স্টুডেন্ট দের সুবিধা অসুবিধা দেখার জন্য আমাদের নিজস্ব কমিটি রয়েছে।
আর এই কমিটির জেনারেল সেক্রেটারী বাংলাদেশী। তাকেই সব ব্যাপারে বেশী দৌরাদৌরি করতে হয়। কালচারাল উইক উপলক্ষে উনি বেইজিং, বাংলাদেশ এম্বাসীর সাথে যোগাযোগ করে পোষ্টার, ট্যুরিজম গাইড, পতাকা, ইত্যাদি অনেক কিছুর ব্যাবস্থা করেন। ধন্যবাদ বাংলাদেশী এম্বাসীর সকলকে আমাদেরকে সাহায্য করার জন্য।
২৪ মে, সকাল থেকেই মাথাটা ভারি হয়ে আছে সবার।
আগের দিন রাতে অনেক কাজ করেছি। শহীদ মিনার, গরূর গাড়ী, আরো কত কিছু বানালাম। দেশে থাকতে কখনো এ কাজ নিজের হাতে করিনাই, সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলোই একাজ গুলো করত। বুঝলাম কত ধানে কত চাল। এত বড় প্রোগাম, আ্যরেন্জমেন্টের দায়িত্ব এবং এর সফলতা।
আমরা এখানে সর্বমোট পাঁচ জন বাঙ্গালী। কেউ কিন্তু ফ্রি নাই, কারো এক্সাম, কারো ল্যাব সব মিলিয়ে সবাই বিজি। বাট প্রোগাম সফল করতে হবে।
আজকে ফুড ফেস্টভাল। সকল দেশ তাদের কালচারাল ফুড রান্না করে খাওয়াবে।
বাজার থেকে দুটা মুরগী কিনে আনলাম, কারী করব। অনেকেই কিচেনে রান্না করে তাদের খাবার প্রজেন্ট করেছে। আমরা সরাসরি স্পটে রান্নার আয়োজন করলাম। আমি পিয়াজ, আদা, রসুন কাটা সুরু করলাম, অন্যরা মুরগী কেটে ধুতে লাগল। সবাই এসে ভীর করা সুরু করল, একি প্রশ্ন কি রান্না হবে?
মুরগী চড়িয়ে দিলাম, মসলা পাতি এড করলাম।
হায় হায়, মসলার ঘ্রানে মানুষ পাগল। সবাই উদগ্রীব, কখন রান্না শেষ হবে? এদিকে আমার মন ও ছটফট করতেছে, অন্যস্টলের খাবার গুলো মিস করতেছি। যাই হোক, অবশেষে রান্না শেষ হল। আমি শুধু বললাম, ইটস ওকে নাউ। ওহ মাইগড, মুহুর্তের মধ্যে ধুলার মত উড়ে গেল আমার দুইটা মুরগী।
ভাইকে বললাম, পাবলিক তো আমাদের খাবারের প্রশংসায় পন্চ্ঞমূখ। আরেক দফা চড়াতে হবে। সো আরো দুইটা মুরগীও চলে গেল, বাট পাবলিক সেটিসফেকশন আসেনা, ওদের আরো চাই। আমি বললাম, ভাই আর পারবোনা। তারপরে হালকা পাতলা কিছু ফ্রাই করে খাওয়ানো হোল সবাইকে।
অন্য দেশ গুলোর মধ্যে ছিল জাপান, কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আমেরিকা, মিয়ানমার, রুয়ান্ডা, মাদাগাসকার, লাওস, নিজার, সুদান, ভিয়েতনাম, অষ্ট্রিয়া, আরো অনেক আফ্রিকান কান্ট্রি। সামগ্রীক ভাবে খুবই ভাল ভাবে শেষ হল আমাদের প্রোগাম।
পরের দুই দইন ছিল কান্ট্রি প্রেজেন্টেশন এন্ড কালাচারাল শো। ভাল ভাবেই শেষ হয়েছিল আমাদের প্রোগাম। নিজের দেশকে অন্যদের সামনে পরিচিত করতে পেরে অনেক ভাল লেগেছিল।
[পোষ্ট টি অনেক আগেই লিখেছিলাম, মাঝে কিছু ঝামেলায় আর পোষ্ট করা হয়নি। অনকে দিন থেকেই ডেক্সটপে পড়ে আছে, তাই আজ কোনোমতে ফিনিশিং দিয়ে পোষ্ট করে দিলাম; ছবি গুলো সংগৃহিত (আমাদের কোনো ছবি দিলামনা, কেউ যদি মাইন্ড করে বসে !!!)] ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।