১) ব্রেন্ডান টেলরের বাংলাদেশ ফ্যাসিনেশন থেমেছে ১৭১ রানে। ১৫২.৩ ওভারের ইনিংসে একাই খেলেছে ৫৪ টা ওভার। 'বাংলাদেশ ফ্যাসিনেশন' একারণে বললাম যে টেলরের টেস্ট ব্যাটিং অ্যাভারেজ দক্ষিন আফ্রিকার সাথে যেখানে ৫ এর কিছু বেশি, ভারতের সাথে ৬ এর কিছু বেশি, পাকিস্তানের সাথে ৭ এর কিছু বেশি সেখানে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৯০ এর বেশি! অবশ্য শাহরিয়ার হাতে সুরেশ সরিষার তেল মেখে না নামলে আর আম্পায়ার টনি হিলের চোখে কিঞ্চিৎ সমস্যা না থাকলে অবশ্য এতটা ভুগতে হতো না। বেশ কয়েকটা এলবিডাব্লিউ দেওয়াই যেত। এই 'যেত'টা বাংলাদেশ ইনিংসে উল্টো 'যাবে' হয়ে গেলে অবাক হবো না।
২) জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং দেখে বছর ১০-১৫ আগের টেস্ট ম্যাচ গুলোর কথা মনে হতে বাধ্য। রানরেট মাত্র ২.৫৫। আড়াই এর ঘরে রান রেট রেখে সাড়ে তিনশো প্লাস রান শেষ কবে দেখেছি ঠিক মনে পড়ছে না। তবে বাংলাদেশীদের বাজে শট খেলে আউট হওয়া দেখার থেকে টেস্টে এই মন্থর ব্যাটিং দেখাও আমার জন্য দৃষ্টিসুখকর।
৩) এমনিতে কমেন্ট্রি শুনতে আনন্দবোধ করি।
কিন্তু এই ম্যাচে খুব বিরক্তি লাগছে। কেগ্যান মেথ, সিঙ্গি মাসাকাদজার ব্যাটিংয়ের সময় চলে আসে কবে কোন টেলএন্ডার বাংলাদেশকে জ্বালিয়েছে; সেই গিলেস্পি থেকে জহির খান, সব। আর বোলিং এর সময় এদের যত ফার্স্ট ক্লাস রেকর্ড নিয়ে কথাবার্তা। সিঙ্গি কবে প্রফেশনাল ফুটবলার ছিলো, কবে খেলা ছাড়লো, এসব। অতিমাত্রায় বিরক্তিকর।
তারপর মাঠে দর্শক বলতে গেলে নেইই। বাংলাদেশের জায়গায় অন্য কোনো দল থাকলে কেউ যদি বলতো প্রতি ঘন্টা খেলা দেখলে এক প্যাকেট করে হায়দারাবাদি বিরিয়ানি খাওয়াবে, তাও দেখতাম না।
৪) জিম্বাবুয়ানদের হেলমেটে ঠিক পাকিস্তানিদের হেলমেটের মতই দেখতে। একইরকম একটা তারকা আঁকা।
৫) পিচের চরিত্র বদলে গেছে অনেকটাই।
প্রথম সেশনে রবিউল-রুবেলের বেশ কিছু বল নিচু হয়ে এসেছে। গতকালের মত পেসারদের অ্যাসিস্ট করেনি তেমন। টেলরের কথা মতে সেটাই হওয়ার কথা। বরং স্পিনাররা বড় বড় টার্ণ পেয়েছে। সোহাগ-সাকিব তেমন না পেলেও এনামুল যথেষ্টই টার্ণ পেয়েছে।
আজকের সেরা বোলার এনামুলই। জুটি যখন ভাঙছিলো না, তখন সাকিবকে এনেছে ভালো কথা কিন্তু টেলএন্ডার আসার পরেও সাকিব কেন কন্টিনিউ করলো, বুঝলাম না। ফিজিও কী একদিনের মাথায় বল করার সবুজ সংকেত দিয়ে দিলো? তাহলে তো ভালোই। পরের ইনিংসে স্পিন বড় নিয়ামক হতে পারে। এই ইনিংসে একটা হ্যান্ডসাম লিড নিতে না পারলে সমস্যা আছে।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে চতুর্থ ইনিংস পর্যন্ত এই পিচের আচরণ ভালো থাকবে না।
৬) ইনিংসের প্রথম ৫ ওভারেই জহুরুল ইসলাম ৩ টা লাইফ পেয়েছে ধরতে গেলে। অমি গত দেড় দিন মাঠে থেকেই দেখেছে টেলর কিভাবে একটা লাইফ ১৭১ পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়েছে। আমার চোখে অমির সবচেয়ে বড় সমস্যাটা হলো অফস্ট্যাম্পের বাইরে ফুল লেংথ বলে পা না নিয়েই হুটহাট ব্যাট চালিয়ে দেয়। আর শাহরিয়ারের সেই 'তড়িঘড়ি'।
আরেকটা জিনিস খেয়াল করলাম, নাফিসের ফিটনেস লেভেল বেশ নিচে। জানি যে দেড়শ' ওভার ফিল্ডিং করেছে কিন্তু মাত্র কয়েকটা রান দৌড়ে নিয়ে যেভাবে হাঁপালো তা বেশ দৃষ্টিকটূ।
৭) ব্যাটিং ভালোই হয়েছে। এক উইকেট হারিয়ে ৯৫। ২৯৪ রানে পিছিয়ে।
হাতে ৯ উইকেট। খারাপ না। আহামরি কোনো বল করছে না জিম্বাবুয়ে। শুধু জার্ভিস আর ক্রিমারকে একটু দেখে খেললেই হবে। আশরাফুলকে বেশ কনফিডেন্ট লাগছে।
জহুরুলও শুরুর নরবড়ে ব্যাটিং কাটিয়ে উঠেছে। আগামীকাল প্রথম ঘন্টাটা ঠিকমত কাটিয়ে দিতে পারলেই হারারের আকাশের রৌদ্রজ্জ্বল সূর্যের মত একটা দিন অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্য। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।