আমরা হেরে যাইনি। এশিয়া কাপ না জিতলেও তোমরা আমাদের হৃদয় জয় করেছ। আমরা গর্বিত মিয়ানমারে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নেতৃত্বেই মুসলিম গণহত্যা চালানো হয় বলে এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স। ২০১১ সালে দীর্ঘ ৪৯ বছরের সেনাশাসনের অবসান হওয়ার পরপরই মুলত মুসলমানদের ওপর নির্যাতন শুরু হয়। নির্যাতনের পরিধি বাড়তে বাড়তে তা এখন গণহত্যায় পরিণত হয়েছে এবং দেশটির গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ব্যাহত হচ্ছে বলে জানায় রয়টার্স।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ মিয়ানমারের ঝলমলে প্যাগোডার জন্য ‘স্বর্ণভূমি’ নামে পরিচিত। কিন্তু বৌদ্ধ সেই স্বর্ণভূমিতেই ভিক্ষুদের নেতৃত্বে ‘৯৬৯’ তত্ব দিয়ে সংখ্যালঘু মুসলমানদের হত্যা এবং নির্যাতন করা হচ্ছে। ‘৯৬৯’ এমন একটি তত্ব যার মাধ্যমে গৌতম বুদ্ধের বিভিন্ন গুণবাচক বৈশিষ্ঠ বর্ণনা করা হয়। গত মার্চ মাসের শেষ নাগাদ মিইখতিলা শহরে হামলায় চারদিনে ৪৩ জন মুসলমানকে হত্যা করা হয়। কয়েকশ বাড়িঘর এবং মসজিদে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।
বৌদ্ধদের উস্কে দিতে দেয়ালে ‘চিকামারা’ রয়েছে ‘মুসলমানদের হত্যা করো’। প্রায় ৩০ জন প্রত্যক্ষদর্শীর তথ্য অনুযায়ী বৌদ্ধ ভিক্ষুরাই এই গণহত্যায় নেতৃত্ব দেয়। এসব ভিক্ষুদেরই গণতান্ত্রিক মিয়ানমারের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২১ মার্চ বৃহস্পতিবার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ২৫ জন মুসলমানকে হত্যা করা হয়। বৌদ্ধ হামলাকারীরা মুসলমান নিহতদের রক্তাক্ত দেহগুলো পাশের এক পাহাড়ে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ফেলে।
কয়েকটি লাশ কেটে জঙ্গলাকীর্ণ ডোবায় ফেলে দেয়া হয়। দশ বছরের কম বয়সী দুইটি শিশুর পোড়া লাশও দেখা গেছে সেখানে। এর আগে প্রায় একশ মুসলমানকে ধরে নিয়ে যায় বৌদ্ধরা। সেইসময় তারা এক যুবতীকে আটকে রাখে। ওই যুবতীর ঘাড়ে ধারালো অস্ত্র রেখে তারা পুলিশের উদ্দেশ্যে বলে,“যদি তোমরা আমাদের পিছু নাও তবে আমি একে হত্যা করবো।
” ম্যাশেটিসহ বিভিন্ন অস্ত্রে সজ্জিত বৌদ্ধরা সেই সময় হামলা চালিয়ে দোকান এবং ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। মধ্যাঞ্চল ছাড়াও দেশের প্রধান শহর ও বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনের কাছাকাছি এলাকায়ও দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে। এখানে পুলিশের সামনেই সংঘবদ্ধ দাঙ্গাবাজরা মুসলমানদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। ২১ মার্চের পরে এই ঘটনা ঘটলেও স্থানীয় সরকারের মুখ্যমন্ত্রী তিনদিন ধরে চলা এই দাঙ্গা প্রতিরোধে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেননি। তিনি কার্যত শহরের উগ্র বৌদ্ধ ভিক্ষুদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।
ভিক্ষুরা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যেতে না দিয়ে, উদ্ধারকারীদের বাধা দিয়ে এবং ধ্বংস কাজে নেতৃত্ব দিয়ে পুরো মুসলিম এলাকা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। এসব দাঙ্গার ঘটনা প্রতিরোধে দেশটির বিরোধীদলীয় নেত্রী শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সান সুকি কোনো ভূমিকা রাখেনি । এই বিষয়ে রয়টার্সের সঙ্গে তিনি কথা বলতেও রাজি হননি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।