Click This Link
সম্ভাব্য গ্রাহকের কর সনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) নেই তো কি হয়েছে। রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে অবৈধভাবে গ্রাহকদের টিআইএন সনদ এনে দেয় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। বিনিময়ে প্রতি গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া হয় ৭০০ থেকে এক হাজার টাকা। অথচ টিআইএন করতে কোনো ফি লাগে না। বছরের পর বছর ধরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড এ কাজ করে যাচ্ছে প্রকাশ্যে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড যা করছে, তা ব্যাংকিং নৈতিকতায় কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সূত্র মতে, টিআইএন করতে কোনো ফি লাগে না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে শুধু আবেদন করলেই এটা পাওয়া যায়। কিন্তু গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা বিভিন্ন পর্যায়ে ভাগ ভাটোয়ারা করে নেয় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড কর্তৃপক্ষ। অবশ্য এর সঙ্গে এনবিআররে কিছু অসাধু কর্মকর্তা জড়িত।
তাদের উৎকোচ দিয়ে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড এটি করে যাচ্ছে বছরের পর বছর। বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্যাংকের কার্ড বিভাগের কর্মীরা যোগাযোগ করে বলেন, টিআইএন না থাকলে কোনো সমস্যা নেই, আপনাকে এ জন্য কিছু করতে হবে না। শুধু একটি ফরম পূরণ করে দেবেন আর সঙ্গে ৭০০ টাকা। আমরাই আপনার টিআইএন এনে দেব।
গ্রাহক টাকা দিলে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড খুব অল্প সময়ে টিআইএন সনদ সংগ্রহ করে দেয়।
তথ্যমতে, গ্রাহকের কাছ থেকে টিআইএন ফি হিসেবে যে টাকা নেওয়া হয়, তার একটি অংশ খরচ করা হয় এনবিআরের কর্মকর্তাদের পেছনে। তাদের ঘুষ দিয়ে টিআইএন করিয়ে আনেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা। আর এর কিছুই জানেন না গ্রাহক। তার টিআইএন সনদ আসল না নকল তাও জানার সুযোগ থাকে না।
অনেক গ্রাহকের টিআইএনের মূল কপিও ব্যাংকের গ্রাহক ফাইলে থেকে যায় বলে জানা গেছে।
একজন গ্রাহক বলেন, “আমার টিআইএন ছিলো না। ব্যাংকের কর্মকর্তা বললেন এক হাজার টাকা দিতে। আমি দিয়ে দিয়েছি। এরপর আর কিছু বলতে পারব না।
তারা সব কিছু করে আমাকে বাসার ঠিকানায় কার্ড পাঠিয়ে দিয়েছে। টিআইএন করার সময় আমার আয় ব্যয়ের কি তথ্য তারা দিয়েছে তাও বলতে পারব না। ”
আরেক গ্রাহক বলেন, “আমাকে বলা হয়েছে টিআইএন বাবদ সরকারি ফি হিসেবে ওই টাকা নেওয়া হয়েছে। টিআইএন করতে যে ফি লাগে না তা আমি নিজেও জানতাম না। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড এমন প্রতারণা করলো!”
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, “স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের হয়ে টিআইএন সনদ সংগ্রহ করে দেয়, এমন কথা আমি আগেও শুনেছি।
তবে এটি তারা করতে পারে না। বিষয়টি যেহেতু সামনে এসেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক অবশ্যই এ ব্যাপারে জানতে চাইবে। প্রমাণ মিললে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ”
এ ব্যাপারে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড কর্তৃপক্ষের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ব্যাংকের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা গ্রাহককে টিআইএন সনদ করে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, “বিষয়টি এখন প্রকাশ্য হয়ে গেছে। এ নিয়ে আর কি লিখবেন। এটা তো এখন সবারই জানা। ”
ওই কর্মকর্তা গ্রাহকের কাছ থেকে ফি নেওয়ার বিষয়টিও স্বীকার করেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।