সেফ মোডে প্রবেশ করুন
প্রথমে আপনার পিসিটির ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করুন। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার সিস্টেম পুরোপুরি ভাইরাসমুক্ত না হচ্ছে, ততক্ষণ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখুন। এতে অনিষ্টকারী সফটওয়্যারগুলো আর বিস্তারলাভ করতে পারবে না অথবা আপনার প্রয়োজনীয় ডেটা চুরিও করতে পারবে না।
আপনার কাছে যদি মনে হয় আপনার পিসিটি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, তাহলে উইন্ডোজ সেভ মোডে রিস্টার্ট করুন। যেহেতু এই মোডে জরুরি সার্ভিস ছাড়া আর কিছুই চালু হয় না, তাই কোনো ভাইরাস যদি উইন্ডোজ লোড হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চালু হতো সেগুলো সেফ মোডে থাকায় আর লোড হতে পারবে না।
সেভ মোডে লোড হওয়ার জন্য প্রথমে পিসি শাটডাউন করুন। এরপর পিসি স্টার্ট দিয়ে F8 কি-টিকে বার বার চাপ দিন। আপনার সামনে আসবে অ্যাডভান্সড বুট অপশন মেন্যু। সেখান থেকে ‘সেফ মোড উইথ নেটওয়ার্কিং’ নির্বাচন করুন এবং এন্টার চাপ দিন।
এই সেফ মোডে আপনার পিসিটি যদি দ্রুত চলে, তাহলে ধরে নিতে পারেন আপনার পিসিতে ভাইরাস রয়েছে।
তবে এমনও হতে পারে, আপনার পিসিতে অনেক বেশি প্রোগ্রাম রয়েছে—যেগুলো উইন্ডোজের সঙ্গে সঙ্গে লোড হয়ে থাকে।
টেম্পোরারি ফাইলগুলো ডিলিট করুন
ভাইরাস স্ক্যান করার আগে আপনার টেম্পোরারি ফাইলগুলো মুছে ফেলুন। মুছে ফেলার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে ডিস্ক ক্লিনআপ টুলটি—যা উইন্ডোজের সঙ্গেই থাকে। একে পেতে পারেন তিন ভাবে—
১. start->search [disk cleanup]->enter|
২. start->All Programs->Accessories->System Tools->Disk Cleanup
অথবা
৩. উইন্ডোজ এক্সপ্লোরার থেকে হার্ডড্রাইভের ওপর রাইট ক্লিক করে প্রোপার্টিজ নির্বাচন করে ডিস্ক ক্লিনআপের অপশন পেয়ে যাবেন।
ম্যালওয়্যার স্ক্যানার ডাউনলোড করুন
আপনার মেশিনে যে অ্যান্টিভাইরাস রয়েছে সেই স্ক্যানার ব্যবহার করে স্ক্যান করলে কিন্তু আপনি ম্যালওয়্যারগুলো পাবেন না।
কারণ সে এই ভাইরাসগুলো ধরতে আগে ব্যর্থ হয়েছে বলেই আজ আপনাকে বিশেষভাবে স্ক্যান করতে হচ্ছে, তাই নয় কি?
ডাউনলোড করুন BitDefender Free Edition, Kaspersky Virus Removal Tool, Malwarebytes, Norman Malware Cleaner, অথবা SuperAntiSpyware. এগুলোকে বলে অনডিমান্ড স্ক্যানার। আর সাধারণভাবে আমরা যেসব অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করে থাকি তাদের বলে রিয়েল টাইম অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম। অনডিমান্ড স্ক্যানার আপনি একের অধিক ইনস্টল করতে পারেন, কিন্তু একের অধিক রিয়েল টাইম অ্যান্টিভাইরাস ইনস্টল করলে কিন্তু কাজ করবে না।
মনে রাখবেন, কোনো অ্যান্টিভাইরাসের সাহায্যে আপনি ১০০% নিরাপত্তা পাবেন না, আর তাই দুই-তিনটি স্ক্যানার ব্যবহার করে চেক করুন যেন আপনার মেশিন সম্পূর্ণরূপে অনিষ্টকারী সফটওয়্যার মুক্ত হয়।
ওয়েব ব্রাউজারটিকে ঠিক করুন
অনিষ্টকারী সফটওয়্যারগুলো আপনার উইন্ডোজের সিস্টেম ফাইল এবং অন্য সেটিংগুলোর ক্ষতি সাধন করে থাকতে পারে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যেটি ঘটে, তা হচ্ছে ব্রাউজারের হোমপেজ পরিবর্তন অথবা ইন্টারনেটের সংযোগ সেটিং পরিবর্তন করে ফেলা, যাতে ইন্টারনেট সংযোগের সঙ্গে সঙ্গে আবার আপনি এই ভাইরাস দ্বারা আবার আক্রান্ত হন।
আর তাই ব্রাউজার লঞ্চ করার আগে আপনার হোমপেজ এবং সংযোগ সেটিংগুলো পরীক্ষা করে দেখুন। ব্রাউজারে হোমপেজ পরীক্ষা করবেন এভাবে, start-> control panel-> internet options। যদি এখানে অপরিচিত কোনো ওয়েবসাইটের নাম দেখেন, যা আপনি এর আগে কখনও শোনেননি তাহলে use blank বাটনটিতে ক্লিক করুন।
এরপর সিলেক্ট করুন Connections ট্যাবটি এবং ক্লিক করুন LAN settings বাটনে।
আপনার আইএসপি যদি প্রক্সি ব্যবহার করতে না বলে আপনাকে তাহলে এখানে Automatically detect settings সিলেক্ট করা অবস্থায় থাকবে।
উইন্ডোজ নষ্ট হলে ফাইলগুলো রিকভার করুন
কোনোমতেই যদি অনিষ্টকারী সফটওয়্যারগুলোর হাত থেকে রক্ষা না পান অথবা উইন্ডোজ যদি ঠিকমতো কাজ না করে তাহলে আপনার হাতে থাকছে শেষ অস্ত্র উইন্ডোজ রি-ইনস্টল করা। তবে তার আগে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো সংরক্ষণ করুন ইউএসবি বা এক্সটারনাল ড্রাইভে। আপনার ই-মেইল ক্লায়েন্টের (আউটলুক বা উইন্ডোজ মেইল) সেটিং এবং মেসেজগুলো সেভ করতে ভুলবেন না। আপনার মেশিনের প্রয়োজনীয় ড্রাইভার, বিশেষ করে নেটওয়ার্ক ড্রাইভারটিকে সেভ করবার জন্য ব্যবহার করুন ডাবল ড্রাইভারের মতো সফটওয়্যার।
আপনি ব্যাকআপ প্রক্রিয়া শুরু করার আগেই যদি উইন্ডোজ কাজ করা বন্ধ করে দেয় অথবা স্টার্ট না হয়, তাহলে আপনার ফাইলগুলোতে প্রবেশ করার জন্য ব্যাবহার করুন হিরেন্স বুটসিডির মতো কোনো লাইভ সিডি।
সবকিছু ঠিকঠাকমতো ব্যাকআপ হওয়ার পর আপনার পিসিটিতে আবার নতুন করে উইন্ডোজ ইনস্টল করুন। ভাইরাস আক্রান্ত মেশিনে উইন্ডোজ রিইনস্টলের সময় ফরম্যাট করাটা বুদ্ধিমানের কাজ।
পিসিকে কীভাবে ভাইরাসমুক্ত রাখবেন
সবসময় রিয়েল টাইম অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করবেন। বাংলাদেশে অনেকেই অত্যধিক দামের কারণে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারগুলো কিনতে চান না।
তাদের জন্য একটা টিপস, অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানিগুলো তাদের ট্রায়াল সংস্করণগুলো একমাস থেকে তিন মাস পর্যন্ত ট্রায়াল হিসেবে ব্যবহার করতে দেয়। ডাউনলোড করুন ট্রায়াল সংস্করণ, ব্যবহার করুন একমাস, তারপর আরেকটি ডাউনলোড করুন, সেটা শেষ হয়ে গেলে আরেকটি, তারপর আরেকটি...! ভালো কিছু অ্যান্টিভাইরাসের মাঝে রয়েছে নরটন, অ্যাভাস্ট, এভিজি, কমোডো আর আপনার পিসিতে যদি অরিজিনাল উইন্ডোজ থাকে তাহলে ব্যবহার করতে পারেন মাইক্রোসফটের Microsoft Security Essentials। এই অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারটি সম্পূর্ণরূপে ফ্রি।
আপনার ব্যাকআপ করা ডাটাগুলো রিস্টোর করার আগে ভাইরাস স্ক্যান করে নিতে ভুলবেন না। উইন্ডোজ এবং অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারগুলো সবসময় আপ টু ডেট রাখাটাও ভাইরাসমুক্ত থাকার মূল চাবিকাঠি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।