আমি আজীবন লিখতে চাই ইনশা আল্লাহ্ । মনে রাখতে হবে যে, হাতের রেখা সমূহ এককভাবে কোন সম্পূর্ণ অর্থ প্রকাশ করেনা। একটি সমন্বিত পদ্ধতি অনুসরণ করে ফলাফল বর্ণিত হয়। কেননা কোন একটি রেখাই ব্যক্তিবিশেষে ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে থাকে। একটি একক রেখার গঠন সম্পূর্ণ কিছু নয়, অংশবিশেষমাত্র।
হাতের বিশেষ বিশেষ গড়ন বিশেষ বিশেষ নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের অস্তিত্বের প্রতীকস্বরূপ। তাই হাতের রেখা বিশ্লেষণ করতে হলে – হাতের শ্রেণী, তার বৈশিষ্ট্য, গ্রহের ক্ষেত্রের প্রাবল্য অনুযায়ী হাতের শ্রেণী, হাতের ত্বক বা চামড়ার গঠন, হাতের লোম, হাতের প্রকার (বৃহৎ/ক্ষুদ্র, স্বাভাবিক/অস্বাভাবিক), হাতের তাপ, করতলের ত্বক বা চামড়ার গঠন, তার বৈশিষ্ট্য, করতলের বর্ণ, করপৃষ্ঠের লোম, করতলের বিশেষ চিহ্ন সমূহ, করতলের চামড়ায় অঙ্কিত প্যাটার্ণ সমূহ, করতলের শুভ ক্ষেত্র, অশুভ ক্ষেত্র, অঙ্গুলির গঠন, বৈশিষ্ট্য, পর্ব সমূহ, বিশেষভাবে বৃদ্ধাঙ্গুলির গঠন, বৈশিষ্ট্য, পর্ব সমূহ, আকৃতি, ধরন, অঙ্গুলির অগ্রভাগের প্যাটার্ণ সমূহ, নখের শ্রেণী, বর্ণ, চন্দ্রমা, চিহ্ন, মনিবন্ধ, বাহু, অতিরিক্ত কোন তথ্য থাকলে তাহাও, রেখাসমূহের উৎপত্ত্বিস্থল, রেখার গতি, প্রকৃতি, বর্ণ, আকৃতি, গঠন, বৈশিষ্ট্য, রেখায় বিভিন্ন চিহ্ন, অতিরিক্ত কোন তথ্য থাকলে তাহাও, মূলরেখা ও সাহয্যকারীরেখা সনাক্ত করন, করতলের বিশেষ বিশেষ স্থানসমূহ (বৃদ্ধাঙ্গুলির নিচের অংশ, শিরোরেখা ও হৃদয়রেখার মধ্যবর্তী অংশ ইত্যাদি) চিহ্নিত করন, শিরোরেখার দ্রাঘিমাংশ অঙ্কন করে ধীশক্তি ও মানসিক উপলব্ধির মাত্রা নির্ণয় এবং অক্ষাংশ অঙ্কন করে ধীশক্তির ব্যাপ্তি ও পরিমান নির্ণয় করে মানসিক পরিধির একটি অত্যন্ত সূক্ষ্ম ছবি অঙ্কন, করতলে মনোজগত ও বস্তুজগতের ছক এবং অবচেতন মন ও সচেতন মনের ছক অঙ্কন করে সূক্ষ্ম ফলাফল বর্ণনা, লিঙ্গভেদে রেখার অর্থগত পার্থক্য, জাতিভেদে হাতের শ্রেণী ও রেখার বৈশিষ্ট্যগত অর্থ ইত্যাদি বিভিন্নভাবে বিশ্লেষণের জন্য হাতের ব্যবচ্ছেদ করে ফলাফল বর্ণিত হলে তবেই একটি পরিপূর্ণ সূক্ষ্ম সম্ভাবনাময় চিত্র অঙ্কন করা সম্ভব নতুবা নয়।
মানুষের হাত হচ্ছে আয়নার মত যেখানে প্রকৃত আপেক্ষিক দৃশ্যের মধ্যে জীবনের সবকিছু পর্যবেক্ষণ করা যায়। নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটে, কিন্তু মূল নীতির কোন ব্যতিক্রম হয়না। আমরা একটি সত্য অবশ্যই স্বীকার করব যে, প্রতিটি জীবন একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যে চলছে।
আর মানুষের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি বৈশিষ্ট্যগত প্রভেদ দেখা যায়! আর এই বৈশিষ্ট্যগুলি নির্ণয় করা যায় প্রত্যেকের হাত থেকেই। তাহলে বলা যায়, হস্তরেখাবিদ্যা এমনই এক অনন্য বিদ্যা যার তুলনা সে নিজেই। জগতের আর কোন বিদ্যার এই কৃতিত্ব নেই। দুঃখ হয় যখন দেখি এমন এক বিদ্যার উপর মিথ্যা অভিযোগ আরোপিত হয়। অথচ এটা কেউ বুঝতে চায়না যে, ব্যক্তিবিশেষের কর্মদোষ একটি মানবকল্যাণকর বিদ্যার উপর বর্তাচ্ছে।
যা উচিত নয়। বরং যা উচিত, তা কেউ করছেনা। উচিত হল, সেই ব্যক্তির কাছেই কৈফিয়ত চাওয়া যে, হাতের রেখা বিশ্লেষণের যে পদ্ধতির কথা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে তাকি সত্য, নাকি যেখানে সেখানে হাত ধরেই সবকিছু নির্দ্ধিধায় বলে দেয়া যায়? আমার চ্যালেঞ্জ রইল- তাদের প্রতি, যারা উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিকে অস্বীকার করবে। আমি তাদেরকে কিরো, বেনহ্যাম, নোয়েল জ্যাকুইন সহ অন্যান্য বিখ্যাত লেখকদের বই পাঠের অনুরোধ করব।
আমি বলতে চাই, সঠিকভাবে হাতের রেখা বিশ্লেষণ করতে হলে দুই হাতের ছাঁপ সহ উপরে উল্লেখিত অন্যান্য তথ্যাদি লিপিবদ্ধ করতে হবে।
তারপর দ্রাঘিমাংশ-অক্ষাংশ, মনোজগত-বস্তুজগত, অবচেতন মন-সচেতন মন ইত্যাদি ছক অঙ্কন করে, তার সাথে অন্যান্য ফলাফল সমন্বয় করে তারপরেইনা একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হতে পারে। আমি বলছি, যখন তখন যেখানে সেখানে হাত দেখে কখনোই কারো সম্পর্কে সম্পূর্ণ কিছু বলা যায়না। যতটুকু বলা যায় তা হল উপরে বর্ণিত পদ্ধতির মধ্যে একটি অংশের অসমন্বিত ফলমাত্র, যা সম্পূর্ণ নির্ভূল নাও হতে পারে এবং তা অবশ্যই অসম্পূর্ণ।
এব্যাপারে সর্বসাধারণের ভুল ভেঙ্গে দেয়ার উদ্দেশ্যেই আমার প্রয়াস। সাধারণ মানুষের জানার কথা নয় যে, যেখানে সেখানে হাত ধরেই সবকিছু নির্দ্ধিধায় বলে দেয়া যায়না।
বরং তাহারা সচরাচর দেখে থাকে তেমনটিই। আর তাহাই স্বাভাবিক মনে করে যেখানে সেখানে হাত বাড়িয়ে দেয়। প্রতারকেরা সর্বসাধারণের এই অজ্ঞতাটুকুর সুযোগটিই নিয়ে থাকে। আর তার দোষ বর্তায় মানবকল্যাণকর হস্তরেখাবিদ্যার উপর। তাদেরকে প্রতিহত করা উটিত।
মানুষকে বোকা বানিয়ে যারা রোজগার করে তারা হয়ত নিজেরাও জানেনা মহাসমুদ্রসম হস্তরেখাবিদ্যার বিন্দুমাত্র। জানলে আর প্রতারনার প্রয়োজন হতনা। তারা শুধু মানুষকে মোহিত করার মত কিছু টেকনিক্যাল কথাবার্তা শিখে রোজগারের পথে নেমেছে। প্রতারনা থেকে অব্যাহতি পেতে আমাদেরকে আরো সচেতন হতে হবে। আমি মনে করি এই লেখাটি যিনি পড়বেন তিনি অন্ততঃ প্রতারিত হবেননা।
তার সামনেও কেউ প্রতারিত হতে পারবেনা। তার পরিচিতরাও কেউ প্রতারিত হবেনা। এমনিভাবে একদিন প্রতারকদের দিন ফুরিয়ে যাবে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।