আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহান মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার বরকতে এদেশে বিপুল পরিমাণে মহামূল্যবান ইউরেনিয়াম আছে। ভারতসহ দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের কারণেই তা উত্তোলন হচ্ছে না। জনগণকে জনসচেতন হতে হবে।

অহন থিক্কা সব শয়তানরে দৌরের উপর রাখুম। সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম মুবারক। স্বাধীনতার পর থেকেই ভারত বাংলাদেশের উপর আধিপত্য বিস্তারে সচেষ্ট রয়েছে। সম্প্রতি ভারতের লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে বাংলাদেশের খনিজ সম্পদের উপর।

সিলেটের জৈন্তাপুর সীমান্তে একের পর এক হানা দিচ্ছে ভারতীয় বিএসএফ। মাছ ধরার অজুহাতে খাসিয়াদের নিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করছে যখন তখন। নিজ দেশের হাওরে নামতে বাধা দিচ্ছে বাংলাদেশিদের। একে কেউ বলছেন বিএসএফের উস্কানি, কেউ বলছেন স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের প্রতি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য। আর পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, জৈন্তাপুর সীমান্তের ‘ডিবি ও ‘কেন্দ্রি’ হাওরের ইউরেনিয়ামের কথা।

ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা এই দুই হাওরের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ এই এলাকা নিজেদের কব্জায় নিতেই বিএসএফ একের পর এক উস্কানি দিচ্ছে। ১৯৭৫ সালে মৌলভীবাজারের তৎকালীন বড়লেখা (বর্তমান জুড়ি) উপজেলার ফুলতলা ও সাগরনাল ইউনিয়নের মধ্যবর্তী হারাগাছা (ষাঁড়েরগজ) পাহাড়ে সন্ধান মেলে দেশের প্রথম ইউরেনিয়াম খনির। বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের তৎকালীন জ্যেষ্ঠ ভূতত্ত্ববিদ ড. ইউনুসের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ দল হারাগাছা পাহাড়ে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে ইউরেনিয়াম-প্রাপ্তির সম্ভাবনার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়। এরপর ওই পাহাড়কে তেজস্ক্রিয় এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে কমিশন। কিন্তু বাংলাদেশে ইউরেনিয়াম ব্যবহার ও উত্তোলনের অনুমতি না থাকায় এ প্রকল্পের কাজ ওই পর্যন্তই থেমে যায়।

১৯৮৫ সালে সম্ভাবনাময় সিলেটে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান করতে গিয়ে আবারও আলোচনায় আসে হারাগাছার ইউরেনিয়াম প্রকল্প। এ সময় ওই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে পুনরায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ শুরু হয়। সেই সঙ্গে সিলেটের বিভিন্ন স্থানেও ইউরেনিয়াম অনুসন্ধান চালায় আণবিক শক্তি কমিশন। পরীক্ষায় হারাগাছায় উন্নতমানের ইউরেনিয়াম-প্রাপ্তির বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত হয়। পরে ওই এলাকায় কয়েকটি কূপ খনন হলেও আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধের কারণে শেষ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম উত্তোলনের কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।

এরপর ১৯৮৫ সালে মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলার হারাগাছা পাহাড়ের সঙ্গে সিলেটের জৈন্তাপুরের বিভিন্ন স্থানে ইউরেনিয়ামের সন্ধান চালানো হয়। এ দুই স্থানে প্রায় ৩০টি কূপ খনন করে অনুসন্ধান চালিয়ে ইউরেনিয়ামের সন্ধান পায় আণবিক শক্তি কমিশন। কিন্তু সীমান্তবর্তী এলাকায় ইউরেনিয়ামের সন্ধান পাওয়া গেলেও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কারণে গবেষণা বেশি দূর অগ্রসর হয়নি। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ২৯ নভেম্বর মৌলভীবাজার সফরে গিয়ে হারাগাছার ইউরেনিয়াম প্রকল্প নিয়ে সম্ভাবনার কথা বলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী। ওইদিন মন্ত্রী এক সমাবেশে জানায়, হারাগাছার ইউরেনিয়াম আকরিক নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে এবং এ প্রকল্প থেকে ইউরেনিয়াম উত্তোলনেরও আশ্বাস দেয় সে।

কিন্তু বর্তমান সরকারের সাড়ে ৪ বছরেও ইউরেনিয়াম উত্তোলনের কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। গত কিছুদিন আগে আরো ইউরেনিয়ামের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (জিএসবি)। তাদের দেয়া তথ্যমতে জানা গেছে, পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা এবং বৃহত্তর সিলেট ও ময়মনসিংহে নদীবাহিত বালুতে অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ আরও কয়েক প্রকার ভারি খনিজ (মিনারেল) ও রাসায়নিকের পাশাপাশি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আহরণযোগ্য ইউরেনিয়াম রয়েছে। জিএসবি এর আগে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার গারো পাহাড়ের পাদদেশের এলাকায়ও ইউরেনিয়ামের সন্ধান পেয়েছিল। কিন্তু তা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আহরণযোগ্য ছিল না।

এরপর ১৯৮৯ সালে উল্লিখিত নদীগুলোর বয়ে আনা বালুতে গুরুত্বপূর্ণ ভারি খনিজ ও রাসায়নিকের সন্ধান পাওয়া যায়। এর ভিত্তিতে কার্বন মাইনিং বাংলাদেশ লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে সরকার ব্রহ্মপুত্র, যমুনার প্রায় চার হাজার হেক্টর চরাঞ্চল অনুসন্ধান জরিপের জন্য বন্দোবস্ত দেয়। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে কুড়িগ্রাম জেলার যমুনার বালুতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ইউরেনিয়ামসহ কয়েক প্রকার ভারি খনিজের নিশ্চিত উপস্থিতির কথা বলা হয়। ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পর জিএসবি পদ্মা, যমুনার বালুর রাসায়নিক ও খনিজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের জন্য একটি বিশেষ কর্মসূচি হাতে নেয়। এর অধীনে পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার অন্তত ১০টি স্থানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ২০ মিটার গভীরতা থেকে বালুর নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

ওই সব নমুনা দেশে ও বিদেশের গবেষণাগারে বিশ্লেষণ করা হয়। তার ফলাফলে দেখা গেছে, ওই নদীগুলোর বালুতে আহরণযোগ্য ভারি খনিজ ও রাসায়নিকের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৯ শতাংশ। অথচ ৭ শতাংশ থাকলেই তা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আহরণযোগ্য বিবেচিত হয়। প্রতি এক টন বালুতে যদি এক গ্রাম ইউরেনিয়াম পাওয়া যায়, তাহলে তা বাণিজ্যিকভাবে আহরণযোগ্য। সেখানে পাওয়া ইউরেনিয়ামের পরিমাণ এর চেয়ে বেশি।

উল্লেখ্য, ইউরেনিয়াম মহামূল্যবান একটি পদার্থ। পারমাণবিক গবেষণা, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং অত্যাধুনিক সামরিকশিল্পে এটি একটি অপরিহার্য উপাদান। এ ছাড়া যেসব গুরুত্বপূর্ণ পদার্থ ও ভারি খনিজের সন্ধান পাওয়া গেছে, বিশ্ববাজারে সেগুলোর দাম এবং চাহিদাও প্রচুর। উল্লেখ্য, ইউরেনিয়াম প্রধানত নিউক্লিয়াস চুল্লিতে তেজস্ক্রিয় পদার্থ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ইউরেনিয়াম পাওয়া গেলে দেশে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণ সম্ভব।

এমনকি পারমাণবিক বোমা বানানোও সম্ভব। এ ছাড়া মূল্যবান ইউরেনিয়ামের বিশাল মজুদ পাওয়া গেলে বিদেশে রফতানি করে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটানো যাবে। জাপান, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ইউরেনিয়াম কিনে থাকে। সেই মহামূল্যবান তেজস্ক্রিয় পদার্থ ইউরেনিয়ামের সন্ধান পাওয়ার ৩৮ বছর পরও উত্তোলনের কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না? কেন মূল্যবান এ খনিজ সম্পদটি অবহেলায় পড়ে আছে? এ প্রশ্নের সদুত্তর সরকারের কাছে নেই এবং সরকার স্বাভাবিকভাবে দিতেও পারবে না। এ প্রশ্নের উত্তর জনগণকেই খুঁজতে হবে।

জনগণকেই জনসচেতন হতে হবে এবং জনগণকেই দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠ হয়ে নিজেদের হক্ব নিজেদের আদায় করতে হবে। মূলত, এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা মুবারক ফয়েজ, তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন।

(আমীন) ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.