রাতের আকাশে অসংখ তারার মাঝে কিছু তারা আছে যার নাম কেউ জানেনা... তারার কি বা এসে যায় তাতে... তবু সে আলো বিলায়... শোবার ঘরে এসেই রেণু দেখতে পেল রিমঝিম ঘুমাচ্ছে। ছোট্ট করে একটা নিশ্বাস ফেললো। মেয়েটা বড্ড অবুঝ আর অভিমানী হয়েছে। বেশ কিছুদিন থেকে রংতুলির জন্য বায়না ধরেছে। অথচ সাহেদ সময়ই পাচ্ছেনা মেয়ের শখ পূরণ করতে।
ওভার টাইম করতে হচ্ছে। তাছাড়া অফিস শহরের বাইরে, যেতে আসতেই তিন ঘণ্টা লেগে যায়। রেণু মেয়ের মাথায় হাত রেখে ডাক দিলো,
-রিমঝিম ওঠ, ভাত খাবি না?
পাশ ফিরে শুয়েই আবার ঘুমিয়ে পরলো রিমঝিম। রাত সাড়ে দশটা বাজে অথচ সাহেদের ফেরার নাম নেই। প্রায় পাঁচ দিন মেয়েটা তার বাবা কে দেখেনি।
সাহেদ অনেক সকালে যখন বের হয়ে যায় তখন রিমঝিম ঘুমিয়ে, যখন বাসায় ফিরে তখনও মেয়েটা ঘুমিয়ে পরে। আজ বিকেল থেকেই বায়না করছে।
-আজ কি বাবা রঙতুলি নিয়ে আসবে? ও মা বলোনা, নিয়ে আসবে?
রেণু মেয়ের দিকে না তাকিয়েই বল্লো,
-তোর বাবা এখনো বেতন পায়নি।
-আমি কিচ্ছু বুঝিনা। রংতুলি আমার চাই চাই চাই।
রেণু কোন উত্তর দিলোনা। রিমঝিম আরও জোর কণ্ঠে বল্লো,
-রংতুলি না আনলে আমি আজ ভাত খাবো না।
-ঠিক আছে না খেয়েই থাকিস।
তখন থেকেই মেয়েটা ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে। কেঁদে কেঁদেই ঘুমিয়ে গেলো।
ডোর বেল এর শব্দ শুনে দরজা খুলে দেখলো সাহেদ ফিরেছে। অপরাধী হাসি দিয়ে বল্লো,
-আমার মামনি টা কোথায়?
-কাঁদতে কাঁদতে না খেয়েই ঘুমিয়ে পরেছে।
-টেবিল এ খাবার দাও আর রিমঝিম কে ঘুম থেকে তোল। আজ আমরা একসাথে খাবো। আমি হাতমুখ ধুয়ে আসি।
রিমঝিম একবার বাবার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকাচ্ছে আর একবার রংতুলির দিকে। আনন্দে ওর মুখ ঝলমল করছে। মা কে বল্লো,
-মা দেখো আমার রংতুলি। আমি এটা দিয়ে রংধুন আঁকবো।
-আগে চল ভাত খেয়ে নেই তারপর তোকে শহীদ মিনার আঁকা শেখাবো।
কতদিন আমার মামনিটার সাথে বসে খাইনা।
-সত্যি বাবা তুমি আমাকে শহীদ মিনার আঁকা শেখাবে? তাহলে আজ আমি তোমাকে মুখে তুলে খাইয়ে দেবো।
বাবা মেয়ে দুজনেই হিহি করে হাসতে লাগলো।
রেণু টেবিল আর রান্নাঘর গুছিয়ে শোবার ঘরে ঢুকে দেখলো বাপ মেয়েত ছবি আঁকা হচ্ছে। রিমঝিম একটু পরপর অকারণেই হেসে লুটোপুটি।
রেণু দরজায় দাড়িয়ে বাবা মেয়ের খুনসুটি দেখছে। মানুষ যখন অনেক শুখে থাকে তখনও মাঝেমাঝে চোখ ভিজে যায়।
***(আব্বু আম্মু কে)*** ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।