সাবেক নয়, অনিয়মিত নয়, স্ট্যান্ডবাই বা সাইডলাইনেরও নয়, এক্কেবারে খাঁটি তরতাজা তারকা। সদ্যসমাপ্ত বিশ্বকাপ রাগবিতে অস্ট্রেলিয়া দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন, হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে কিছুদিন খেলা থেকে বিরত আছেন। এসেছিলেন কফি খেতে আমাদের দোকানে। কাউন্টারের মেয়েটা জানতে চাইলো তিনি স্থানীয় কোন ক্লাবে খেলেন কিনা। প্রশ্ন শুনে খুব মজা পেয়েছিলেন জেমস হরউইল।
প্রথম যখন আমাদের দোকানে এসেছিলেন, তখন ঘটেছিল এটা। ব্রিসবেনেই থাকেন, আমাদের দোকানের কাছে তার বাসা। আমাদের নিয়মিত কাস্টমার। আজ যখন আসলেন, তখন মালিক ভেতর থেকে আমাকে ডেকে আনলেন। ‘তুমি কি রাগবি ইউনিয়ন পছন্দ করো ? জেমসকে দেখবে ?’ রাগবির টুকটাক খবর জানা আছে।
গতকালকেই হয়ে গেছে তুমুল জনপ্রিয় স্টেট অব অরিজিন, কুইন্সল্যান্ড আর নিউসাউথওয়েল্স এর মধ্যেকার জমজমাট লড়াই। কিন্তু না, জেমস যেটা খেলেন, সেটা রাগবি ইউনিয়ন।
বিশাল লম্বা, গড়পড়তা অজিদের চেয়েও লম্বা। রাগবি ফুটবল,ক্রিকেটের মতো না। প্রচুর তাগদ থাকতে হয় শরীরে, প্রচুর শক্তির প্রয়োজন হয়, প্রতিপক্ষকে ঠেলা, ধাক্কা দিতে হয়, কঠিন কঠিন ট্যাকেল করতে হয়।
এজন্য রাগবি খেলোয়াড়রা বিশাল দেহের অধিকারী হয়ে থাকেন। জেমস দেখতে তাদের মতো না। কিন্তু হ্যান্ডশেক করার সময় তার তাগদ পাওয়া গেল। লাল রংয়ের ট্র্যাকসুট পরেছে, সেখানে সেন্টজর্জ ব্যাংকের লোগো। জিজ্ঞেস করতে নিয়েছিলাম তুমি কি সেন্টজর্জে খেলো ? ভাগ্যিস করি নাই, তাহলে লজ্জায় পড়তে হতো।
আসলে জেমস অস্ট্রেলিয়া দলের ক্যাপ্টেন ঠিকই, তবে সেটা রাগবি ইউনিয়ন। ঘরোয়া লীগে সে কুইন্সল্যান্ড রেড দলের খেলে, যার স্পন্সর সেন্টজর্জ ব্যাংক। সিডনির তুমুল তুমুল জনপ্রিয় আরেকটা রাগবি লীগ এনআরএল-এ খুবই বিখ্যাত ও শক্তিশালী দলের নামও সেন্টজর্জ, তাদের স্পন্সরও সেন্টজর্জ ব্যাংক। আমি ভেবেছিলাম সে বুঝি এনআরএলের সেন্টজর্জ দলে খেলে। অস্ট্রেলিয়ায় তিন ধরনের রাগবি প্রচলিত -
- এএফএল, যেটাকে ফুটি বলে, প্রধাণত মেলবোর্নে খেলা হয়
- এনআরএল, সিডনি ও ব্রিসবেনে খুবই জনপ্রিয়
- রাগবি ইউনিয়ন
রাগবি বিশ্বকাপ বলতে যা হয়, সেটা এই রাগবি ইউনিয়ন, প্রতি চার বছর অন্তর খেলা হয়, যেখানে অস্ট্রেলিয়া দুইবারের চ্যাম্পিয়ান ও ত্রাস সৃষ্টিকারী দল, জেমস সেই দলের ক্যাপ্টেন।
রাগবিতে অস্ট্রেলিয়ার সাথে তুলনা করা যায় ফুটবলের জার্মানিকে।
আমাকে দেখে ক্রিকেটের কথা বললো। একসময় নাকি প্রচুর ক্রিকেট খেলেছে। তার দানবের মতো বিশাল থাবা দেখে মনে হলো, ক্রিকেট কেন, যেকোন খেলাতেই সে চ্যাম্পিয়ান হবে। ছবি তোলার অনুরোধ করলে সানন্দে রাজী হলো, খুবই হাসিখুশিভাবে পোজ দিলো।
কোন ডাইহার্ড রাগবি সাপোর্টারের জীবন ধন্য হয়ে যাবে এরকম ছবি তুলতে পারলে।
মালিক জানালো তার দোকানে নাকি অনেক স্পোর্টস সেলিব্রেটি প্রায়ই আসে। গ্লামার সাতারু ও অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ান স্পিফনি রাইস নাকি কিছুদিন আগে এসেছিলেন। কোন ক্রিকেটার ? মালিক জানালেন গ্রেগ চ্যাপেল নাকি আগে এখানে কোথাও থাকতেন। তখন নিয়মিত আসতেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।