আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভক্তের দ্বারে বান্ধা আছেন সাঁই।

ভক্তিতে মুক্তি মিলে। এ 'ভক্তের দ্বারে বান্ধা আছেন সাঁই', ভক্ত নাই তো ভগবান নাই। যেমন গুরু মেলে ঢের কিন্তু উপযুক্ত শিষ্য মেলেনা, তেমন শিষ্য না পেলে গুরুর গুরুত্ব থাকে না, পরম্পরাও বিনষ্ট হয়। গুরু যদি হন ভবতরী, তবে শিষ্য তাঁর কান্ডারী। এ ভক্তিভাব শ্রদ্ধারও অতিরিক্ত, ঠিক শ্রদ্ধায় একে পুরোটা ধরা যায় না।

গীতার মতে "যোগিনামপি সর্ব্বেষাং মদ্‌তেনান্তরাত্মনা। শ্রদ্ধাবান্ ভজতে যো মাং স মে যুক্ততমো মতঃ ||" ৬। ৪৭ অর্থাৎ “যে আমাতে আসক্তমনা হইয়া শ্রদ্ধাপূর্ব্বক আমাকে ভজনা করে, আমার মতে যোগযুক্ত ব্যক্তিগণের মধ্যে সে-ই শ্রেষ্ঠ। ” ভক্তিরও আবার নানান রুপ আছে---- রাজাভাবঃ-- সান্তভাব, নির্বিকার, সাধু-সন্ন্যাসীদের জীবনে সান্তভাবের প্রাধান্য দেখা যায়। প্রভূ বা স্বামীভাবঃ -- দাস্যভাব , সকল আল্লার বান্দার দাস্যভাব, মুসলমানরা নিজেদের আল্লার দাস ভাবে।

ভগবান রামচন্দ্রের দাস যেমন হনুমান। প্রভূর প্রকারভেদ হিসেবে কখনও যীশুর জন্য তিনি হন পিতা, আবার পূজারী হিন্দু তাঁকে দেখে সর্বজয়া, মঙ্গলকারিণি, দূর্গতিনাশিনী জগজ্জননী মায়ের রুপে। আবার গোপীদের জন্য তিনি হন পতি/স্বামী। "কোন প্রেমের প্রেমিকা ফাতেমা, করেন সাঁইকে পতিভাবনা। "-- লালন "ক্ষুদ্র আমাদের ’পরে করিয়ো না রোষ– স্নেহবাক্যে বলো, পিতা, কী করেছি দোষ!" "আমরা যে শিশু অতি, অতিক্ষুদ্র মন– পদে পদে হয়, পিতা, চরণস্খলন॥" --- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাধক রামপ্রসাদ, শ্রীরামকৃষ্ণের কালীভক্তি, মাতৃরুপে ঈশ্বারাধনার অত্যুজ্জ্বল উদাহরণ।

সখাভাবঃ -- সখ্যভাব , আল্লাহর সখা যেমন হজরত মোহাম্মদ (সাঃ), শ্রীকৃষ্ণের সখা অর্জুন, শ্রীদাম। অনেক সাধক ঈশ্বরকে নিজের বন্ধু বা সখা ভাবেন। বাৎসল্যভাবঃ-- ঈশ্বরের প্রতি বাৎসল্যভাব, যেমন মা যশোদা কৃষ্ণের প্রতি। হিন্দুধর্মে অনেক উপাসক ঈশ্বরকে পূত্রভেবে আরাধনা করেন। মধুরভাবঃ-- মধুর ভাব ঈশ্বরকে প্রিয়তম ভাবা, আশেক ভক্ত মাশুক বা প্রেমাস্পদের জন্য সর্বস্ব সমর্পণ করেন।

মধুরভাব সবচেয়ে গভীর ভাব, রাধার যেমন শ্রীকৃষ্ণের প্রতি। বাংলার যত বৈষ্ণব, বাউল সবাই মধুর ভাবের চর্চা করেন। পুরুষ হয়ে নারীসত্তার গান গেয়ে সৃষ্টির আড়ালে যে পুরুষাকার তার কাছে ধরা দিতেন। নারীর মধুরভাবে ভালবাসা, আত্মসমর্পণ পূর্ণাঙ্গ হয়। 'আমরা বন্ধুয়া বিহনে গো সহেনা পরানে গো একেলা ঘরে রইতে পারি না' 'কেন পীরিতি বাড়াইলিরে বন্ধু, ছেড়ে যাইবা যদি'।

'তোমরা কুন্জ সাজাও গো আজ আমার প্রাণনাথ আসিতে পারে। ' -- বাউল শাহ আব্দুল করিম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমপর্বের প্রায় সব গানই মধুর ভাবের গান। " ওলো রেখে দে সখী, রেখে দে, মিছে কথা ভালোবাসা । ...... ......... পরান সঁপিতে প্রাণের সাধন, লহো-লহো বলে পরে আরাধন– পরের চরণে আশা ॥" " আমি কেবল তোমার দাসী । কেমন করে আনব মুখে ‘তোমায় ভালোবাসি’ ॥" " বঁধু, তোমায় করব রাজা তরুতলে, বনফুলের বিনোদমালা দেব গলে ॥ সিংহাসনে বসাইতে হৃদয়খানি দেব পেতে, অভিষেক করব তোমায় আঁখিজলে ॥" " এখনো তারে চোখে দেখি নি, শুধু বাঁশি শুনেছি– মন প্রাণ যাহা ছিল দিয়ে ফেলেছি ॥ শুনেছি মুরতি কালো, তারে না দেখাই ভালো ।

সখী, বলো আমি জল আনিতে যমুনায় যাব কি ॥" সবশেষে ভক্ত আর ভক্তি নিয়ে ফকির লালনের গান ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.