আটপৌরে - হাবীবুর রহমান যদি থাকতো কাঠা তিনেক জায়গা ইস্কাটনে কিম্বা সিদ্ধেশ্বরীতে , বাবূইয়ের বাসার মতো ছোট একটি ঘর বানাতাম মুলি বাঁশের । তার উত্তরে সাধারণ কলাবাগান আর দক্ষিণে সারি সারি তিনটি নিমফলের গাছ -পূব কোণের লাউতলাটা চড়িয়ে দিতাম চালে । আর পশ্চিমে থাকতো তরকারির বাগান একফালি । আমার আটপৌরে বউটা নিমের শিকড়ে গরু বেধে মাটির কলসীতে পানি ঢালতো বেগুনের চারায়- আর রাগ করতো বারে বারে আমার ওপর যেমনটি করেনি কোনদিনও, ওর অভিমানী গন্ডে পশ্চিমের বুড়ো সুয্যিটার আভা ছড়িয়ে পড়তো হাসির ছটার মতো- আর কেউ না-হাসুক অন্তত আমি হাসতাম যতোটা মিষ্টি করে সম্ভব ! এদিকে আমার বাবলু আর রুবি মেতে থাকতো খেলায়, ঘাসের বিচি আর বালুর কুচি ঐ পূব দিকের পায়ে-চলা পথের দক্ষিণ মুড়োয় দরমা-দিয়ে-ঘেরা যে খেলার জায়গা থাকতো ওদের সেইখানে- হয়তো সেই খেয়ালেই রাগ ভাঙ্গতো গৃহিণীর- তাড়াতাড়ি নিজের হাতে রান্না করা শাক- ব্যঞ্জন নিয়ে খাওয়াতে বসতো ওদের । লাউয়ের কচি ডগায় হাওয়া জাগতো পূব-আকাশের, নিমের শাখায় কথা কয়ে উঠতো দুটো গাঙ্ শালিক- গরুটা হয়তোবা হাম্বা ডাকতো বাছুরের খোঁজে । রৌদ্র-ছায়ার নৈমিত্তকতায় দিন কাটতো মুক্তির নৈসর্গিক আনন্দে । আজকের এই ভাড়াকরা ফ্রেমে-আঁটা ইটের কারাগারে আবদ্ধ জীবনে তাই প্রতিদিন সকাল-বিকাল ভাবি যদি থাকতো কাঠা তিনেক জায়গা ইস্কাটনে কিম্বা সিদ্ধেশ্বরীতে , যদি থাকতো ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।