মঙ্গলে ২০২৩ সাল নাগাদ নভোচারী পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে নেদারল্যান্ডের বেসরকারি একটি মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এক খবরে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যাশেবল এ তথ্য জানিয়েছে। বিষয়টি যেন ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাসের হোসেন মিয়ার সেই ময়না দ্বীপে বসতি স্থাপনের মতো। যেখানে অল্প অল্প মানুষ থেকে বড় কিছুর পরিকল্পনা করেন হোসেন মিয়া। আবার কিছুটা যেন ‘রবিনসন ক্রুসো’ উপন্যাসের কাহিনির মতোও।
রবিনসন ক্রুসো যেভাবে নির্জন দ্বীপে জীবনের বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছিলেন, এবারে রবিনসন ক্রুসোর মতো কয়েকজন নভোচারীও সে জীবন কাটতে যাচ্ছেন অবশ্য তাঁদের গন্তব্য মঙ্গল গ্রহ।
নেদারল্যান্ডসের গবেষকেরা ২০২৩ সালে নাগাদ মঙ্গল গ্রহে বসতি স্থাপনের জন্য নভোচারীদের পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে দেবেন, কিন্তু নভোচারীদের জন্য পৃথিবীতে ফেরার পথ রুদ্ধ থাকবে। অর্থাত্, মঙ্গলে স্থায়ী বসতি গড়ার লক্ষ্যেই সেখানে যাবেন তাঁরা। আর তাঁদেরকে মানিয়ে নিতে হবে মঙ্গলের বৈরী পরিবেশ। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) রসদ সরবরাহের নয় দিনের সফল অভিযান শেষে পৃথিবীতে ফিরেছে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি নভোযান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের ড্রাগন ক্যাপসুল।
ড্রাগনের এই সফল অভিযান নিয়ে স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী এলন মাস্ক যথেষ্ট আনন্দিত হলেও মঙ্গল অভিযানে তিনি এখন পর্যন্ত কোনো পরিকল্পনা করেননি। পরিকল্পনা নেই নাসার হাতেও। কিন্তু মঙ্গলে বসতি স্থাপনের সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছে নেদারল্যান্ডের ‘মার্স ওয়ান’ নামের একটি বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান। পরিকল্পনার সঙ্গে কবে নাগাদ নভোচারীরা মঙ্গলের উদ্দেশে যাত্রা করবেন সেই তারিখটাও ঠিক করে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি।
ম্যাশেবল জানিয়েছে, ২০২৩ সাল নাগাদ চারজন নভোচারীকে কেবল মঙ্গলে পৌঁছে দেবে মার্স ওয়ান।
মার্স ওয়ান নিয়ে কাজ করছেন ডাচ উদ্যোক্তা ও গবেষক ব্যাস ল্যান্ডসড্রপ।
ল্যান্ডসড্রপের পরিকল্পনা অনুসারে, মঙ্গল গ্রহের মিশন সফল করতে ২০১৬ সাল নাগাদ যোগাযোগের জন্য কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাবে মার্স ওয়ান। ২০১৮ সালে রোবট পাঠিয়ে বসতি স্থাপনের জন্য উপযুক্ত জায়গা নির্ধারণ করবে প্রতিষ্ঠানটি। ২০২০ সালে মঙ্গলে নভোচারীদের টিকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলার কাজ করার কথা জানিয়েছেন ব্যাস। প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর মধ্যে থাকবে সৌর প্যানেল স্থাপন ও মঙ্গলের পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে পানি ও অক্সিজেন তৈরির বিষয়টি।
২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর চারজন নভোচারী মঙ্গলের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। প্রায় ১০ মাস সময় ধরে মঙ্গলের পথ পাড়ি দেওয়ার পর তারা বসতিতে পৌঁছাবেন। এরপর তাঁদের শুরু হবে রবিনসন ক্রুসোর মতো জীবন। কারণ, নভোচারীদের ফিরিয়ে আনার কোনো পরিকল্পনা রাখছেন না মার্স ওয়ানের উদ্যোক্তা ও বিজ্ঞানী ব্যাস ল্যান্ডসড্রপ।
প্রতি দুই বছর অন্তর আরও দুজন করে মানুষ এই স্থাপনা বসতি গড়ার জন্য পাঠাবেন গবেষক ল্যান্ডসড্রপ।
তবে, যারা নভোচারী হবেন তাঁরা আর কেউই পৃথিবীতে ফিরতে পারবেন না এমনটাই শর্ত থাকবে তাঁর
সুত্র : প্রথম আলো পত্রিকা ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।