আমরা হেরে যাইনি। এশিয়া কাপ না জিতলেও তোমরা আমাদের হৃদয় জয় করেছ। আমরা গর্বিত
হতাশ তাহরির স্কয়ারের বিপ্লবীরা
মিসরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বেশির ভাগ কেন্দ্রের প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে মুরসি কট্টর ইসলামি ভাবাদর্শ এবং শফিক ধর্মনিরপেক্ষ চেতনায় বিশ্বাসী।
২৩ ও ২৪ মে দুই দিনব্যাপী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট গ্রহণ করা হয়।
মোট ১৩ হাজার ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৯০ শতাংশ কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত মুরসি ২৬ শতাংশ এবং শফিক ২৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।
বেশির ভাগ বিশ্লেষক তাঁকে আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব ভাবতে নারাজ।
অন্যদিকে, আহমেদ শফিক জনরোষে ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধ্য হওয়া সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। সাবেক এই বিমানবাহিনী প্রধান মোবারকের শেষ জমানার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
দুর্নীতির ‘দোসর’ হিসেবেও তাঁর পরিচিতি রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এই ফলাফলকে অপ্রত্যাশিত বা চমক ভাবতে রাজি নন বিশ্লেষকেরা। তবে ফলাফলের এই বাস্তবতা তাহরির স্কয়ারের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া তরুণদের হতাশ করেছে। কায়রোর ঐতিহাসিক তাহরির স্কয়ারের একটি দেয়ালের দিকে তাকালে তরুণদের হতাশার বিষয়টি বোঝা যাবে। সেখানে শিকলবন্দী একটি ব্যালটবাক্সের চিত্র আঁকা রয়েছে।
বাক্সটির নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে আছে ক্ষমতাসীন সেনা কাউন্সিলের। পাশে লেখা আছে ‘বিপ্লব আরও একবার’।
কায়রোর একজন গাড়িচালক তারেক ফারুক (৩৪) বলেন, ‘আমি হতাশ। এটা কীভাবে ঘটল? মানুষ মুরসি বা শফিক—দুজনের কাউকেই চায় না। এ ঘটনা আমাদের সবার জন্য বিপর্যয়।
’
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের উদারপন্থী প্রার্থীদের ভরাডুবি ঘটেছে। আর ক্ষমতার কাছাকাছি চলে এসেছে কট্টর ইসলামপন্থীরা। বিকল্প হিসেবে আছে স্বৈরতন্ত্র ও দুর্নীতির সহযোগী হিসেবে পরিচিত পুরোনো চেনামুখ। অথচ দুই ধারার বিরুদ্ধেই মিসরের মানুষ আন্দোলন করেছে, রক্ত ঝরিয়েছে।
মিসরের অনেক মানুষের আশঙ্কা ব্রাদারহুডের প্রার্থী শেষ পর্যন্ত জয়ী হলে দেশটিতে শরিয়া আইন চালু করা হবে, ক্ষুণ্ন হবে সামাজিক স্বাধীনতা, খর্ব হবে ব্যক্তিস্বাধীনতা।
অন্যদিকে ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার কথা বললেও আহমেদ শফিককে তাঁরা ভাবছেন মোবারকের ‘কার্বন কপি’।
মিসরের একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হাসান নাফা বলেন, ‘আহমেদ শফিক ক্ষমতায় আসার অর্থ হচ্ছে ঘুরেফিরে পুরোনো শাসনে ফিরে যাওয়া। আর মুসলিম ব্রাদারহুড ক্ষমতায় আসার অর্থ হচ্ছে—আমরা এক ধরনের ধর্মীয় রাষ্ট্রের খুব কাছাকাছি চলে এসেছি। ’
মোহাম্মদ হানাফি নামের একজন কারখানা শ্রমিকেরও একই মত। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিপ্লবের কী ফল হতে যাচ্ছে?’ শফিক জয়ী হলে আগের শাসনব্যবস্থা আবার ফিরে আসবে আর মুরসি জয়ী হলে তা দেশের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে।
’
কায়রোর একটি প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ কর্মকর্তা ডালিয়া হামদি বলেন, ‘যা ঘটছে তা আমরা চাইনি, এর জন্য আমরা লড়াই করিনি। একজন নারী হিসেবে আমি পুরোপুরি হতাশ। ’ টি শার্ট ও জিনস পরিহিত ডালিয়া বলেন, ‘আমি এখন যা পরে আছি, ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই তা আর পরতে পারব না। ’ রয়টার্স। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।