আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ
বস্তুত ৯০এ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর গণচীনের উত্থানই মার্কিনিদের ভীতির কারণ হয়ে দাড়ায়। ওয়াশিংটন বহুদিন ধরেই ভারতের সাথে জোট বাধতে চাচ্ছিল। সর্বশেষ বাধা রাজীব গান্ধী ১৯৯১ সালে নিহত হলে ওয়াশিংটন ও দিল্লীর সম্পর্কও নতুন মোর নিতে থাকে। উল্লেখ্য নেহেরু ও তার কন্যা ইন্দিরা কেউই মার্কিনিদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আগ্রহী ছিল না। অবশ্য মার্কিন ডেমোক্র্যাটরা বরাবরই দিল্লীর সাথে সুসম্পর্কের জন্য আগ্রহী ছিল।
কিন্তু তাদের পেন্টাগন ও বিশেষ করে কর্পোরেটরা গ্রীণ সিগনাল না দিলে কি ডেমোক্র্যাট কি রিপাব্লিকান কারো পক্ষেই অন্য দেশের সাথে ইচ্ছা মাফিক সম্পর্ক গড়তে পারে না। কোন দেশের সাথে কেমন সম্পর্ক হবে সেটা তার কর্পোরেটই নির্ধারণ করে দেয়। রাজীবের নিহত হওয়ার পর বিশ্বব্যাংকের আমলা মনমোনন অর্থনীতি থাকাকালীন দিল্লী-ওয়াশিংটন সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়া শুরু করে। তারপরেও দিল্লীকে আরো কাছে পেতে ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানকে দিয়ে কারগিল ঘটনা ঘটানো হয়। উল্লেখ্য কারগিয়ে কাশ্মিরী গেরিলারা(৫০০-৬০০) এমন কব্জায় নেয় যে ভারতের ২১ হাজার সৈন্য একমাস চেষ্টা করেও কারগিল উদ্ধার করতে পারছিল না।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর বেশ কয়েকটি ফাইটার জেট ও হেলিকাপ্টার গেরিলাদের ষ্ট্রীংগারের আঘাতে ঘায়েল হয়। তখনই দিল্লী মার্কিনিদের শরণাপন্ন হলে বিল ক্লিন্টন তৎকালীন পাকি প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে ওয়াশিংটনে ডেকে পাঠান। বস্তুত মার্কিনি চাপে কারগিল হতে গেরিলাদের সরিয়ে নেয় পাকিস্তান। তারপর ভারত ও মার্কিনি সম্পর্ক আরো গভীর হয়। তাদের একটাই লক্ষ্য যে ভাবেই হৌক রেড ড্রাগন চীনকে ঠেকাও।
তাই সেই ১৯৯৯ হতে আজ অবধি ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে মধুচন্দ্রিমাই বলা যায়। পেন্টাগণ ভারতকে নিয়ে সামরিক পরিকল্পনাও গড়ে তুলছে অনেক দিন ধরেই। চীনকে রুখতে ভারতের বিকল্প নেই এটা ওয়াশিংটন ভাল করেই জানে। সি.আই.এ ও মার্কিন স্পেশাল ফোর্স এখন সারা ভারতেই বিদ্যমান;
Counter-terrorism: US special forces stationed in India, reveals Pentagon
Click This Link
বস্তুত ভারতের এই বদন্যতার কারণে ওয়াশিংটন এখন বলতে গেলে দিল্লীর গোলাম। ভারতকে খুব ভয় না পেলেও যথেষ্ঠ সমীহ করে।
এই কারণেই বাংলাদেশের দায়িত্বও দিল্লীকেই সপে রেখেছে মার্কিনিরা। বাংলাদেশে কোন গুরুত্ব পূর্ণ ইস্যুতে কোন সিদ্ধান্ত যেন ভারতের ক্ষতিকর তো দূর এমনকি স্বার্থের বিরুদ্ধে না যায় সেটাই ওয়াশিংটন মেনে নিবে। এই কারণেই আমরা দেখেছি কিভাবে ১/১১ হল। মঈন ইউ জাতিসংঘের কান্ট্রি ডাইরেক্টর রেনেটা লকের চিঠি জাল করে ক্যু ঘটিয়েছিল। এমনকি দীর্ঘদিন জাতিসংঘও এই ব্যাপারে দীর্ঘদিন নিশ্চুপ ছিল।
কারণ জাতিসংঘ জানে মার্কিনিরা ও মঈন দিল্লীর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। এরই মধ্যে হাসিনা প্রণবের মাধ্যমে দিল্লীর কাছে মূচলেকা দেয়। তাই ২০০৮ এর সাজানো নির্বাচনে হাসিনা ভূমি ধ্বস বিজয় অর্জন করে। যার প্রতিদান হাসিনা জানুয়ারী ২০১০ সালে দিল্লীতে গিয়ে গোপন শর্তে ভারতের সাথে চুক্তি করে। এটা আজও প্রকাশিত হয়নি।
তাই মার্কিনিরা যেমন এখন ভারতকে সমীহ করে তেমনি দিল্লীও হাসিনাকে সমীহ করে। এই কারণেই গত বছর হাসিনা গ্রামীণ ব্যাংক হতে ডঃ ইউনুসকে এমডির পদ হতে নির্বাহী আদেশে সরিয়ে দিতে পেরেছে। মার্কিনি হিলারী এমনকি বারাক ওবামাও এই বিষয়ে আপত্তি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও হাসিনা আমলে নেয়নি। বলতে গেলে হাসিনা মার্কিনিদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দেয়। এই কারণেই গত বছর একটি আর্টিকেল দিয়েছিলাম যে হাসিনার এত দুঃসাহস কোথায়;
ভারতের প্রবল আশীর্বাদে হাসিনা এখন যূক্তরাষ্ট্রকে পাত্তাই দিচ্ছে নাঃ হিলারী ইউনুসকে দূর্বল দরদ দেখানোর তামাশা বাদ দেন!
Click This Link
চুরুঞ্জিত বাবুতো বলেই দিয়েছে যে "বাঘের চেয়েও নির্দয় হল হাসিনা"।
তাই বিগত এক বছরেরও বেশী সময় ইউনুস ইস্যুতে এতটুকুও নমনীয় হয়নি হাসিনা। উপরন্ত এই বছর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিলারী ক্লিন্টনও তাগিদ দিলে এবার আর হাসিনা নয় অর্থমন্ত্রী মুহিত পর্যন্ত বলছেন যে ডঃ ইউনুস রাবিশ! তাহলে বোঝা যায় যেখানে অর্থমন্ত্রী নিজেই কঠোর ভাষা ব্যাবহার করছেন সেখানে তার প্রধানমন্ত্রীর কতটা জোরাল সমর্থন রয়েছে। সহজ অর্থেই হাসিনা ওয়াশিংটনকে গদাম দিয়েছে যার মেসেজ হল এই ইউনুসের ইস্যু বা পেচাল বাদ দাও! মার্কিনিদের এভাবে অপমান করা চারটি খানি কথা নয়। এই সব খুটির জোর দিল্লীর কাছে। আজকে দি ইকোনোমিক্স বলতে বাধ্য হচ্ছে;
‘বাংলাদেশের বিষাক্ত রাজনীতি: হ্যালো দিল্লি’
Click This Link
আমি এই ধরণের আশংকা সেই ২০০৫ সাল হতেই করে আসছি।
এখন হাসিনা সহজে বাংলাদেশের স্বার্থে পদক্ষেপ নিবে এমনটা ভাবা চরম বোকামী। কারণ দিল্লী তাকে ক্ষমতায় আনা সহ বহু সুবিধা দিছে। এর থেকে হাসিনার পক্ষে ফিরে আসা প্রায় অসম্ভব! কেবল গণ মানুষের ঐক্যবদ্ধতাই ভারতীয় আধিপত্যবাদকে রুখতে পারে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।