হাতুড়ি মারা উচিত
একজন মুসলিমকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় , “নামাজ পড়ে আপনার কি ফায়দা হয়?”। মেনে নিতে কষ্টহলেও এটাই সত্য যে বেশীরভাগ মুসলিমই তাঁর সদুত্তর দিতে পারবেনা। কয়দিন আগে “ট্র্যাডিশন” আর “আদর্শ” এই দুইটা নিয়ে একটা নোট লিখেছিলাম। লিখেছিলাম আবেগ শিরোনামেও কিছু লেখা। দুইদিন আগে যদি আমাকে প্রশ্ন করা হত, “তুমি কোন ধর্মের?”উত্তর __মুসলিম! “কেন তুমি মুসলিম?” এই প্রশ্নের উত্তরে আমার কাছে “আমার বাপ দাদা মুসলিম তাই আমিও মুসলিম” এই উত্তর ছাড়া কোন উত্তর ছিল না।
আমরা ৯০% মুসলিমের এমন এক দেশে বসবাস করছি যেখানে তলপেটের চাপসামলাতেই হিমশিম খাওয়া জনগণ “সকল ক্ষমতার উৎস(!)”। যেখানে বিভিন্ন কিসিমের ধারা সম্বলিত এক সংবিধান নাকি মানুষের সমাধান দেবে। যে সংবিধান কোন ক্ষমতালিপ্সু গদিওয়ালার একটু স্বার্থের বাইরে গেলেই সংশোধন সংশোধন এবং সংশোধন!! এই গণতন্ত্রের মাইংকারচিপা কি জিনিস তা মুসলিম বিশ্বের লাখ লাখ মুসলিম হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে,পাবে...পেতেই থাকবে। কিন্তু মূল বিষয় হল একটা সমস্যা থেকে একটা সমাধানের পথ আসবে। একজন মুসলিম যে আল্লাহকে বিশ্বাস করে, পরকালে বিশ্বাস করে, যে বিশ্বাস করে হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) আল্লাহ্র প্রেরিত রাসুল, যে বিশ্বাস করে কুরআন মানব জীবনের একমাত্র সমাধান, যে বিশ্বাস করে তাগুতকে ছেড়ে না দিয়ে তাওহীদ আসতে পারেনা...... সেঅবশ্যই অবশ্যই ইসলামের সমাধান মেনে নেবে।
নির্দ্বিধায় মেনে নেবে চুরের শাস্তি হাতকাটা। ব্যবিচারের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এটা মেনে নিতে তাঁর মন কচকচ করবে না। সে অন্তর থেকে বুঝতে শিখবে নন-মাহরাম এর সাথে মেলামেশা করা যাবেনা। সে বিশ্বাস করবে আল্লাহ আর রাসুল (সঃ) তাঁর কাছে নিজের সবকিছুর চেয়ে প্রিয় না হলে তাঁর জন্য জান্নাতে যাওয়ার পথ খোলা নেই। আর যদি...... যদি ইসলামের সমাধান আপনি মেনে নিতে না পারেন,যদি মনে করেন এসব সেকেলে, যদি মনে করেন কুফর-গনতন্ত্র এসব অনেক গ্রহণযোগ্য সমাধান,যদি গলা ফাটিয়ে বলেন যারা আল্লাহ্র আইন চাইছে তারা দেশকে আফগান গুহা বানাতে চাইছে তাহলে মিস্টার আপনি যেই হন না কেন , আপনি যেই হন না কেন আপনি স্পষ্টত একজন কাফের।
আপনি চাইলে আপনার মুসলিম নামটা ঝুলিয়ে রাখতে পারেন কিন্তু আপনি কাফের কাফের কাফের। কোন সন্দেহ আছে?? তাহলে সন্দেহ দূর করুন...
হিফাজতে ইসলাম। সত্যি বলতে কিছুদিন আগেও এই দলটিনিয়ে আমার কোন ধারণা ছিল না। এখনো স্পষ্ট কোন ধারণা নেই কিন্তু দেশের ১৬ কোটি মানুষের মত আমিও দেখেছি তাদের গণজাগরণ। আমিও দেখেছি তারা রাসুল (সঃ) এর অপমানের শাস্তির দাবিতে রাজপথে নেমেছে।
আমিও দেখেছি তাদের ১৩ দফা দাবি। আর এই ১৩ দফার পরইমূলত স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হচ্ছে দেশের ৯০% মুসলিম কিভাবে দুইটা ভাগে বিভক্ত হয়েগেছে। একেবারে স্পষ্ট। কোন লুকোচুরি নেই।
আচ্ছা ভাবতে কি খুব অবাক লাগে?? দুইজন মুসলিম।
দুইজনই আল্লাহকে বিশ্বাস করে, রাসুল (সঃ) কে আল্লাহ্র নবী মানে কিন্তু...... একজন বলছে ইসলামের আইন আরেকজন বলছে এগুলো সেকেলে। এগুলো আমাদেরকে আফগান, পাকিস্তান বানিয়ে ফেলবে, ব্যাকডেটেড করে দেবে। কি__ খুব অবাক লাগে?? আমার কিন্তু অবাক লাগেনা। বরংমুসলিম নামধারী মানুষগুলো যে এসব বলবে আমি জানতাম এবং এদের নিয়ে যে মানুষ হা হুতাশ করছে এটাই একরকম অবাক হওয়ার। কেন অবাক হচ্ছি না সেটাই এখন বলব......
খেয়াল করলে দেখবেন প্রতিটা সংগঠনের একটা সেন্ট্রাল কমিটি থাকে।
তাদের সেন্ট্রাল কমান্ড থাকে যে কমান্ডে পুরো সংগঠন চলে। এই সেন্ত্রালি কন্ট্রোল করার নিয়ম মুসলিমদের খিলাফা থেকে কাফেরদের কুফরতন্ত্র সবখানেই আছে। ইসলামের সেই সূচনালগ্ন থেকে মুসলিমদের মিশন ছিল মানুষের কাছে ইসলামের বাণী পৌঁছিয়ে দেয়া, সত্য দ্বীন ইসলাম কায়েম করা, মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। আর বিপরীত মিশনটাই ছিল কাফের মুশরিকদের। তারা ইসলামের সত্য বাণী প্রচার রোধ করতে চেয়েছে, সত্য ধর্ম ইসলাম কায়েমের পথ রুদ্ধ করতে চেয়েছে।
চেয়েছে মানুষকে মানুষের দাসত্বে আটকে রাখতে। কালের বিবর্তনে ইসলামের স্বর্ণযুগ পেরিয়ে বিশ্বশাসন এখন কাফেরদের হাতে। মুসলিমরা এখন গুরাবা হওয়া শুরু করেছে বিশ্বজুড়ে। আমরা মুসলিমরা কাফেরদের নিয়ে মাথা না ঘামাতে পারি কিন্তু কাফের-মুশরিকরা বসে নেই। তারা একের পরএক নীল নকশা এঁকেই যাচ্ছে মুসলিমদের ক্ষমতাছাড়া, দ্বীন ছাড়া করার জন্য।
সবকিছুর যেমন সেন্ট্রাল কমান্ড এন্ড প্ল্যানিং আছে কুফরদের এই নীল নকশাতেও আছে সেন্ট্রাল কন্ট্রোল। আর এই সেন্ট্রাল নিউক্লিয়াসটা হচ্ছে United States Of America. আপনার জানার, বুঝার ভুল থাকতে পারে কিন্তু সত্যহচ্ছে এটাই। আর এটাই যে সত্য এটা আপনাকে বুঝানোর জন্য আমি এখন একটা রিপোর্টের কথা বলব। ২০০৭ সালে র্যান্ড ইন্সটিটিউট থেকে প্রকাশিত রিপোর্টটির শিরোনাম “Civil Democratic Islam”.
এই রিপোর্ট প্রস্তুতকারিণীর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিয়েনিতে হয়। এই প্রতিবেদিকার নাম শেরিল বার্নাড।
সে নিজে একজন ইহুদী এবং সে বিয়েকরেছে ইসলামধর্ম ত্যাগকারী একজন মুরতাদকে যার নাম জালমে খলিলজাদ। সে যুক্তরাষ্ট্রসরকারের একজন উচ্চপদস্ত কর্মকর্তা এবং ইরাক, আফগান সহ বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিল। এই মুরতাদ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এতটাই আস্থাভাজন ব্যক্তি যে তাঁকে সাধারণত বিভিন্ন স্পর্শকাতর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। যাই হোক! সত্যিকার ইসলামকে দুনিয়াথেকে মুছে ফেলার জন্য দুনিয়ার এই সেরা তাগুত কি কি প্রস্তাবনা তৈরি করেছে তা আমরা বিস্তারিত জানব। আমি চেষ্টা করব এই রিপোর্টের প্রতিটা পয়েন্ট নিয়ে এর সাথে বর্তমান মুসলিমরা কিভাবে ধারাবাহিকভাবে মার খাচ্ছে তা দেখিয়ে দিয়ে কয়েকটা ধারাবাহিক লেখালিখতে।
কিন্তু আজকে আমি এই রিপোর্টের শুধু দুইটা পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করব। এইরিপোর্টে মুসলিমদের ইসলামী সত্ত্বা ধূলিসাৎ করে তাদের সংজ্ঞামত মোডারেট ইসলামের কারিকুলাম মুসলিমদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার নীল নকশা আঁকা হয়েছে। রিপোর্টের প্রস্তাবনার মধ্যে একটি হল, “Acceptance of non-sectarian sources of law”. যার অর্থ, “ধর্মনিরপেক্ষ আইন গ্রহণ করা”। অর্থাৎআপনি মোডারেট মুসলিম হতে চাইলে আপনাকে আল্লাহ্র আইন বাদ দিয়ে সেচ্ছায় মনবরচিত আইন মেনে নিতে হবে। কারণ তাদের দৃষ্টিতে মোডারেট মুসলিম আর চরমপন্থি মুসলিমের মধ্যপার্থক্য হল এরা ইসলামী শরিয়া প্রয়োগ করতে চায় মোডারেটরা শরিয়া চায় না।
তারা আরওস্পষ্ট করে বলে দিয়েছে যে, “The dividing line between moderate Muslims radical Islamistis whether Shariya should apply.” অর্থাৎ, “ চরমপন্থি তথা সত্যিকার মুসলিম ওমোডারেট র্যান্ড মুসলিমের মধ্যে আসল পার্থক্য হল শরিয়া আইন চাওয়া ও না চাওয়া”।
সুবাহানাল্লাহ! সুবাহানাল্লাহ! আল্লাহু আকবর। আসুন আমরা কাফেরদের এই সুন্দর(!) নীল নকশার সাথে নিজেদের মিলিয়ে দেখি। অবাক হওয়ার কিছু নেই। সত্যিই কিছু নেই, আমরা তো মগজ ইজারা দিয়ে দিয়েছি কাফেরদের কাছে।
আমরা আমাদের মগজ চাষ করার দায়িত্ব দিয়ে দিয়েছি কাফেরদের। আর তাঁরই ফলস্রুতি হচ্ছে আল্লাহ্র আইন সেকেলে, এই আইন মধ্যযুগীয়, এই আইন হলে দেশ আফগান গুহায় রুপ নেবে বুদ্ধিবৃত্তিক দেওলিয়াত্ব আমাদের মুসলিমদের পেয়ে বসেছে। আর এই বুদ্ধিবৃত্তিক দেওলিয়াত্বটুকু মুসলিমদের মগজে বদ্ধমুল করার জন্য সুশীল, মুনাফেক আলেম, মুরতাদভণ্ডদের নড়াচড়া আমরা স্পষ্টভাবে দেখতে পেয়েছি। আমি চিনে নিয়েছি তাদের। আমি বুঝেগেছি কাফেরদের কাছে আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক পরাজয় কেন, কিভাবে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের মুসলিমরা এই বিষয়ে একেবারেই গাফেল। তাদের কাছে এখনো ইসলামটা শান্তির তত্ত্বীয় বাণী মাত্র যে ইসলাম জীবনে প্রয়োগ করতে গেলে তাঁকে নাকি ব্যাকডেটেড হয়ে যেতে হবে। তাঁকে নাকি মধ্যযুগে ফিরে যেতে হবে! আরে আধুনিক! তুই কি জানিস মধ্যযুগ নিয়ে? তুই কিবুঝিস ইসলামের শরিয়ার মহাত্ব? কুফর গিলে গিলে আধুনিক সেজে আবার সরিষা দানা পরিমাণ ঈমান নিয়ে জান্নাতে সুখে শান্তিতে বসবাস করার স্বপ্ন দেখা মূর্খ মুসলিমের দল। কুফরের কাছে মগজ দিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক দেওলিয়া দেড় কেজি ভ্যালুলেস মগজের মনুষ্যপ্রজাতি!দেখ! ঐ দেখ! তুদের দেওলিয়াত্ব দেখে কুফর হাসছে। লজ্জা করেনা তোর?? লজ্জা করেনা?
হিফাজতেইসলামের যে দাবিটা নিয়ে আজ সবখানে হাসাহাসি, বিতর্ক, গালমন্দ আর ব্যঙ্গ তাদের সেই৪ নম্বর দাবিটি, “ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্য নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বলনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে”।
আমরা জানতাম তাগুতের কাছে এসব দাবির আসলে কোন অর্থ নেই। এসব দাবিকে মানুষের কাছে হাস্যকর করে তোলার বুদ্ধিবৃত্তিক হাতিয়ার তাদের অনেক আছে। কিন্তু আমাদের মূল আফসোসটা আমাদের নামকাওয়াস্তে মুসলিমদের জন্য যারা শুক্রবার আয়োজন করে জুমা পড়তে যায়, মিলাদে আশেকে রাসুল (সঃ) সাজে কিন্তু পর্দা তাদের কাছে নারীদের বন্দীত্বের প্রতীক। ব্যক্তিস্বাধীনতার এই যুগে ব্যবিচার, অনাচার, নারী পুরুষ অবাধ বিচরণ বন্ধ করতেহবে?? Comeon man! এগুলো তো ১৪০০ বছর আগের চিন্তাধারা! Be brave guys! চল টিজ করি(!), লিভ টুগেদার করি(!), রেপ করি(!)! be cool man! Be cool!
আবার সেই র্যান্ড ইন্সটিটিউট এর “Civil DemocraticIslam” এ ফিরে যাই। ঐ রিপোর্টের প্রস্তাবনায় আরেকটিinterestingpoint আছে।
তাদের মতে মোডারেট মুসলিমদের থাকতেহবে, “Respectfor the rights of women and religious minorities.” Well! খুবই ভালো। তবে এটা ইসলামিক respect নয়। তাদের মত করে respect. কিন্তু নারীর অধিকার, নারীর মুক্তি, নারীর আন্দোলন, নারীর ক্ষমতায়ন,নারীকে স্বপ্রতিষ্ঠিত, সমাজের চালিকাশক্তি নানাবিধ স্বপ্নে বিভোর করে আসলে যে কিহয়েছে তা আমরা সমাজের দিকে একবার চোখ ফেরালেই দেখি। স্কুলে পড়ার সময় ক্লাস এইটপর্যন্ত ছেলে মেয়ে আলাদা ছিল। এমন রাগ লাগতো!! ছেলে মেয়ে একসাথে হলে কি এমনক্ষতি(!)।
ক্লাস নাইনে উঠে সে আশা পূরণ হল(!)। আহা! ছেলে মেয়ের সে কি বন্ধুত্ব!আপনি থেকে তুমি, তুমি থেকে তুই, তুই থেকে......। why?? একজন মুসলিমের শিক্ষা তো এসব নয়! তাহলে আমাদের মনের মধ্যে এই আকুপাকু মাদকতা আসলো কোথা থেকে? এখানেই মূল প্রশ্ন my dear brothers. We areconvinced! We are totally convinced with the motivation of kuffar. আমরা এতটাই বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে কুফরের কাছে জিম্মি যে কুরানে যেখানে নন -মাহরামের সাথে মিলামেশা না করতে আল্লাহ নিজে বলেছেন সেই আদেশ আমাদের কাছে হয়ে গেল মধ্যযুগীয়?? নারীদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য, সম্মানের জন্য, ইজ্জতের হেফাজতের জন্য যে হিজাবের বিধান ইসলাম দিল সেটা হয়ে গেল নারীদের বন্দী করে রাখার ফন্দী? আর এসবের বিরুদ্ধে কুফরের নীল নকশা অনুযায়ী গড়ে উঠল নারী আন্দোলন। নারীদের মুক্তি দিতে হবে, স্বাধীনতা দিতে হবে, নারীরা যা খুশি তাই করবে। নারী পুরুষ সমান।
my dear sisters! ইসলামে নারীরা পরাধীন ছিল কবে একটু বুঝিয়ে বলবেন? নারীদের কবে অসম্মান করাহয়েছে একটু বলবেন? নারী পুরুষ দুই’কে আল্লাহ ভিন্নভাবে তৈরি করেছেন ভিন্ন ভিন্ন মিশন দিয়ে। নারী পুরুষ একে অপরের সহসঙ্গি কিন্তু তাদের সহসঙ্গি হওয়ারও কিছু স্বীকৃত এবং বৈধ পন্থা আছে। সেই পন্থা ভেঙ্গে যখনি নারীকে সবখানে প্রকাশ করা শুরুহয়েছে তাঁর ফল আমরা অতীতেও দেখেছি, দেখছি এবং এভাবেই চলতে থাকবে যতক্ষণ আল্লাহ চাইবেন। নারী পুরুষের কি সুন্দর অধিকার ইসলাম দিল তা কারো পোষায় না। এবার সবাই সমান হতে চায়।
বিটিভির শিক্ষামূলকঅনুষ্ঠানের মত সুর করে করে গাইতে হবে, “আমরা সমান সমান, ছেলে আর মেয়ে!”। সেকুলাস তামাশা। এক মেয়ে এক ছেলেকে বলছে, আমি আর তুমি সমান। ছেলে বলল, সমান কি করে! আমরা তো আলাদা! মেয়ে বলে না, আমরা সমান। ছেলে বলল, ঠিক আছে।
এই বলে সে তাঁর শার্ট খুলে ফেলল। তারপর মেয়েটিকে বলল, দেখি যদি সমান হয়ে থাকো আমার মত কর তো!! এখন মেয়েটি কি করবে?? খুবই দুঃখজনক হলেও সত্যি আমাদের মেয়েদেরকে এভাবে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে মাথায় ঢুকানো হচ্ছে যে ছেলে মেয়ে সমান কি করে হতে হবে!! সমান করতে গিয়ে তাদের কাপড় খুলেছে, তাদেরকে রং চং মাখিয়ে রাস্তায় রাস্তায় নাচিয়ে ছাড়ছে, যত পন্যের সাথে পন্য হিসেবে নারীকে ব্যবহার করা যায় তাঁর কিছুই বাদ রাখা হয়নি। সুবাহানাল্লাহ। তারপরও আমাদের বোনেরা এখনো সমান হওয়ার চেষ্টায় ছুটে যাচ্ছে...... ছুটছে...... ছুটছে। চলছে গাড়ী সিসিমপুরে.........
কিছুদিন আগে সদ্য চালু হওয়া sa টিভিতে জুমাবারে একটা লাইভ অনুষ্ঠান চোখে পড়েছিল।
ইসলামিক অনুষ্ঠান যার আলোচ্য বিষয় ছিল হিজাব। আলোচক একজন মহিলা! উপস্থাপিকা একজন মহিলা। উপস্থাপিকার বেশভূষা দেখেই বোঝা যাবার কথা কোন ধরণের হিজাবের কথা তারা বলতে এসেছে। আর সাথে কিছু মহিলা কেও নিয়ে আশা হয়েছে প্রশ্ন করার জন্য। ফোনে এবং সামনাসামনি প্রশ্নগুলোশুনে আমি বুঝে গেলাম সমাজে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে ইসলামের কোনই যায়গা নেই।
কুফর সব গিলে খেয়েছে। প্রশ্নগুলো ছিল এরকম, আমি কি ভ্রু প্লাগ করতে পারব? আমি কি জিন্স প্যান্ট পরতে পারব? আমাদের ক্লাসে সবাই স্কুলের ড্রেস পরে আসে! এখন এদের মাঝে আমি একা হিজাব করলে আমি তো ব্যাকডেটেড হয়ে যাব, আমি কি মেকাপ করে বাইরে যেতে পারব? সুবাহানাল্লাহ! আমাদের মুসলিমদের দেওলিয়াত্ব আর কত!! প্রতি ক্ষেত্রে আমরা কুফরের justification চাইছি। আমরা জানতে চাইছি এগুলো কেন আমরা নেব না! এই বুদ্ধিবৃত্তিক দেওলিয়া মুসলিমদের কাছে “ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার ব্যবিচার, অনাচার, নারী পুরুষ অবাধমেলামেশা বন্ধ করতে হবে” এটা মধ্যযুগীয় এই মত কি খুব অবাক হওয়ার মত বিষয়? মোটেই না। আমি একটুও অবাক হয়নি।
আমি শুধু নিজেদের মুসলিমাহ পরিচয় দেওয়া আমার বোনদের বিনয়ের সাথে একটা কথাই বলতে চাই আপনাকে প্রথমে ঠিক করতে হবে আপনার priority. আপনি যদি ইসলামের সমাধানে আস্থা রাখেন তাহলে আপনাকে মনে করতে হবে আল্লাহ্র দেওয়া অর্পিত দায়িত্বের জবাবদিহিতা নিয়েই আপনি রোজ কেয়ামতের মাঠে আল্লাহ্র সামনে দাঁড়াবেন।
আল্লাহ আপনার উপর কোন দায়িত্ব অর্পণ করেছেন? আব্দুর রাহমান ইবন আউফ(রাঃ) হতে বর্ণিত রাসুল (সঃ) বলেছেন,
“মুসলিম নারী যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়করে, রমজানের সিয়াম পালন করে, নিজের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে এবং স্বামীর আনুগত্যকরে তবে তাঁকে বলা হবে জান্নাতের যে কোন দরোজা দিয়ে ইচ্ছে তুমি ভেতরে প্রবেশ কর’। [মুসনাদে আহমদ হাদিসঃ ১৫৭৩, ইবনে হিব্বান। শায়খ আলবানি হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন। দ্রঃ সহিহুল জামে হাদিস :৬৬০]
সুনাহানাল্লাহ! আল্লাহ আপনাদের জন্য দায়িত্ব অনেক সহজ করে দিয়েছেন। কিন্তু আপনারা সমান হতে চাইলেন।
পুরুষের সঙ্গি করে যে আল্লাহ আপনাদের তৈরি করলেন সেই পুরুষের হতে চাইলেন প্রতিপক্ষ। সমাজ শৃঙ্খলা হারাল। যুগে যুগে আমাদের বাড়ীগুলোতে বেড়ে উঠা শুরু করল বিপ্লবী, সংগ্রামী আইডলরা। সহজ করে দেওয়া জান্নাতের স্বপ্ন বহু দূরে ঠেলেদিয়ে।
শেষকথাঃ হিফাজতের ১৩ টা দফার ২ টা দফা নিয়ে একটু আলোচনা করলাম মাত্র।
একজন মুসলিমের কাছে এর মাধ্যমে আমার বার্তা হল দল হিসেবে হিফাজত নিয়ে আপনার ভিন্ন মত থাকতে পারে। আপনি তাদের সমর্থন না দিতে পারেন। কিন্তু যে ১৩ দফার কথা বলা হচ্ছে এখানে যদি আপনার মন খুঁতখুঁত করে, যদি এগুলোকে মধ্যযুগীয় বর্বরতামনে করেন, যদি মনে করেন এগুলো একালের সাথে যায়না তাহলে you have a big problem with your imaan.
আর দাবির মূল সমস্যাটা হচ্ছে আমরা তাগুতের কাছে এ দাবি জানাব না। কারণ আমরা তাদের উত্তর জানি। আপনারা নিশ্চয় এর মধ্যে আইনমন্ত্রীর বক্তব্য শুনেছেন।
তিনি সংবিধানের এই ধারা ঐ ধারা, এই আইন সেই আইন দিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে ১৩ দফার একটি দফাও পূরণ করার মত না। বাংলা পরীক্ষা, ধর্ম পরীক্ষার পর এবার অংক পরীক্ষাটাও ভালই হল। তাওহীদের মূলটা হল তাগুতকে অস্বীকার। এই সরকার এখন যে view hold করে এতে করে আমাদের মুসলিমদের এই ধরনের দাবি তাদের কাছে হাস্যকর কৌতুকের মত।
দুইদিন আগে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিক্ষোভ সমাবেশ ১৩ দফার বিরুদ্ধে।
এতে সাম্প্রদায়িকতা,নারীর অধিকার হরণের নানাবিধ বুদ্ধিবৃত্তিক কথাবার্তা শ্রবণ করলাম। আর আমার বারবার র্যান্ড ইন্সটিটিউটের এক একটা প্রস্তাবনার কথা মাথায় ঘুরছিল। কি সুন্দর এক একটামিলে যাচ্ছে। যারা মুসলিমদের বুদ্ধিবৃত্তিক এই পরাজয়গুলো এখনো বুঝতে পারছেন নাতাদের এই রিপোর্টটা পড়ার অনুরোধ করছি। http://www.rand.org/pubs/monograph_reports/MR1716.html এখান থেকে পিডিএফ নিয়ে পড়তে পারেন।
আর আমরা চিনতে পারছি আমাদের চারপাশে কুফরেরদালালদের। amazing!শাহরিয়ার কবির আমাদের ইসলাম শেখায়। ইনু, সুরঞ্জিতরা আমাদের ইসলামের ফতওয়া দেয়। ১৩ দফা যাদের কাছে বর্বরতা তারা আমাদের শেখায় ইসলাম কেমন হবে?? তারা আমাদের দ্বীনের হিফাজতকারি? কখনই নয় আমরা তাদের কাছে ইসলাম শিখবনা। আল্লাহ বলেছেন,
“মুশরিকদের তো এটা কাজ নয় যে, তারা আল্লাহ্র মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণকারী সেবক হবে যখন তারা নিজেরাই নিজেদের কুফরির সাক্ষ দেয়,তাদের সমস্ত কাজ বরবাদ হয়ে গেছে, জাহান্নামেই তারা হবে চিরস্থায়ী।
আল্লাহ্র মসজিদের আবাদ তো তারাই করবে যারা আল্লাহ ও তাঁর শেষ দিবসের প্রতি ঈমান আনে, নামাযপ্রতিস্থা করে, যাকাত আদায় করে আর আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করে না”। [সূরা আত –তাওবাঃ১৭-১৮]
আমাদের মুসলিমরা যাদেরকে রোল মডেল হিসেবে বছরেরপর বছর ধরে পূজা করে আসছি আজ তারাই আমাদের ইসলাম ধ্বংসের নীল নকশা বাস্তবায়নের অগ্রদুত। জাফর ইকবালরা আমাদের বুঝাবে যৌবন সে তো ভাবালুতায় মিশে যাওয়ার সময়, হিজাব নারীদের মানসিকভাবে বন্দী করেছে! হুমায়ূনআজাদ, তসলিমা নাসরিনরা নারীদের জরায়ুর স্বাধীনতা চাইবে! নাটক, সিমেমা, গল্প উপন্যাসে আমাদের মুসলিমরা জানবে ইসলাম কত নিষ্ঠুর(!) একটা ধর্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত বিদ্যাপীঠে ছেলে মেয়েরা পাবে দিনে তিন বেলা নাস্তিকতার পাঠ। শুনবে ইসলাম নিয়ে যতসব আজে বাজে কাহিনী।
তারা কুফরের দালালদের কাছে intelectualy convined হবে যে ইসলাম সেকেলে......now do furti……let’srock the party!! জীবন একটাই। এখানে পেছন ফিরে তাকানোর সময় মানুষ খুবই কম পাই রে ভাই। একদিন আল্লাহ্র কাছে দাঁড়াতে হবে অবনত মস্তকে। কেউ থাকবেনা সাথে, কেউ না। কি তৈরি করছি আমরা সেই দিনটির জন্য? নিজের প্রতি সৎ থেকে প্রশ্নটা একবার নিজেকে সবাই করি।
কুফরের যা দেখছি তা ভ্রম মাত্র। রঙিন পর্দা একদিন খসে পড়বে। একদিন সত্য উন্মোচিত হবে। যেদিন পতপত করে ইসলামের পতাকা উড়বে সেদিন হয়ত আমার পরের প্রজন্মের কোন ইসলামের তাজা রক্ত ইসলামের ঝাণ্ডা উচু করে দেখিয়ে দেবে ইসলাম সেকেলে নয়। ইসলাম বর্বর নয়।
ইসলাম ন্যায়, সত্য আর আদর্শের এক জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ড। এখানে যেই আসে পুড়ে খাঁটি সোনা হয়ে বের হয়। একদিন সেই পরশ পাথরের সন্ধান তোরা পাবি। আর না পেলে আফসোস করবি_____ এপারে আর ওপারে! আল্লাহ সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।