আমরা হেরে যাইনি। এশিয়া কাপ না জিতলেও তোমরা আমাদের হৃদয় জয় করেছ। আমরা গর্বিত ‘তোমরা পত্রিকা চালিয়ে যাও। আমাকে নিয়ে ভেবো না। ’ আমার দেশ অফিস থেকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে স্টাফ রিপোর্টার মাহবুবুর রহমানকে একথাই বলেছিলেন মাহমুদুর রহমান।
সকাল ৯টার দিকে ২০১২ সালের ১৪ই ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় করা একটি মামলায় পুলিশ আমার দেশ অফিস থেকে গ্রেপ্তার করে মাহমুদুর রহমানকে। ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি (মিডিয়া) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহ এবং তথ্য প্রযুক্তি আইন ২০০৬ এর ৫৬ ও ৫৭ ধারায় মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে সাদা পোষাক ও পোষাকধারী অর্ধশতাধিক পুলিশের একটি দল আমার দেশ কার্যালয় কর্ডন করে। দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীকে গেট খুলে দিতে বললে তারা বাধা দেন। এসময় নিরাপত্তা বিভাগের সুপারভাইজার আবদুর রহমান ও অফিস পিয়ন মাহমুদকে মারধর করে পুলিশ।
পরিচয় জানতে চাইলে জোড় করে পাঞ্চ কার্ড নিয়ে আমারদেশ অফিসে প্রবেশ করে। অফিস স্টাফদের ঠেলে ডিবি পুলিশ সোজা প্রবেশ করে মাহমুদুর রহমানের কক্ষে। লুঙ্গি পরে মাহমুদুর রহমান তখন নাস্তা শেষে চা খাচ্ছিলেন। চা শেষ করার সুযোগ না দিয়েই পুলিশ দশ মিনিটের মধ্যেই অপারেশন শেষ করার তাগিদ দিতে থাকে। তখন মাহমুদুর রহমান তার কক্ষে দু’রাকাত নামাজ পড়ার অনুমতি চাইলে পুলিশ রাজি হয়নি।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন আমারদেশ পত্রিকার সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, নামাজের অনুমতি না পেয়ে মাহমুদুর রহমান দুটো বই ও কোরআন শরীফ নিতে চান। তখন পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, আপনি পাক পবিত্র আছেন? মাহমুদুর রহমান বলেন, আমি পাক পবিত্র আছি। তখন তাকে একখানা ছোট কোরআন শরীফ সঙ্গে নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়। পরে অস্ত্র তাক করে জোর করে রুমের বাইরে নিয়ে যায়।
এর আগে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান পাজামা পড়তে চাইলে পড়তে দেয়া হয় নাই। জুতা পড়তে চাইলেও পারেননি, স্যান্ডেল পরেই তাকে পুলিশের সঙ্গে গাড়িতে উঠতে হয়েছে। পুলিশ এসময় মাহমুদুর রহমানের ব্যাক্তিগত ল্যাপটপ, কম্পিউটার ও সিসি ক্যমেরায় ধারণকৃত ছবি, মেমোরি কার্ড ও অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে যায়। দায়িত্বরত আমারদেশ ফটোগ্রাফার গ্রেপ্তারের ছবি তুলতে চাইলে তাকেও বাধা দেয়া। ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়া হয়।
মাহবুব সাংবাদিকদের আরও বলেন, মাহমুদুর রহমান একান্ত আলাপে আমাদের বলেছেন, আমার কাছে সংবাদ এসেছে, আমাকে গুম ও হত্যার চেষ্টা চলছে।
মাহবুব বলেন, ‘আমি পুলিশ কর্মকর্তার কাছে জানতে চেয়েছি কেন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, উপরের নির্দেশেই। আমার দেশে’র সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করার বিষয়ে জানতে জাইলে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ক্ষমতা থাকলে সবই করা যায়। ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান আরও জানান, নানা ধরনের সমস্যা ও তদন্তের কারণে তাঁকে এতদিন গ্রেপ্তার করা যায়নি।
শিগগিরই তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। এদিকে মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি। তারা এ গ্রেপ্তারকে গণতান্ত্রিক রীতিনীতির পরিপন্থি বলে অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেছে। এদিকে, মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএফইউজে ও ডিইউজে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।