যুব সমাজের মাঝে ক্রমবর্ধমান তামাক ব্যবহার কমানোর পাশাপাশি তামাকজনিত রোগ ও মৃত্যু হ্রাসে সরকারকে তামাক নিয়ন্ত্রণে আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তামাক কোম্পানিগুলোর ভ্রান্ত প্রচারণায় কর্ণপাত না করে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ও সকল ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের কর বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। আজ সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, অরুণোদয়ের তরুন দল ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট-র যৌথ উদ্যোগে আইন সংশোধন ও কর বৃদ্ধির দাবিতে আয়োজিত কঙ্কাল সমাবেশে বক্তারা এই দাবি জানান।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ মাহবুবুল আলম, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন এর সাধারন সম্পাদক হেলাল আহম্মেদ, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট-র ন্যাশনাল এডভোকেসী অফিসার সৈয়দা অনন্যা রহমান, নাটাব-র ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার আব্দুল আলীম, পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলন (পবা)-র সভাপতি আবু নাসের খান ও অরুণোদয়ের তরুন দল সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবু। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট-র নেটওর্য়্যাক অফিসার ইমন রহমান।
সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, তামাক ব্যবহার মানুষকে রোগ, মৃত্যু আর অর্থনীতিক ক্ষতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তামাক ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশ প্রতিবছর ৫৭,০০০ মানুষ মারা যায় এবং ৩৮২০০০ মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করে, এ সংক্রান্ত রোগের জন্য চিকিৎসা খাতে ব্যয় হয় ১১০০০ কোটি টাকা। রোগ ও মৃত্যু সৃষ্টিকারী এ পণ্য নিয়ন্ত্রণে আইনের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, শতভাগ ধূমপানমুক্ত পাবলিক প্লেস ও পরিবহন, প্যাকেটের গায়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবানী নিশ্চিত, তামাক চাষ বন্ধ, তামাক সেবন ত্যাগে সহযোগিতা প্রদান এবং তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আবু নাসের খান বলেন, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দূর্বলতার কারণে তামাক কোম্পানিগুলোর অপকৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছে, পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধূমপান নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না। দেশের খাদ্য উৎপাদনের জমি চলে যাচ্ছে তামাক চাষের দখলে।
তামাক পাতা প্রক্রিয়াজাত করনে গাছ কেটে বন উজার করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য, অর্থ এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হওয়া সত্ত্বেও প্রতিবছর নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য সে অনুপাতে বৃদ্ধি পাচ্ছে না।
হেলাল আহমেদ বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে, রাজস্বের ক্ষতি হবে এ ধরনের অপপ্রচারের তথ্য তুলে ধরে তামাক নিয়ন্ত্রনে আইন সংশোধন ও কর বৃদ্ধির মতো কার্যকর পদক্ষেপ এর বিরোধীতা করার পাশাপাশি আইন সম্পর্কে জনগণ ও সরকারের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্থ করে আসছে। তামাক কোম্পানিগুলো বিভিন্ন ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কার্যক্রমের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অপকৌশল আড়াল করতে চাচ্ছে । কোম্পানিগুলোর এ ধরনের প্রহসনমূলক কার্যক্রম বন্ধে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সমাবেশে বক্তারা দেশের মানুষকে রোগ ও মৃত্যু হতে রক্ষায় অবিলম্বে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন-২০০৫ সংশোধন, আসন্ন বাজেটে সকল ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের উপর উচ্চ হারে কর আরোপ, অধূমপায়ী জনগণের রক্ষায় পাবলিক প্লেস ও পরিবহন ১০০% ধূমপানমুক্ত, নিরক্ষর লোকদের জন্য তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবানী প্রদান, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ, খাদ্য সংকট রোধ ও কৃষি জমি রক্ষায় তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে জোর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার দাবি জানান। এছাড়াও উক্ত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড পিপল ট্রাস্ট, গ্রীণ মাইন্ড সোসাইটি, রিলেসন, মানব উন্নয়ন সংস্থা সহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা প্রমুখ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।