তামাকজনিত রোগ ও মৃত্যু হ্রাসে অবিলম্বে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন
সংশোধনের দাবীতে সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান কর্মসূচী
তামাক ব্যবহারজনিত কারণে রোগ, মৃত্যু এবং চিকিৎসাখাতে রাজস্ব ব্যয় হ্রাসে অবিলম্বে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ জরুরী। আইন পাসের পরও তামাক কোম্পানিগুলো আইনের কতগুলো ধারা অমান্য করে নিত্য নতুন কৌশলে মানুষকে ধূমপানে উদ্বুদ্ধ করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। আইনের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও তামাক কোম্পানিগুলোর নিত্য নতুন কার্যক্রম বন্ধ করতে আইন সংশোধনে পদক্ষেপ গ্রহণ অতি গুরুত্বপূর্ণ। আজ সকাল ১১ টায় শাহবাগ, জাতীয় জাদুঘর এর সামনে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট আয়োজিত“তামাকজনিত রোগ ও মৃত্যু হ্রাসে অবিলম্বে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করা হোক” শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচি থেকে এই অভিমত ব্যক্ত করেন। এছাড়াও সাতক্ষীরা, বাগের হাট, খুলনা, যশোহর, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহসহ সারাদেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় একই দাবিতে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট-র সদস্য সংগঠনগুলো এ ধরনের কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়।
বক্তারা, সচিত্র স্বাস্থ্যসতর্কবানীর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ নিরক্ষর। এ সকল জনসাধারণকে তামাকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবানী প্রদান করতে হবে। পৃথিবীর উন্নত দেশে কোম্পানিগুলো সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবানী প্রদান করলেও, বাংলাদেশে প্রদান করছে না। তারা আরো বলেন, পাবলিক পে¬স, পরিবহনে ও কর্মস্থলে পরোক্ষ ধূমপানের কারণে ধূমপান না করেও প্রায় ১ কোটি নারী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ধূমপানে নারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রেক্ষিতে মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ব্যহত হচ্ছে।
এ সকল নারীদের তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব হতে রক্ষায় সকল পাবলিক পে¬স, পরিবহন ও কর্মক্ষেত্রে ১০০% ধূমপানমুক্ত করা প্রয়োজন।
আইনভঙ্গ করে বিজ্ঞাপন প্রচারের অভিযোগ তুলে তামাক কোম্পানির শাস্তি দাবি করে বক্তারা বলেন, কিশোর ও তরুন প্রজন্মকে ধূমপানের নেশা থেকে বিরত রাখতে আইনে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু কোম্পানিগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নানা ধরনের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশের তরুণ প্রজন্মকে ধুমপানে উৎসাহী করতে বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছে। নাটক সিনেমায় ধূমপানের দৃশ্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের তরুণ সমাজকে রক্ষায় তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।
বক্তারা বলেন সামাজিক দায়বদ্ধতা কোম্পানিগুলোর এমন একটি কার্যক্রম যার মাধ্যমে তারা নিজেদের অপকর্মকে আড়াল করে থাকে। এ সকল কার্যক্রমের মাধ্যমে তারা মানুষের সহনুভুতি আদায় করছে। তামাক কোম্পানীগুলো একার্র্যক্রম করেই ক্ষান্ত নয়, বিভিন্ন কুটকৌশলে নীতি নির্ধারক ও প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদেরও প্রভাবিত করছে। সরকারের কর্মকর্তাদের কোম্পানিগুলোর সাথে কিভাবে কার্যক্রম করবে সে বিষয়ে সুপষ্ট নীতি থাকা প্রয়োজন। এধরনের নীতি তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সরকারের নীতিকে কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
তামাক কোম্পানিগুলোর ভ্রান্ত প্রচারণা গ্রহণ না করে, বরং জনস্বাস্থ্যের বিষয়কে প্রধান্য দিয়ে সরকারের নীতি গ্রহণ করা, তামাক কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে নমনীয়তা পরিহার করার সুপারিশ করা হয়। কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন প্রত্যাশার সেক্রেটারী জেনারেল হেলাল আহমেদ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের আতিউর রহমান মাসুদ, মানবিকের রফিকুল ইসলাম মিলন, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের ডিরেক্টর (প্রোগ্রাম এন্ড প্লান) সৈয়দ মাহবুবুল আলম, গ্রীন মাইন্ড এর নির্বাহী পরিচালক একলাবের শামছুল আলম, নিরাপদের ইবনুল সাইদ রানা, সিরাক বাংলাদেশের এএম সৈকত প্রমুখ। অনুষ্ঠানে নাটাব, প্রজ্ঞা, সেতু-শেরপুর, সাড়ডা, সাস, হিতৈশী বাংলাদেশ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।