মানুষ কিছু জানত না বলে সে জানার আগ্রহে ছিল ভরপুর,এখন মানুষ কিছু জানে বলেই সে অজানাকে পাঠিয়েছে বহুদূর সে প্রায় অনেক বছর আগের কথা। বিশ্বের বুকে জন্ম নিয়েছিল হ্যামিলন নামের একটি রাষ্ট্র। যদিও এর নাম আগে হ্যামিলন ছিল না , এটি ছিল ইষ্ট এবং ওয়েষ্ট হ্যামিলন নামের দুটি একত্রিত রাষ্ট্র যেখানে ওয়েষ্ট ইষ্টের উপর কর্তৃত্ব দেখাতো। একদিন ইষ্ট হ্যামিলনের শান্তিপ্রিয় মানুষ তাদের দাবি আদায়ের জন্য ওয়েষ্ট হ্যামিলনের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর ইষ্ট হ্যামিলন শুধু হ্যামিলন নামে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়ায়।
এরপর কিছুদিন এখানকার জনগন বেশ সুখে শান্তিতে ছিল। অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার চাকা প্রতিটি পরিবারের বাড়ির সামনে দিয়ে গড়িয়ে যেতে লাগল। দেশ চালানোর জন্য সেখানে গনতান্ত্রিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করা হল। জনগনের মধ্যে প্রভাবশালীরা বিভিন্ন প্রতুশ্রুতি দিয়ে জনগনের ভোট কিনে হ্যামিলনের শাসন ব্যবস্থা নিজেদের দখলে নিয়ে নিল।
কিন্তু আস্তে আস্তে সরকারের কতিপয় নেতাদের মধ্যে দূর্নীতি রোগ ছড়িয়ে পরল।
চারিদিকে খুন,ছিনতাই,রাহাজানী ইত্যাদি ছড়িয়ে পরতে লাগল। আজ এ মরে তো কাল সে। নির্বাচনের সময় দেওয়া বিভিন্ন প্রতিশ্রুতির কথা সরকার বেমালুম ভুলে গেল। কিন্তু জনগন নিরুপায়,চোখের সামনে দিয়ে তাদের টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে,লুটেপুটে খাওয়া হচ্ছে। বিরোধীদল চেষ্টা চালিয়ে গেলেও সরকারের ক্ষমতার কাছে মাথা নত করে ফেলেছে সকল চেষ্টা।
ইতোমধ্যে সরকারের বিভিন্ন অপকর্মের কথা জনগনের কাছে জানাতে সোচ্চার হয়ে ওঠে সে দেশের সাংবাদিক মহল। সরকারের একের পর এক অভ্যন্তরিন খবর ফাস হতে থাকে। ওদিকে সরকারও সাংবাদিকদের ঠেকাতে উঠে পড়ে লাগে। শুরু করে গুপ্ত হত্যা। প্রান দিতে হয় দুইজন সাংবাদিককে।
ফুসে ওঠে মিডিয়া। খুনিদের খুজে বের করতে চাপ দিতে থাকে সরকারের উপর। খুনিদের খুজে বের করার আশ্বাস দিয়েও ব্যর্থ হয় সরকার। অতঃপর একদিন-
পত্রিকায় সরকারের একের পর এক অভ্যন্তরিন খবরের ফাস হওয়া দেখে রাগে ক্ষোভে মাটিতে পত্রিকা ছুড়ে ফেললেন প্রধানমন্ত্রি। রিমোট নিয়ে টিভি ওপেন করলেন।
টিভিতে খবর হচ্ছে। খবরে বলছে," সাংবাদিক দম্পতির খুনিদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খুজে বের করতে না পারায় কাল সারা হ্যামিলনে হরতালের ডাক দিয়েছে বিরোধীদল। " আরেকটা চ্যানেলে বলছে," শহরে একের পর এক গুপ্ত হত্যায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে জনগন। সেই সাথে শহরে বেড়ে যাচ্ছে চুরি ডাকাতি,গুম হবার মত নানান ঘটনা। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে দেখা করা হলে তিনি বলেছেন যে দেশের আইন শৃঙ্খলার অবস্থা নাকি আগের যেকোন সময়ের চেয়ে ভাল।
" রাগের মাথায় হিন্দি সিরিয়ালের চ্যানেল ধরলেন প্রধানমন্ত্রী এবং মনে মনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে গাল পারলেন। কি দরকার ছিল এই কথাটা বলার। নাহ,এইভাবে আর বসে থাকা যায় না। জনগনের নজর সরাতে হবে। ততক্ষনাত জরুরি মিটিং ডাকলেন প্রধানমন্ত্রী এবং সকল মন্ত্রীদের বলে দিলেন তাদের দলের মাষ্টারমাইন্ডকে ধরে নিয়ে আসতে।
অতঃপর-
প্রধানমন্ত্রীঃ মিষ্টার মাষ্টার মাইন্ড,আপনি হয়ত বুঝতে পারছেন আপনাকে এখানে কি জন্য ডাকা হয়েছে। কোন উপায় বের করুন কিভাবে বিরধীদল ও জনগনকে চুপ রাখা যায় তার পাশাপাশি আমাদের একটু সুনামও হয়।
মাষ্টার মাইন্ডঃ নজর সরানো যাবে তবে হারানো সুনাম ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা একটু কঠিন তবে অসম্ভব নয়। কিন্তু ম্যাডাম,এর জন্য আমি কি পাবো?
প্রধানমন্ত্রীঃ শুনলাম তোমার নাকি মন্ত্রী হবার শখ। আমি আবার সবার প্রতিশ্রুতি পূরন করি।
যাও,তোমাকে মন্ত্রী করে দিব তোমার পছন্দের কোন মন্ত্রনালয়ে
মাষ্টার মাইন্ড উঠে চলে গেল। পরেরদিন সব টিভি চ্যানেলে খবর বের হল," কোন এক মন্ত্রীর গাড়িতে টাকার বস্তা পাওয়া গেছে কিন্তু মন্ত্রীর অস্বীকার"
খবরটা পরে প্রধানমন্ত্রী তো রাগে ফায়ার। মাষ্টার মাইন্ড এটা কি করল? ডেকে পাঠানো হল তাকে।
প্রধানমন্ত্রীঃ তুমি এটা কি করলা?
মাষ্টার মাইন্ডঃ আরেহ ম্যাডাম একটু ঠান্ডা মাথায় ভাবেন। যে দুইজন সাংবাদিকরে হত্যা করা হয়েছে তাদের খুনিদের ধরা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সবার নজর ওই মন্ত্রীর উপর দিলাম।
মন্ত্রী সাহেব তো মাত্র কয়দিন হলেন এসেছেন। তাই তাকে যদি এবার বলে কয়ে কোন ভাবে মন্ত্রীত্ব থেকে সরানো যায় আর তদন্তের নামে পদত্যাদ করানো যায় তাহলে বিরোধীদল যতই চ্যাচাক না কেন সবাই আপনাদেরি ভাল বলবে
প্রধানমন্ত্রীঃ কিন্তু মন্ত্রী যদি শুনতে না চায়?
মাষ্টার মাইন্ডঃ অবশ্যি শুনবে। তাকে না হয় দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হবে । তারপরও না শুনলে তার ঘাড়েই দোষটা চাপাইয়া দিবেন।
প্রধানমন্ত্রীঃ সাবাস ব্যাটা।
খুব ভাল কাজ করেছ।
মাষ্টার মাইন্ডঃ তাহলে এবার ম্যাডাম আমার উপহারটা যেটা আপনি কথা দিয়েছিলেন?
প্রধানমন্ত্রীঃ উপহার দিব বলে কথা দিয়েছিলাম? হেহ,এতগুলা জনগনকে দেওয়া কথাই ভুলে যাই আর তোমার কথা মনে রাখব? যাও যাও,কিছুই পাবে না। তোমাকে যে দলে রেখেছি এটাই অনেক বড় উপহার
মাষ্টার মাইন্ডঃ ঠিক আছে যাচ্ছি আমি। তবে একটা কথা,আমাকে আবার আপনার দরকার হবে কিন্তু তখন আমাকে আর পাবেন না।
পরেরদিনে সকল পত্রিকায় বেরোল," ১৭ এপ্রিল বিরোধীদলের জনৈক নেতাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এটা সরকারিই করিয়েছে বলে দাব সাধারন মানুষ আর বিরোধীদলের। কঠোর কর্মসূচির ঘোষনা বিরোধীদলের"
মাষ্টার মাইন্ড কিন্তু যে কোন দলের হতে পারে। রাজনীতিবিদদের থেকে বড় মাষ্টার মাইন্ড আর কেউ নেই। ইনিই বা কোন দলের নুন আসলে খান সেটাও কিন্তু তিনি বলে যাননি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।