আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এমভি টাইটানিক!

ভালো। মিস্টার চৌধুরী হলেন বিশাল শ্রেণীর শিল্পপতিদের একজন। তিনি চৌধুরী গ্র“প অব ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক। তার একমাত্র কন্যা মিস রোজ। ছোটবেলায়ই মাকে হারায় রোজ।

একে তো ধনীর দুলালী, তার ওপর অল্প বয়সে মা হারা মেয়ে তাই বাবার আদরে আদরে মাথায় উঠে বসে সে। অত্যন্ত চঞ্চল এবং আহ্লাদী মেয়ে হিসেবেই চৌধুরী বাড়িতে বেড়ে উঠতে থাকে রোজ। তার অনেক সখী আছে। তারা সব সময় রোজের আশপাশে ঘুর ঘুর করে। এদিকে জ্যাক হল চৌধুরী বাড়ির একজন কাজের লোক।

তার বাবা অতি অল্প বয়সে মারা যান। চৌধুরী বাড়ি থেকে যে বেতন পায় জ্যাক তা দিয়ে অনেক টানাটানি মাকে নিয়ে খেয়ে পরে বেঁচে থাকে জ্যাক। জ্যাক গরিব হওয়ায় চৌধুরী কন্যা রোজ তাকে পাত্তাই দেয় না। পদে পদে জ্যাককে অপমান করে সে। চৌধুরী সাহেবের ব্যবসায়িক পার্টনার হলেন খান সাহেব।

খান সাহেবের একমাত্র ছেলে ক্যাল। ক্যাল হল এ ছবির ভিলেন। খান সাহেব পরিকল্পনা করেন যে করেই হোক চৌধুরী সাহেবের একমাত্র কন্যা মিস রোজকে ক্যালের সঙ্গে বিয়ে দেবেন। এতে করে চৌধুরী সাহেবের সব সম্পত্তির মালিক হয়ে যাবেন তিনি আর তার ছেলে,রাজকন্যা রাজত্বÑ সব হবে নিজের। সখিদের নিয়ে একদিন শপিং করে বাসায় আসছিল রোজ।

পথিমধ্যে হঠাৎ ইভটিজারদের ক্ষপ্পরে পড়ে গেল সুন্দরী রোজ। ইভটিজাররা রোজকে ঘিরে ঘুরতে থাকল এবং শিস বাজাতে থাকল। রোজ চিৎকার করা শুরু করল, বাঁচাও, বাঁচাও। কে আছ বাঁচাও। ইভটিজারদের নেতা অট্টোহাসি দিয়ে বলল সুন্দরীঃ কেউ তোকে আজ বাঁচাতে পারবে না আমার হাত থেকে।

হো হো হো। " হঠাৎ কোথা থেকে উড়ে এলো নায়ক জ্যাক। এসেই সে ইভটিজারদের ধরে প্যাদানি দিয়ে দিল ব্যাপক। টিজাররা তার সঙ্গে পাত্তা না পেয়ে দৌড়ে পালাল ঘটনাস্থল থেকে। জ্যাক গায়ের নিজের শার্ট খুলে রোজের গায়ে পরিয়ে দিয়ে বলল যান ম্যাম সাহেব।

বাড়ি যান। " এ ঘটনার পরই বদলে গেল রোজ। যে জ্যাককে সে প্রতিদিন অপমান করত সেই জ্যাকের প্রেমে পড়ে গেল সে। প্রেমের কথা জ্যাককে জানাল একদিন। প্রথমদিকে জ্যাক নানা রকম উচ্চ মার্গিয় ডায়লগ দিল, ম্যাম সাহেব, আপনারা বড়লোক।

আপনাদের কাছে প্রেম মানে খেলা। আমরা গরিব। আমরা আপনাদের কাছে খেলনা। আমাকে মাফ করুন ম্যাম সাহেব, আমাকে মাফ করুন। " এসব ভুং ভাং বললেও একপর্যায়ে পটে গেল জ্যাক নিজেও।

হাজার হোক। পুরুষ মানুষ বলে কথা। কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্যাক আর রোজকে গানের সঙ্গে কিম্ভুতকিমাকার ড্যান্স আর লাফালাফি করতে দেখা গেল। গানের কথা এরকম, মাই ডিয়ার জ্যাক তুমি শূন্য আমি এক। মাই ডিয়ার রোজ, আমি তোমার পেলাম খোঁজ।

" একদিন জ্যাক তার মাকে বিয়ের কথাবার্তা ফাইনাল করার জন্য পাঠাল চৌধুরী বাড়িতে। জ্যাকের মায়ের কথা শুনে রেগেমেগে আগুন হয়ে গেলেন চৌধুরী সাহেব। হুংকার ছাড়লেন তিনি এত বড় সাহস। চাকরানীর ছেলের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে! এ হতেই পারে না। " দারোয়ান ডেকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিলেন জ্যাকের মাকে।

মায়ের অপমান দেখে নায়ক জ্যাকের রক্তে আগুন ধরে গেল। সে চৌধুরী বাড়ির ড্রয়িং রুমে এসে বেশ চিল্লাচিল্লি করল। চৌধুরী সাহেব, গরিব হলেও আমরা মানুষ। আমার মাকে রক্তাক্ত করার প্রতিশোধ আমি নেবই। এসব বলে সে বড়লোক হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

একটা রিকশা কিনে চালানো শুরু করল জ্যাক। তাকে বড়লোক হতেই হবে। এদিকে কন্যা রোজকে ঘরে তালা মেরে রেখে দিলেন চৌধুরী সাহেব। জানিয়ে দিলেন পরের মাসের এক তারিখ তার বন্ধু খান সাহেবের ছেলে ক্যালের সঙ্গে তার একমাত্র কন্যা রোজের শুভ বিবাহ সম্পন্ন হবে। বিয়ে অনুষ্ঠিত হবে এমভি টাইটানিক নামক জাহাজে।

এমভি টাইটানিক হল চৌধুরী অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নিজস্ব জাহাজ। সমুদ্রের ওপর চলছে এমভি টাইটানিক। ভেতরে চলছে বিয়ের অনুষ্ঠান। পাত্রী রোজ কেবল কাঁদছে। বর ক্যাল বসে আছে বিয়ের পিড়িতে।

কাজী উপস্থিত। বরযাত্রী উপস্থিত। কবুল পড়ানো হবে। যখনই কাজী বললেন, বলল মা কবুল তখনই একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেল। সমুদ্রে ভাসতে থাকা একটা বরফে ধাক্কা খেল এমভি টাইটানিক।

আস্তে আস্তে পানি ঢুকতে থাকল জাহাজে। বিয়ের আসর থেকে উঠে দাঁড়াল ক্যাল। বিয়ের গুল্লি মারি বলে হাতে পিস্তল আর দলীল নিয়ে সে ছুটে গেল চৌধুরী সাহেবের কাছে। বলল, চৌধুরী সাহেব, এ দলীলে সই করুন। তাড়াতাড়ি করুন।

সময় নেই। আমি সই নিয়েই বোটে করে পালিয়ে যাব। আপনারা ডুবে মরবেন। " ক্যালের আসল রূপ দেখে অবাক হয়ে গেলেন চৌধুরী। ক্ষুব্ধ কণ্ঠে তিনি বললেন,"শয়তান।

আমার জান থাকতে এ দলীলে সই দেব না। " জবাবে ক্যাল হুমকি দিল সই না করলে সে রোজকে গুলি করবে। রোজ কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল, না বাবা না। তুমি এ দলীলে সই কর না। আমরা এমনিতেই তো জাহাজ ডুবে মরে যাচ্ছি।

" হঠাৎ রোজ কান্না থামিয়ে গান গাইতে শুরু করল মাই ডিয়ার জ্যাকঃ মাই ডিয়ার জ্যাকঃ তুমি শূন্য আমি এক। " জ্যাক তখন রিকশা চালাচ্ছিল ঢাকা শহরে। কিন্তু রোজের গান তার কান পর্যন্ত ঠিকই পৌঁছে গেল। "রোঃজ বলে চিৎকার করতে করতে সে রিকশা চালিয়েই পানির ওপর দিয়ে পৌঁছে গেল এমভি টাইটানিকে। এসেই শুরু করল ফাইট।

ঘুষির চোটে ধরাশয়ী করল ক্যাল আর খান সাহেবকে। তারপর রিকশার সিটের নিচ থেকে থেকে আঠা বের করে জাহাজের ছিদ্রও বন্ধ করে দিল। ততক্ষণে পুলিশও এসে গেল জাহাজের ভেতর। তারা ধরে নিয়ে গেল ক্যাল আর তারা বাবাকে। চৌধুরী সাহেব তার ভুল বুঝতে পারলেন।

তিনি জ্যাক আর রোজের হাত ধরিয়ে দিলেন। আবার গান শোনা গেল, মাই ডিয়ার রোজঃ মাই ডিয়ার রোজঃ আমি পেলাম তোমার খোঁজ। "  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.