আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহাকাশযান : সৌরজগত

"নব্য রাজাকার গোষ্ঠির প্রবেশ নিষেধ" মাঝে মাঝে অনেক চিন্তা হঠাৎ আসে আবার হঠাৎ করেই হারিয়ে যায়। কৌতুহলের অনুভূতি গুলো জাগানোর পর মেমোরি ক্রেস। মনেই পরে না কি নিয়ে ভাবছিলাম যেন... ? আবার যে সব ভাবনা ধীরে ধীরে আসে, আস্তে আস্তে মাথায় জায়গা করে নেয়, সেগুলো বেশির ভাগই অনুর্বর চিন্তা। সে সব মাথায় থাকলেও প্রকাশ করতে সংকোচ হয়। কে না আবার কি ভাবে।

চিন্তাভাবনা আসলে সবাই করে। লেখকরা খাতা কলম নিয়ে মনে হয় রেডি হয়ে থাকে ক্ষনিকের স্ফুলিংগের জন্য। আর সাধারনেরা এইসবের তেমন ধার ধারে না। আইডিয়া গুলো কেন কিভাবে আসে সেগুলো মনে হয় খুব বেশি বিচ্ছিন্ন নয়। যেমন আইনস্টাইনের মাথায় আপেক্ষিক তত্ত্বের আইডিয়া হঠাৎ করে উদয় হয়নি।

উনি আলোর গতিসম্পর্কে জানতেন। ক্ল্যাসিকেল পদার্থ বিজ্ঞানের সীমাবদ্বতা গুলো ভালো ভাবে চিন্হিত করেতে পেরেছিলেন। বাস্তব ঘটনার গুলোর সাথে যখনই তার জ্ঞানের যোগাযোগটা করতে পেরেছেন পেয়ে গেছেন নতুন ধারনা। ঠিক একই কথা আর্কিমিডসের ইউরেকা কাহিনির। গোসল করার চৌবাচ্চার পানি উপছে পড়ার সাথে মুকুটের দ্বারা পানি উপছে পরার যোগাযোগ খুজেঁ পাওয়াটা শুধু মাত্র ঘটনা গুলো সম্পর্কে নিরেট মাত্রার পর্যবেক্ষন ছাড়া সম্ভব নয়।

বিলগেটস বুঝতে পেরেছিলেন মাইক্রোকম্পিউটারের ভবিষ্যত। তারো আগে বেল ল্যাবের গবেষকরা ধরতে পেরেছেন ট্রানজিস্টরের ভবিষ্যত সম্পর্কে। এখনকার গুগল কিংবা ফেইসবুকের আইডিয়া পূর্বসরিদের ছাড়া অসম্ভব ছিল। তাই বলে আইডিয়া শেষ হয়ে যায় নি। পুরো ক্ষেত্রটার মাঝে লুকিয়ে হয়তবা নতুন কোন প্রযুক্তি।

মানুষের জিনে সম্ভবত এমন কিছু আছে যাতে সত্ত্বা হিসাবে যেন কয়েক শত বছর এগিয়ে থাকে এই প্রজাতি। যেমন, বহুতল স্ট্রাকচার গুলো দাড়িয়ে না গেলে এত মানুষের জায়গা হত কই? কিংবা ওয়াটসন ক্রিক ঠিক সময়ে ডিএনএ স্ট্রাকচারটা বের করে না আনলে দ্রুত চাষাবাদের জেনেটিক্যালি মডিফাইড বীজ গুলো কে সংগ্রহ করত? মানুষের স্পেইস এক্সপ্লোরেশন নিয়ে তোরজোড় দেখলে একটা নেগেটিভ চিন্তা চলে আসে। সম্ভবত আমরা কোন না কোন ভাবে প্রকৃতিগত ভাবে বুঝে ফেলেছি পৃথিবীর ছায়া আর বেশি দিনের নয়। তাই ভাগার ট্রাই করতে থাকো, মঙ্গলে না হয় অন্য কোথাও। যাই হোক আরো ৩০০০/ ৪০০০ বছরের আগে এমন কিছু হয়ত হবে না হয়তবা।

মানুষের জ্ঞানী হয়ে হয়ে উঠার শুরুটা তেমন পুরোনো তো কোন ঘটনা নয়। এইতো সম্ভবত ৬০০০ হাজার বছরের। জ্ঞানের শুরু থেকে ১০,০০০ বছরের মধ্যে মুর্খ মানব প্রজাতি পৃথিবী ছেড়ে মঙ্গলে আবাস গড়ে তুলতে পারলে সেটা কম অবাক করা বিষয় নয়। কারন পুরো মানব প্রজাতির উদ্ভবই তো মাত্র কয়েক লক্ষ বছরের। আরো পেছনে সরতে থাকলে অন্যধরনের একটা প্রশ্ন এসে দাড়াঁয়।

কেন মানুষ?? মানুষকে কেন এত জ্ঞানী হতে হবে? আরো পেছনে ডাইনোসর। সম্ভবত এই ধরনের আরো অনেক কাহিনীই আছে পৃথিবীর টাইম লাইনে। হয়তবা মুছে গেছে, পৃথিবীর বয়স তো কম হয় নি। নিসন্দেহে আমাদের পৃথিবী অনেক এক্সপেরিয়েন্সড, সূর্য থেকে নিরাপদ দূরত্বে থেকে ধারন করে চলেছে মহাবিশ্বের কিছু বুদ্ধিমান প্রানীদের। পৃথিবী এটাও জানে মানুষ তার যোগ্যতম সন্তান (হয়তবা)।

কেন মানুষকে এত জানতে হবে? কারন হয়ত পৃথিবীকে রক্ষা করতে হবে এই মানবদের। হয়ত পৃথিবী মনে করছে, তার গ্রেভেটিশনাল ফিল্ডে এমন কিছু ধরা দিয়েছে, বিশাল কিছু এগিয়ে আসছে তার দিকে। মুর্খ সন্তানেরা তো রক্ষা করার প্রশ্নই আসে না। তাই মানুষকে সুযোগ করে দিয়েছে প্রকৃতিকে পড়ার। এটা অনেক সময় বলতে শুনা যায়, প্রকৃতি হল খোলা বই।

মানুষ বইটির ঠিক অর্ধেক থেকে পড়া শুরু করেছে। সম্ভবত আমাদের আমাদের জ্ঞান সাধনার মূল উৎস হল বইটির হারিয়ে যাওয়া বাকী অর্ধেক, পুরো বইটা পড়ার সুযোগ পেলে মানুষ হয়ত পৃথিবীকে নিয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলত। আর আমাদের প্রজাতির জ্ঞান অর্জনের মূল বিষয়টাই এই কৌতুহল। ক্যামনে হল এটা?? ১৫০০ শতাব্দীর পর বিজ্ঞানের তাড়াহুরা একটা চোখে পড়ার মত ব্যাপার। নিউটন তো বলেই গেছেন উনি নাকি জাইয়ান্টের কাধেঁ উঠে পড়েছেন।

এইসব উদ্ভট কথার জন্য হয়ত মনে হতে পারে পৃথিবী নিজেই একটি জীবন্ত সত্তা (মনে না হোক, জোড় করে যদি মনে করতে চাই) যে নিজে বাচঁতে চায়। কোন এক কবিই হয়ত এই আকুতির কথা বলে ফেলেছেন "মরিতে চাহিনা এই সুন্দর ভুবন ছাড়িয়া"। কবিতা অবশ্য কম বুঝি। তবে পৃথিবীকে জীবন্ত হতে হবে এমন কোন কথা নাই মনে হয়। কারন একটা পানির ফোটাঁকে বলে দিতে হয় না তাকে অবশ্যই গোল হতে হবে, একই ভাবে পৃথিবী জানে তাকে কি করতে হবে।

একবার ফেবুতে একটা স্ট্যাটাস দিয়ে ছিলাম, পৃথিবী নিজেই একটি মহাকাশযান। এমনিতে এই ধরনের কথা অবস্হান হিসেবে দিলে শেষ পর্যন্ত হাসা হাসির পর্যায়ে চলে যায়। তবে ভালোই কিছু মন্তব্য পেয়েছিলাম। এক বন্ধু বলল তাহলে সূর্যই কি ফুয়েল ? ভুল বলেনি সে, আসলে পুরো সৌরজগতটাই একটা স্পেসশীপ, সূর্য হল মূল ইন্জিন। বৃহস্পতি কিংবা শনি গ্রহ হল স্পেইস শীপের দেয়ালের মত।

স্পেইস শিপের দেয়াল যেমন বাইরের পরিবেশ থেকে ভিতরটাকে আলাদা করে রাখে, শনি কিংবা বৃস্পতি গ্রহের গ্রেভিটেশনাল ফিল্ড পৃথিবীকে রক্ষা করে বাইরের গ্রহানু নিজের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে। এটাতো গেলো প্রাইমারী শিল্ড, পৃথিবীর ম্যাগনেটিক ফিল্ড আবার মহাকাশের রেডিয়েশন থেকে শিল্ড দিয়ে রাখে। পৃথিবী আসলে শীপের বিজনেস ক্লাস স্যুইট, সব কিছুই পরিমিত মাত্রায়। চাদঁ যেন পৃথিবীর হৃদপিন্ড। জোয়ার ভাটাঁ যেন রক্তের প্রবাহ।

মূলনীতি গুলো এক। কিন্তু এই টেরা স্পেইস শীপের বিজনেস টা কি? পৃথিবী মহাকাশযান হোক না হোক এটা হল জ্ঞান অর্জনের একটা ভিত্তি যার উপর মানব প্রজাতি গভীর মহাকশ ভ্রমন করে নিজেদের সংখ্যায় বৃদ্ধি করছে এমন একটি অভিযানের জন্য যার উদ্দেশ্য এখনো অজানা। তবে যাত্রীদের সুযোগ দেয়া হয়েছে ইচ্ছে মত স্টেশনে নেমে পড়ার। দূরের নক্ষত্রের নাগাল পাওয়া খুব একটা সহজ নয়। এমন একটি মহাকাশ যান বানালে কেমন হয়? যার জন্য স্পেশাল জেনেটিক্যালি মডিফাইড মহাকশচারী বানানো হবে।

এই সব জি. এম অ্যাস্ট্রোনটের সাইজ হবে হয়ত সত্যিকার মানুষের তুলনায় ৫০ গুন ক্ষুদ্র। ক্ষুদ্র মানুষ গুলোর জন্য পৃথিবীর মত কিছু একটা তৈরী করে দেয়া হবে স্পেইস শীপের ভিতরে। তারা হয়ত বুঝতেই পারবে না, যেমন আমরা নিজেরাই একটু কনফিউসড... ------------------------------------------------------------------- ছবিটি আমার ভাগ্নের (সামান্য এডিট করা)  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।