আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চিন্তার বিষয় : আমাদের নির্বাহী বিভাগ এবং আমাদের বিচার বিভাগ

জনারণ্যে নির্জনতায় আক্রান্ত। নির্জনতাই বেশী পছন্দ, নিজের ভেতরে ডুবে থাকতেই ভাল লাগে। কিছুটা নার্সিসিস্টও। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফরের উপর ৪ সপ্তাহের স্থগিতাবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন এটা এখন পুরোনো সংবাদ। ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফরের ব্যপারে বাংলাদেশের সর্বমহল থেকেই প্রতিবাদ হচ্ছিলো।

আদালতের আদেশ প্রকারান্তরে প্রতিবাদেরই পক্ষে গেল। আর পাকিস্তান হুমকি দিয়ে ও ব্ল্যাকমেইল করে আমাদের ক্রিকেট দলকে তাদের দেশে খেলতে যেতে বাধ্য করছিলো, যাতে আমাদের দেশের সরকারেরই একটি মহল ইন্ধন যোগাচ্ছিলো। আদালতের আদেশ তাদেরকে দারুন একটা চপেটাঘাত করল। পাকিস্তান যে একটা মৃত্যুপুরী তা শ্রীলংকা ক্রিকেট টিমের উপর হামলার পরথেকেই সবাই জানে। যেখানে অন্য কোন দল খেলতে যেতে রাজী হচ্ছিলো না, সেখানে আমাদের বিসিবি সভাপতি নিজের আইসিসি সভাপতির পদের বিনিময়ে ক্রিকেটারদের জীবন বাজী রাখতে চাচ্ছিলেন।

এমনকি ক্রিকেট দলের অস্ট্রেলিয়ান কোচ পর্যন্ত্য নিজের ব্যাক্তিগত কারন দেখিয়ে পাকিস্তান যাতে যেতে না হয় তার জন্য সময়ের আগেই পদত্যাগ করলেন। এমনকি ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ফিকা পর্যন্ত্য এসফরের প্রতিবাদ করে বিবৃতি দিয়েছে। যেখানে দেশের ও আন্তর্জাতিক মহল থেকেই পাকিস্তান সফর যাতে না হয় তার প্রতিবাদ করা হচ্ছিলো, সেখানে আমরা চাচ্ছিলাম নিজের কোমর সোজা রেখে বিসিবি বা সরকার তথা ক্রীড়ামন্ত্রণালয় থেকেই সিদ্ধান্ত দেয়া হবে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, সঠিক কাজ বা সঠিক সিদ্ধান্ত আমরা সঠিক ব্যক্তির কাছ থেকে সাধারনত পাই না। আদালতকেই অবশেষে স্থিতাবস্তা জারি করে সিদ্ধান্ত দিতে হলো।

রাষ্ট্রের প্রধান তিনটি অঙ্গ হল আইনবিভাগ তথা সংসদ, নির্বাহীবিভাগ তথা সরকার, আর বিচারবিভাগ তথা আদালত। তিনটি বিভাগেরই কাজ বা কাজের আওতা নির্দিষ্ট। সববিভাগ যদি নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে তাহলে দেশ সঠিক পথে চলে। পাকিস্তান সফর হবে কি হবে না তা নিয়ে নির্বাহীবিভাগের দোদুল্যমানতার মধ্যেই রাষ্ট্রের আরেকটি গুরুত্বপূর্ন অঙ্গ বিচারবিভাগকে সিদ্ধান্ত দিতে হলো। আমরা নির্বাহী বিভাগের সিদ্ধান্ত্ই চাচ্ছিলাম।

যদিও এব্যাপারে আদালতের হস্তক্ষেপ বিষয়ে বিভিন্ন দৃষ্টিকোনেই আলোচনার অবকাশ আছে। রাষ্ট্রপরিচালনার সবব্যাপারেই যদি আদালত হস্তক্ষেপ করে তাহলে নির্বাহী বিভাগের অবস্থান কোথায় থাকে তা নির্বাহীবিভাগকে ভেবে দেখতে হবে। ইদানিংকার বিভিন্ন বিষয়েই নির্বাহী বিভাগএর দোদুল্যমানতায় বিচার বিভাগকে এগিয়ে আসতে হয়েছে। সব ব্যাপারেই নির্বাহী বিভাগ কর্তৃক আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে কাজ করে যাওয়া কি ঠিক হচ্ছে ? সংবিধান সংশোধন থেকে শুরু করে হালের পাকিস্তান সফর, সাগর রুনি হত্যা বিষয় থেকে শুরু করে অনেক অনেক বিষয়েই এই ব্যপারটা সচেতন মানুষদের চোখে পড়বে। বিষয়টা সেনসিটিভ হওয়ায় অনেকেই এবিষয়ে কথা বলতে অস্বস্তিবোধ করেন।

তবে বিষয়টাযে ভাবনার তা সবাইই মানবেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।