আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফার বেশির ভাগই সংবিধান পরিপন্থি।

আমি একজন ছাএ কওমী মাদ্রাসা ভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম ০৬ এপ্রিল ঢাকার প্রাণকেন্দ্র শাপলা চত্তরে মহাসমাবেশ করে তাদের ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করে। তাদের দাবি হচ্ছে- তাদের দৃষ্টিতে নাস্তিক ব্লগারদের শাস্তি, নারী নীতি বাতিল, সংবিধানে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্তা ও বিশ্বাস বহাল করণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করা, গ্রেফতারকৃত আলেমদের মুক্তি দান, তাদের মামলা প্রত্যাহার ও আহত নিহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ প্রদান। হেফাজতে ইসলামের দাবিগুলি পর্যালোচনা করে দেখতে হবে আমাদের সংবিধানের মূলনীতিতে কি লেখা রয়েছে। ১৯৭২ সালের সংবিধানের চার মূলনীতি হচ্ছে- গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ। ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ হচ্ছে- ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার।

রাষ্ট্র ধর্মীয় বিধি বিধান পালনে কাউকে বাঁধা দিবেনা, সকল ধর্মের অধিকার সংরক্ষনে সহযোগিতা প্রদান করবে। ধর্মীয় কারনে কারো অধিকার হরণ করবে না, গতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সকলের অধিকার সংরক্ষন করবে। কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের উপর জামায়েতে ইসলামের বহুদিনের ক্ষোভ। জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা মওদুদি লাহোরে কাদিয়ানী ও সুন্নিদের মধ্যে দাঙ্গা বাধিয়ে বহু কাদিয়ানী মুসলমান হত্যা করেন। পাকিস্তানের আদালতে তার ফাঁসির আদেশ হয়েছিল।

এখনও জামায়াতে ইসলামি কাদিয়ানী ইস্যু ছাড়তে পারেনি। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় চরিত্র হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক। রাষ্ট্র কোন সম্প্রদায়ের পক্ষ নিয়ে অন্য সম্প্রদায়ের নীতি আদর্শকে বিসর্জন দিতে পারে না এবং কোন সম্প্রদায়কে ২য় শ্রেণীর নাগরিকে পরিনত করতে পারে না। সে ক্ষেত্রে হেফাজতে ইসলামের রাষ্ট্র বিরোধী দাবি দাওয়া রাষ্ট্রের পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব নয়। তাহলে রাষ্ট্র ব্যবস্থা পাকিস্তান অথবা আফগানিস্তানের মত তালেবানি রাষ্ট্রে পরিনত হবে।

মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ থেকে দেশ বিচ্যুত হবে। বিশিষ্ট সংবিধান প্রণেতা ডঃ কামাল হোসেন বলেন মৌলবাদী হেফাজতে ইসলামের দাবি গুলি আমাদের সংবিধান পরিপন্থী। হেফাজতের দাবি তো জামায়াতের দাবি, এর সাথে একমত হলে স্কুল কলেজ এ নারী শিক্ষা বন্ধ করে দিতে হবে। চাকুরি ব্যবসা সকল ক্ষেত্রে নারীর কাযর্ক্রম বন্ধ করে নারীকে গৃহবন্দী করতে হবে। অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্য সহ দেশের সব ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলতে হবে।

দেশের হাজার বছরের বাঙ্গালী সংস্কৃতিকে জলাঞ্জলি দিতে হবে। নারী শিক্ষা বন্ধ হলে দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক গৃহবন্দী হয়ে অশিক্ষিতের হার বেড়ে যাবে। শিল্প, কল কারখানা বিশেষ করে পোশাক শিল্প মুখ থুবড়ে পড়বে। আসুন ঐক্য গড়ে তুলি ৩০ লাখ শহীদের রক্তে অর্জিত স্বাধীনতা এই তালেবানি শক্তির কাছে কখনও মাথা নত করতে পারেনা। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.