বিংশ শতাব্দীতে মানুষের শোকের আয়ূ বড় জোর এক বছর। ছোট বেলায় পাটিগণিতে বিশাল বিশাল সরল অঙ্ক করতে হতে, দেড় পেজ অঙ্ক কষে উত্তর আসতো ১ নাহলে ০ , তখন বুঝিনি কিন্তু এখন বুঝি অঙ্ক বিশারদের এই খেলাটার কোন মানেই হয়না- আর এর নামও বা “সরল” অঙ্ক কেন দেয়া হল এটাও একটা প্রশ্ন !
এই মুহূর্তে সরল অঙ্ক বিশারদ একজন আছেন।
তিনি একশো পুলিশ ফার্স্ট ব্রাকেটে আর ৬০ জন জনতা সেকেন্ড ব্রাকেটে নিয়ে মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে হেফাজত ঠেকাচ্ছিলেন । কিন্তু যে একশ পুলিশের উপর আস্থা রেখে উনি দাড়িয়ে ছিলেন তারা আস্থা রাখেনি, থার্ড ব্রাকেটে তিনি নাপিতের আশ্রয়ে জীবন বাচালেন । সাংবাদিকের সামনে কাঁদো গলায় বিক্ষোভ করলেন ।
প্রতিরোধ করতে এসে পুলিশের আস্থাহীনতায় বিমূড় হয়ে পড়াটাযে সরল অঙ্কে নেই তা তিনি জানতেন না ।
এই অঙ্ক বিশারদ আবার সন্ধ্যায় শাহবাগ গেলেন,
অঙ্ক কষে বোঝালেন যে হেফাজতের এই তরুণদের নাকি ঢাকায় এসে লংমার্চ করার মত অর্থনৈতিক মুরদ নেই । এরা অন্যের টাকায় এসেছে । পকেট প্রতি যে হিসেবের পরিসংখ্যান তিনি দিলেন তাতে শাহবাগের অভিজ্ঞতায় মেলেনা ।
প্রতিবছর বাজেটে শিক্ষাখাতের যে বিপুল বরাদ্দ তাঁর কত শতাংশ কওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের কাছে যায় সে পরিসংখ্যান আমি নিশ্চিত তিনি দিতে পারবেন না ।
দেশি কুত্তা যা পায় তাই খায় বলে দেশিকুত্তাকে হেয় করাও ভুল, দেশি কুত্তার বিদ্রোহের ভয়ে বারিধারার বিদেশী কুত্তাগুলারে শেকল দিয়ে বেধে রাখতে হয় – এটাও ঠিক । আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত অঙ্ক বিশারদরা কোনদিন কওমি মাদ্রাসা নিয়ে মাথা ঘামিয়েছে কিনা জানিনা তবে অবহেলিত একটা শ্রেণিকে নিরন্তর গালাগালি দিয়ে , সেকেলে কূপমণ্ডূক, আনকালচারড বলে অবহেলা করবার দিন শেষ হয়ে আসছে বোধয় । বঞ্চিতরা জাগলে বুর্জোয়া কোথায় যায় এটা আপনার কমিউনিজমের প্রথম পাঠেই শেখার কথা। কওমি মাদ্রাসায় পড়লে কম্পিউটার শেখা যাবেনা, ব্লগ লেখা যাবেনা এটা যেহেতু কোন শিক্ষা কমিশনে নেই, তাই ওদেরকে একপাশে ফেলে রাখার দিন যে শেষ সেটা বোধয় অঙ্ক বিশারদরা পুনঃবিবেচনা করবেন ।
তবে একটা জিনিশে আমি আশাবাদি, মোটামুটি সবার হাতেই মোবাইল ছিল, বাংলাদেশে ব্যান্ডউইথ টা আরেকটু বাড়লে জনকণ্ঠ মার্কা সংবাদযে কোন কাজে আসবেনা এটা নিশ্চিত ।
দাবাইয়া না রেখে কওমি নিয়ে ভাবুন... ফ্লাইওভারের নিচে পুলিশ নিয়ে দাঁড়ালে আর আওয়ামীলীগের আচলের তলে মুখ লুকালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন হয়ে যাবেনা । বাংলাদেশ বলতে শুধু আধুনিক শাহবাগ নয় পিছিয়ে পড়া কউমীও বাংলাদেশের অংশ ।
ইন্টারনেটে তাঁর বায়গ্রাফি সার্চ করছিলাম, উইকিপিডিয়ায় তাঁর বিশেষণে শুধু চলচ্চিত্র কর্মী, মানবাধিকার ও সাংবাদিক লেখা, তিনি মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন বা মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান কি বা কার অধীনে কোথায় মুক্তিযুদ্ধ করেছেন এমন কথা কোথাও পাইনি । তবে ঘাদানিকের বহিষ্কৃত আহবায়ক বেগম মুস্তারি শফির "‘জাহানারা ইমামের স্মৃতির উদ্দেশে লেখা চিঠি'" নামক বইয়ে অন্যকিছু লেখা আছে । পৃষ্ঠা নং ৩৬১ ... পুরো ৭১ সাল জুড়েই আপনি পাকিস্তানি ক্যাম্পে মুরগী সরবরাহ করেছিলেন ।
বিঃদ্রঃ ঘাদানিকের সাবেক আহবায়ক রাজাকার ছিলেন না, তাঁর স্বামী ও তাঁর ভাই ৭১ এ শহিদ হয়েছিলেন ।
তাহলে অঙ্কে কি দাঁড়ালো?
আপাতত ফলাফলের সময় এখনও আসেনি ... ০ নাকি ১ সেটা সময়ই বলে দেবে তবে এটা বলতে পারি একটা আদর্শের প্রতিষ্ঠা কখনই পুলিশের বন্দুকের আশ্রয়ে হতে পারেনা , আদর্শের মোকাবেলা আদর্শ দিয়েই করা উচিত। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।