সাধ্য আর সমর্থের বাইরে স্বপ্ন অলীক কল্পনা নয়। মনোবল আর সদ্বিচ্ছা থাকলে জয় আসবেই। সো দ্য ড্রীম উইল বি অলয়েস মেক্সিমাম আজকাল বাসস্ট্যান্ডগুলোতে অহেতুক একটা জ্যাম লাগে। দুপুরবেলা বাস ড্রাইভাররা অহেতুক দেরি করে। তেমনি এক দুপুরবেলায় মেয়েটি বসেছিল রিকশায়।
রিকশাটা জ্যামে আটকা পড়েছে বাসগুলোর মাঝখানে। আর ড্রাইভারগুলোও যেন সাইড না দেয়ার পণ করেছে। আর দুপুরের রোদ তার সমস্ত তেজ ঢালছে ঢাকার রাস্তার মানুষের উপর। ক্যাম্পাস থেকে ফিরছিল মেয়েটি। ক্ষুধা তৃষ্ঞায় কাতর।
যত দ্রুত সম্ভব বাসায় পৌছতে চায় সে। হঠাৎ সামনের বাসের পিছনে লাগানো পোস্টারটিতে চোখ আটকে যায় তার। লেখা "যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই", নিচে দানব অবয়বে আঁকা নিজামির একটি ছবি। ছবিটি দেখার সাথে সাথে মেয়েটির মুখ থেকে সমস্ত বিরক্তি চলে গেলো সেখানে এসে ভর করলো এক অদ্ভুত দৃষ্টি, যেন সে কোন বিষাক্ত সরীসৃপ দেখেছে। মাথার উপর সৃর্য্ এর কড়া তেজ, পেটের ক্ষধা, চারপাশে বাসের বিরক্তিকর হর্ণের আূওয়াজ এসব কিছু কোথায় যেন চাপা পড়ে গেল।
জ্যান্ত একটা প্রাণীর মত তীব্র একটা অনুভৃতি নাড়া দিয়ে উঠলো মেয়েটার মনে। মুখের সমস্ত শক্তি এক করে থুতু ছুড়ে মারলো মেয়েটা পোস্টারে আঁকা পিশাচটার অবয়বে। প্রকাশ করলো নিজের অন্তরের অন্তস্থল থেকে উঠে আসা ঘৃণাটা। পাশের রিকশায় কলেজ ড্রেস পড়া ছেলেটা কিছুটা অবাক হয়ে তাকাল মেয়েটার দিকে। এরপর সে পোস্টারটা পড়ল তারপর রিকশা থেকে নেমে যেয়ে সেও থুতু মেরে আসল।
মেয়েটার কমবয়শি রিকশা্ওয়ালা জিজ্ঞাস করল "কি অইছে আপা?" মেয়েটা বললো " চেন নাই ও একটা রাজাকার" আঙ্গুল দিয়ে পোস্টারটা দেখাল সে। "আগে বলবেন না" বলে সে তাড়াতাড়ি পোস্টারটাতে থুতু মারল যেন দেরি করলে অন্যায় হয়ে যাবে। এমন সময় জ্যামটা ছুটে গেল। মেয়েটা তাকাল ছেলেটার দিকে। ওর ঠোটে ফুটে উঠলো এক চিলতে হাসি।
ছোট্ট একটা হাসি ফুটে উঠল কিছুক্ষণ আগে মহাবিরক্ত হয়ে বসে থাকা রিকশাওয়ালাটার মুখেও। ভালবাসা যেমনমানুষকে একডোরে বাঁধতে পারে তেমনি করে যুদ্ধাপরাধীদের প্রতি ঘৃণা একডোরে বেঁধে ফেলল এই তিনটি মানুষকে। বাসটা ছুটছিল পেছনের পোস্টারটারটাতে লেগে ছিল তিন দলা থুতু, হয়তো আরো থুতু লাগবে পোস্টারটারটাতে। সকল ধর্মেই ঘৃণাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু বাঙ্গালিরা যুদ্ধাপরাধীদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে শান্তি পায়, এটাকে তারা পবিত্র দায়িত্ব মনে করে।
আর এটাই হয়তো একমাত্র ঘৃণা যার জন্য কোন গুনাহ হবেনা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।