উচ্ছৃঙ্খল আচরণের জন্য কুখ্যাতি আছে বলিউডের অভিনেতা আদিত্য পাঞ্চোলির। এবার প্রতিবেশীকে ঘুষি মেরে খবরের শিরোনাম হলেন বিতর্কিত এ তারকা অভিনেতা।
এ প্রসঙ্গে মুম্বাইয়ের ভারসোভা থানায় দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২৭ জুন বৃহস্পতিবার আদিত্যর বিরুদ্ধে গায়ে হাত তোলাসহ বেশ কয়েকটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁর প্রতিবেশী শিক্ষাবিদ ভারগব প্যাটেল। প্রমাণ হিসেবে গায়ে হাত তোলার ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজও সরবরাহ করেছেন অভিযোগকারী। তবে এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত গ্রেপ্তার হননি আদিত্য।
উত্তর-পশ্চিম মুম্বাইয়ের ভারসোভা এলাকায় সপরিবারে বসবাস করেন ৪৮ বছর বয়সী আদিত্য। তিনি ১৯ জুন গাড়ি পার্কিংয়ের মতো তুচ্ছ একটি ঘটনা নিয়ে ৫৫ বছর বয়সী প্যাটেলের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। ওই সময় তিনি মদ্যপ ছিলেন বলেও দাবি করেছেন প্যাটেল। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে বয়োজ্যেষ্ঠ প্যাটেলকে ঘুষি মেরে বসেন আদিত্য। এক খবরে এসব তথ্য জানিয়েছে ইন্দো-এশিয়ান নিউজ।
এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি প্যাটেলের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিলেন আদিত্য। প্যাটেল তাঁর বাড়ি সংস্কারের কাজ করছিলেন। এতে বিরক্ত হয়ে কয়েকজন সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে প্যাটেলের বাড়িতে হাজির হন আদিত্য। তিনি একপর্যায়ে প্যাটেলকে টেনেহিঁচড়ে বাড়ির ভেতর থেকে বের করে আনেন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। সেবারও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন প্যাটেল।
কিন্তু আদিত্যর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।
এখন পর্যন্ত বিতর্কিত নানা কাণ্ড ঘটিয়ে বেশ কয়েকবার মুখরোচক খবরের জোগান দিয়েছেন আদিত্য। তাঁর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, পরকীয়ায় জড়ানোর পাশাপাশি কিশোরী ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগও আছে।
বলিউডের নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পূজা বেদীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন আদিত্য। অবিশ্বাস্য শোনালেও প্রেমিকা পূজা বেদির ১৫ বছর বয়সী কিশোরী কাজের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল আদিত্যের বিরুদ্ধে।
এ প্রসঙ্গে পূজা বেদি জানিয়েছিলেন, ‘অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন পূরণের জন্য আমার কাজের মেয়েটি তার বাড়ি থেকে পালিয়েছিল। বলিউডে কাজের সুযোগ করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আদিত্য তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে। আপাতদৃষ্টিতে এটা হয়তো ধর্ষণের ঘটনা নয়, কিন্তু অপ্রাপ্তবয়স্ক একটি মেয়ের সঙ্গে আদিত্যর এ ধরনের আচরণকে ধর্ষণ না বলে উপায় নেই। ’
২০০৬ সালে ‘গ্যাংস্টার’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয়েছিল কঙ্গনা রনৌতের। তিনি বলিউডে শক্ত আসন গাড়তে যখন সংগ্রাম করছিলেন, তখন তাঁর পাশে দাঁড়ান আদিত্য।
একপর্যায়ে বয়সে ২২ বছরের ছোট কঙ্গনাকে প্রেমের জালে জড়িয়ে ফেলেন বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক আদিত্য। এমনকি জনসমক্ষে কঙ্গনার সঙ্গে থিতু হওয়ারও ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। পরে অবশ্য তাঁদের সে সম্পর্ক স্থায়ী হয়নি। এ প্রসঙ্গে আদিত্য জানিয়েছিলেন, ‘এখন আর আমরা একে-অন্যের মুখ দেখি না। অথচ একটা সময়ে আমরা স্বামী-স্ত্রীর মতোই সময় কাটিয়েছি।
আমরা তিন বছর একসঙ্গে বসবাস করেছি। মুম্বাইয়ের ইয়ারি রোডে আমাদের দুজনের জন্য একটি বাড়ি তৈরির কাজও শুরু করেছিলাম। ’
একাধিকবার পরকীয়ায় জড়িয়েছেন আদিত্য। অকপটে তা স্বীকারও করেছেন। এ প্রসঙ্গে তাঁর ভাষ্য, ‘অসংখ্য নারীর সঙ্গে প্রণয়ে জড়িয়েছি আমি।
কিন্তু পারতপক্ষে তাদের নাম কাউকে জানতে দিইনি। আমি আমার স্ত্রীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আমি তাকে প্রচুর যন্ত্রণা দিলেও সে আমাকে ছেড়ে যায়নি। পরিবারের সদস্যদের মুখের দিকে তাকিয়েই সে এমনটা করেছে। ’
সর্বশেষ আদিত্য আলোচনায় আসেন ৩ জুন জিয়া খান আত্মহত্যা করার পর।
সুইসাইড নোটে নিজের মৃত্যুর জন্য প্রেমিক সুরজ পাঞ্চোলিকে দায়ী করে গেছেন জিয়া। জিয়ার মা রাবেয়া আমিন তাঁর মেয়ের আত্মহত্যার জন্য সুরজের পাশাপাশি তাঁর বাবা আদিত্য পাঞ্চোলিকেও দায়ী করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, আমার মেয়ে ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশ ছিল বলে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু সত্যিটা হলো, সুরজ ও তার বাবা আদিত্য পাঞ্চোলির কাছ থেকে অসহনীয় যন্ত্রণা পাওয়ার কারণেই আত্মহত্যার মতো কঠিন পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে জিয়া। ’
জিয়া আত্মহত্যা করার পরপরই প্রখ্যাত ভারতীয় কলামিস্ট ও ঔপন্যাসিক শোভা দে তাঁর ব্লগে সুরজ ও আদিত্যকে উদ্দেশ করে মন্তব্য করেছিলেন, ‘লাইক ফাদার, লাইক সান।
’ এতে আদিত্য ভীষণ ক্ষুব্ধ হলেও তাঁর অতীতের কীর্তি ঘাঁটলে শোভা দের উক্তিকে খুব বেশি ভুল বলা যায় না। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।