আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সরলীকৃত সাম্প্রদায়িকতা ও আপাত নিরীহ প্রতিক্রিয়াশীলতা

জানার কোন শেষ নাই। জানার চেষ্টা বৃথা তাই। মনটা খুব ভালা ছিল কালকে। বাংলাদেশ জিতছে, এইসব প্যাচাল পারার কোন ইচ্ছাও ছিল না। কেন হইল তা আর উঠাব না।

যাই হোক মূল প্রসংগে আসি। ইদানিং সাম্প্রদায়িকতা কিছু উঠতি ফেসবুক বুদ্ধিজীবীদের প্রিয় ইস্যু। তারা ভাবতে চায় মতাদর্শের বিপক্ষে কথা বলা, তাকে ভেঙ্গে চুরমার করে মাটিতে নামিয়ে আনা, দীর্ঘদিনের কুসংস্কারের বিপক্ষে সোচ্চার হয়ে কারো কুসংস্কারুনূভুতিতে আঘাত হানা এক ধরনের সাম্প্রদায়িকতা। কোন মতকে আক্রমন করা, কোন মতকে মানবজাতির প্রগতির পথে বাধা হিসেবে চিহ্নিত করা, সেই মতকে আলোচনা সমালোচনার তোড়ে নিশ্চিহ্ন করার উদ্যোগ নেয়া কখনোই সাম্প্রদায়িকতার তালিকাভুক্ত হতে পারে না। তাহলে নাজিবাদের বিপক্ষে কথা বলে আমরাও সাম্প্রদায়িক।

হিটলারকে তুলোধুনো করে আমরাও সাম্প্রদায়িক। পুজিবাদ/সমাজতন্ত্রের যারা সমালোচনা করে তারাও সাম্প্রদায়িক। আমরা রাজাকারদের ঘৃণা করি , পাকিস্তান দেশটাকে অন্তর থেকে ভাল চোখে দেখতে পারি না, ঐ দেশের প্রতিনিধিত্ব করে এমন সব কিছুই আমরা ঘৃণা করি তাই আমরা সাম্প্রদায়িক। কোন মতবাদ তা কত বিশাল সংখ্যক মানুষের কাছে কতটা শ্রদ্ধার পাত্র তা মুখ্য না। সব মতবাদকেই প্রশ্নবিদ্ধ করতে হয় যাচাই করতে হয়।

ভুল প্রমাণিত মনে হলে আক্রমণ করতে হয়। এতসব বাধা অতিক্রম করেই কোন মতকে টিকে থাকতে হয়। এখানে বড় বড় অক্ষরে আমি বলতে চাই সাম্প্রদায়িকতা ব্যক্তি বিশেষ বা কোন সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের প্রতি ঘৃণা করাকে বুঝায়। কেউ যদি পাকিস্তানকে ঘৃণা করে। আমেরিকাকে ঘৃণা করে তাহলেই তাকে আগ বাড়িয়ে সাম্প্রদায়িক বলা যাবে না।

তবে যদি কেউ তাদের সম- অধিকারে বিশ্বাসী না হয়, পাবলিক ট্রান্সপোর্টে তাদের পাশে বসতে অস্বীকৃতি জানায়,বন্ধুত্ব করতে অস্বীকৃতি জানায় তাহলে অবশ্যই তাদের সাম্প্রদায়িক বলে চিহ্নিত করতে হবে। কারণ সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই। আমি আমেরিকার সম্রাজ্যবাদী আচরণ/ '৭১ এ পাকিস্তানের গণহত্যাকে গালিগালাজ করতে পারি কিন্তু আমেরিকা/ পাকিস্তানের মানুষদের কখনোই ছোট ভাবতে পারি না। এখন কথা হতে পারে এই গণহারে গালিগালাজ কতটুকু গ্রহণযোগ্য। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে এটা গ্রহণযোগ্য এবং বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে এটা গ্রহনযোগ্য নয়।

যখন কারো হারানোর কিছু থাকে না এবং সরাসরি যুদ্ধে নামে তখন সে যা খুশি তাই করতে পারে। কিন্তু মতবাদকে গণহারে আক্রমণ করতে গিয়ে মানুষের কোমল অনুভূতিতে হঠাৎ আঘাত করলে তা হিতে বিপরীত হবার সম্ভাবনাই বেশি। কোন মতবাদকে গ্রহনযোগ্য করে তুলতে হলে আগে সেই মতবাদের কথা মানুষকে শুনাতে হয়। মানুষ যদি ঘৃণায় সেই মতবাদের কথা নাই শুনলো তবে আসল উদ্দেশ্যই ব্যহৃত হয়। এক্ষেত্রে কৌশলী হতে হয়।

( এই প্যারার মতামত আমার ব্যক্তিগত) সবশেষে বলতে চাই আত্মতৃপ্তি লাভের উদ্দেশ্যে গণহারে বিভিন্ন ট্যাগিং থেকে আমরা বিরত থাকি। মানুষকে মানুষ হিসেবে সবাই ভাবতে শিখি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।