আরিফুজ্জামান মামুন
সরকার, পুলিশ ও সরকারদলীয় ক্যাডারদের নজিরবিহীন বাধা সত্বেও বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বকালের সর্ববৃহৎ জনসমুদ্রে বিএনপি চেয়ারপার্সন, বিরোধী দলীয় নেতা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া চারদলীয় জোট সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়ে সরকারের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আগামী ১০ জুনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি পূনর্বহাল করুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি ছাড়া এদেশে কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবেনা। নতুন জোটের পক্ষ থেকে বলছি, আগামী ১০ জুনের মধ্যে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি পুন:স্থাপন না করা হলে ১১ জুন জোটের পক্ষ থেকে ঢাকায় সমাবেশে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, হয় দাবি মানতে হবে না হয় সরকারকে বিদায় নিতে হবে। একই সঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, আন্দোলণ বেগবান করার স্বার্থে আমরা চারদলীয় জোট সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তবে তিনি জোটের নাম ঘোষণা করেননি। বিএনপি চেয়ারপার্সন ও বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচীতে আসতে নেতা-কর্মীদের বাধা দান ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে আগামী ২৯ মার্চ (বৃহস্পতিবার) সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের কর্মসূচীও ঘোষণা করেন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার পূনর্বহাল, ব্যর্থ-অযোগ্য ও তাঁবেদার সরকারের পতনের দাবীতে চারদলীয় জোট ও সমমনাদলগুলো নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামেন মহাসমাবেশের আয়োজন করে। বিকেল ২টা ৩০ মিনিটে মঞ্চে উঠে বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটে বক্তব্য শুরু করেন খালেদা জিয়া। তবে ঠিক ওই সময় আসরের আজান শুরু হওয়ায় খানিক বিরতি দিয়ে পুনরায় বক্তব্য শুরু করেন তিনি।
এরপর বিকেল ৬টা ১৫ পর্যন্ত টানা বক্তব্য দেন।
বক্তব্যের শুরুতেই বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া বলেন, মার্চ মাস স্বাধীনতার মাস। এই মাসে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়েছিলো। তাই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করে বক্তব্য শুরু করছি। সরকার ভয়ে ভীত হয়ে তিন দিন আগে থেকে সারা দেশকে ঢাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।
তারপরও লোক ঠেকাতে পারে নাই। যারা দূর দুরান্ত থেকে অনেক কষ্ট করে এসেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই সরকার যদি জনপ্রিয় হয়ে থাকে তাহলে কেনো এত ভয়? সরকারের সবচেয়ে বড় ভয় জনগণ। তারা জনআতঙ্কে ভুগছে। বার বার কর্মসূচি দেব।
বার বার জনগণ আসবে। কতবার আপনারা বাস বন্ধ করবেন, ট্রেন লঞ্চ বন্ধ করবেন? বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেন, আমরা জনগণের ওপর আস্থা রাখি। সন্ত্রাস লগি বৈঠা সস্ত্রাসে বিশ্বাস করি না। একটার বদলে দশটা লাশের রাজনীতি বিএনপি করে না। সেজন্য জনগণের আমাদের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস আছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বলেছিলাম কর্মসূচিতে বাধা দেবেন না। কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ। তারপরও তারা কি রকম বাধা দিয়েছে আপনারা দেখেছেন। সরকার এখন অন্ধ বধির হয়েছে। কানে শুনবে না।
তাদের পায়ের নীচে মাটি নেই। তারা এখন জনসমাবেশ পর্যন্ত করতে দিতে চায় না। কত রকম বাধা দিয়েও মানুষের ¯্রােত ঠেকাতে পারেনি। সভা সমাবেশ করা মানুষের নাগরিক অধিকার। কিন্তু তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেনা বলেই সভা সমাবেশ করতে দেয় না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র মনা। তারা একদলীয় শাসন পছন্দ করে না। তিনি বলেন, সারা দেশে গুন্ডামী অত্যাচর সন্ত্রাস চালাচ্ছে। সব জায়গায় আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। জেল জুলুম যুদ্ধ করেও আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে ছিলাম।
সেজন্যই এদেশের মানুষ মূল্য দিয়েছে। সারা দেশ থেকে যারা সমাবেশে আসার সময় গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। তিনি বলেন, গত তিন দিন ধরে সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গাড়ী ঘোড়া চলে না, দোকান পাট খোলে নাই, হোটেল রেস্তোরা বন্ধ তারপরও লোক আসা বন্ধ করতে পারে নাই। বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, এই সরকার জনগণের সরকার নয়।
তারা শুধু আওয়ামী লীগের সরকার। মইন উদ্দিন ফখরুদ্দীনের সরকার।
বেগম খালেদা জিয়া বলেন, তাদের নেতা-নেত্রীরা কুরুচীপূর্ণ বক্তব্য দেয়। কোনো রুচি সম্পন্ন মানুষ এধরণের ব্যক্তিগত আক্রমনমূলক বক্তব্য রাখতে পারে না। আমি এসব বক্তব্যের জবাব দিতে চাই।
দেশের মানুষ জানে কারা দেশপ্রেমিক আর অন্য দেশের প্রেমিক। ক্ষমতায় থেকে কারা রাষ্ট্রিয় স্বার্থ রক্ষা করে তাও দেশের মানুষ জানে। কারা বিদেশ থেকে বস্তা ভর্তি টাকা এনে ইলেকশন করে। এটা আমার কথা নয়। বিদেশের পত্রিকার খবর।
তিনি বলেন, এই সরকার নির্বাচনের আগে যেসব ওয়াদা করেছিলো একটি ওয়াদাও পূরণ করে নাই। প্রধানমন্ত্রীকে বলবো দয়া করে আপনার বিবেক বলে কিছু থাকে তাহলে আয়নায় নিজের মুখ দেখুন। দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদা বান। তাই এমন কিছু বলবেন না যাতে দেশের মানুষ লজ্জা পায়।
তিনি বলেন, এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আপনারাই একদিন তুলেছিলেন।
মানুষ হত্যা করেছিলেন। এখন কেনো কেয়ার টেকার সরকারের বিরুদ্ধে? তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমাদের ক্ষমতায় বসাবে না। জনগণের ভোটেই আমরা ক্ষমতায় আসবো। তাহলে আপনার ভাষায় আমি কি বলবো, ফখরুদ্দীন মইন উদ্দিন আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে।
তিনি বলেন, আমি এই দেশকে ভালো বাসি।
তিন তিন বার এই জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছে। বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। এই দেশের মানুষ বিএনপি ভোট দেয় কারণ বিএনপি এই দেশের মানুষের জন্য কাজ করে। তাই দেশের মানুষ যখন সুযোগ পায় বিএনপিকে ভোট দেয়। তিনি বলেন, আমি ক্ষমতায় যাওয়ার রাজনীতি করি না।
আমি দেশ ও মানুষের রক্ষার জন্য রাজনীতি করি। মইন উদ্দিন-ফখরুদ্দীন দুই বছরে দেশকে অনেক পিছিয়ে দিয়ে গেছে। সাধারণ মানুষের আজ কি অবস্থা। তখন কত রঙ্গীন ওয়াদা করেছিলো। দিন বদল করবে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ করবে।
বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, প্রশাসন এখন ঠুটো জগন্নাথ। বিচার বিভাগে ন্যায় বিচার পাওয়া কঠিন। এখন আওয়ামী লীগের জন্য এক রকমের জন্য এক রকমের বিচার। আর বিরোধী দল আর সাধারণ মানুষের জন্য এক রকমের বিচার।
আওয়ামী লীগ নেতাদের খুনের মামলাও মাফ হয়ে যায়। আর বিএনপির মামলাতো শেষ হয়ই না, নতুন নতুন মামলা দিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। বিচার বিভাগ সম্পূর্ণভাবে দলীয় করণ করা হয়েছে। প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক উল হক বলেছেন, এখন আদালতে মুখ দেখে বিচার হয়। তিনি বলেন, দেশে এখন এক ব্যাক্তির শাসন চালু করা হয়েছে।
গণতন্ত্র আজকে এক ব্যাক্তির হাতে বন্ধি। এই বন্ধি দশা থেকে গণতন্ত্রকে উদ্ধার করতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেন, সরকারি দলের মধ্যেও কিছু বিবেক বান লোক আছে। তারা এসব পছন্দ করে না। কিন্তু অপমানিত ও লাঞ্ছিত হওয়ার ভয়ে কথা বলে না।
তাদের বলবো মুখ খুলে কথা বলেন। সাংবাদিকতাকে বলা হয় ফোর্থ এস্টেট। সরকার অলিখিত নির্দেশ দিচ্ছে। পত্রিকা, টিভি চ্যানেল টকশো বন্ধ করে দেয়। আজকের এই মহাসমাবেশ সরাসরি সম্প্রচার করার জন্য বাংলা ভিশন একুশে টিভি এনটিভি প্রস্তুতি নিয়েছিলো।
তাদের বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তাদের বলেছে সরাসরি সম্প্রচার করলে লাইসেন্স বাতিল করে দেয়া হবে। আমি দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করছি, আমরা ক্ষমতায় গেলে গণমাধ্যমে পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে।
তিনি বলেন, সত্য খবর দেয় বলে গণমাধ্যমকে ভয় পায় সরকার। এই সময়ে ১৫ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে।
সবশেষ খুন হয়েছে সাগর-রুনি। এই হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার-টিচার আর হবে না। প্রধানমন্ত্রী নিজেই দায়িত্ব নিয়ে এখন বলছেন, আলামত মুছে গেছে। আলামত মুছে ফেলে এখন বলেন, মুছে গেছে! সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে আন্দোলন চালিয়ে যেতে সাংবাদিকদের আহ্বান জানিয়ে তাতে বিএনপির সমর্থন থাকবে বলে জানান তিনি।
বেডরুম পাহারা দেয়া যাবে না প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সমালোচান করে খালেদা জিয়া বলেন, কয়েকদিন আগে রাস্তায় একজন বিদেশি খুন হয়েছে তার দায়িত্ব কে নেবে।
এখন বিভিন্ন ডোবায়, রাস্তায় মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে। পুলিশ ধরে নিয়ে যায় তারপর আর খোঁজ পাওয়া যাওয়া যায় না। কয়েক দিন আগে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে তার গাড়ি থেকে নামিয়ে গাড়ি নিয়ে গেছে। এসব হত্যা ও সন্ত্রাস বন্ধ করতে হলে নিজের দলের অস্ত্রবাজদের ধরুণ।
তিনি বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিন বছরে দেশের কোনো কিছু করেনি।
তারা কোনো কাজই করতে পারেনি। মহাজোটের শরীক এরশাদ বলেছে ফেনীর জনসভায় বলেছে। কোনো জিনিসের দাম কমাতে পারেনি। মানুষের কোনো আয় বাড়েনি। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের সময় চটকদার কথা বলেছিলো, ক্ষমতায় গেলে উনি দশটাকা কেজি চাল খাওয়াবেন।
দশ টাকায় চাল পান আপনারা? ঘরে ঘরে চাকুরি দেবে। পেয়েছেন? বরং চাকুরি থেকে বরখাস্ত করেছে। চাকুরি দিতে পারেনি, দশটাকায় চাল দিতে পারে নাই, বিনামূল্যে সার দিতে পারেনি। অন্যদিকে কৃষি উপকরণের দাম বাড়িয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, আওয়ামী লীগ আগেরবার ক্ষমতায় থাকাকালে শেয়ার বাজার লুট হয়েছিলো।
এবার ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারী পথে বসেছে। তারা আজ অসহায়। তারা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। তিন জন বিনিয়োগকারী আত্ম হত্যা করেছে। এই শেয়ার বাজার লুটের সঙ্গে যারা জড়িত এখন পর্যন্ত তাদের কাউকে ধরা হয়নি।
অর্থমন্ত্রী বললেন, যারা লুট করেছে তারা এত ক্ষমতাবান যেতাদের নাম প্রকাশ করা বা তাদের ধরার ক্ষমতা তাদের নেই। কাজেই বুঝতে বাকী থাকে না অর্থমন্ত্রীর ওপরে কে ক্ষমতাবান। অর্থমন্ত্রীর ওপরে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা বলতে চাই এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের একদিন ধরে বিচার করা হবে।
সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতির সমালোচনা করেন বেগম খালেদা জিয়া বলেন, এই সরকার বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য কোনো কাজ করে নাই।
কিন্তু অন্য দেশের জন্য কাজ করেছে। ভারতের নাগরিকরা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে ফসল কেটে নিয়ে যায়। বিএসএফ প্রতিনিয়ত গুলি করে মানুষ হত্যা করে। এই সরকারের আমলে বর্ডার সিকিউরিটি বলতে কিছু নাই। ইনশাল্লাহ বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আবার বর্ডার সিকিউরিটি গড়ে তোলা হবে।
প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে আমরাও বন্ধুত্ব চাই। কিন্তু সেটা হবে দেয়া নেয়ার ভিত্তিতে। আমরা শুধু দিয়েই যাবো তারা কিছুই দেবে না তা হয় না। সেটা বন্ধুত্ব নয়, তা হচ্ছে গোলামী।
কুইক রেন্টালের নামে বিদ্যুৎ খাতে লুটপাট চলছে উল্লেক করে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেন, লোডশেডিংয়ে আজ জনজীবন অতিষ্ঠ।
অথচ কুইক রেন্টাল প্লান্টের নামে দলীয় লোকজন ও আত্মীয়স্বজনদের লুটপাট করার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ দিতে নয়, লুটপাটের জন্যই এই কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট। বেগম খালেদা জিয়া এসময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধির কঠোর সমালোচনা করেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেন, এই সরকার মানুষকে সম্মান দিতে জানে না। তারা গ্রামীণ ব্যাংক ও দেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসকে কি আচরণ করেছে।
এতে বিদেশে আমাদের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। এখনই এই সরকারকে সরাতে না পারলে দেশ কঠিন অবস্থায় পড়বে। সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা মুখ খুলুন, নইলে পরে জনরোষে পড়বেন। জনগণের হাতে লাঞ্ছিত হবেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া প্রতিশ্র“তি দিয়ে বলেন, এক কোটি দরিদ্র মানুষকে রেশনিং এর আওতায় আনা হবে।
দেশের সব রকম দুর্নীতি বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিচার বিভাগ ও মিডিয়াকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। সংবিধানের অসংগতি বিধান বাতিল করা হবে। প্রশাসন বিকেন্দ্রী করণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকারের ক্ষমতা বাড়ানো হবে। দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক মূল্য কমিয়ে আনা হবে।
বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা হবে। প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে সমমর্যাদার ভিত্তিতে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা হবে। গভীর সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠা করা হবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট ও দেশি বিনিয়োকারীদের উৎসাহিত করা হবে। নতুন শিল্প কারখানা চালু ও বন্ধ থাকা শিল্প কারখানা চালু করা হবে।
বিদ্যুৎ গ্যাস ও অন্যান্য জালানীর নিরবিচ্ছিন্ন ব্যবস্থা করা হবে। সরকারি যেসব বিদ্যুৎ প্লান্টে গ্যাস দেয়া বন্ধ আছে সেখানে গ্যাস দেয়া হবে। ব্যাক্তি মালিকানায় নতুন শিল্প গড়তে ন্যায্য মূল্যে গ্যাস দেয়া হবে। রেলওয়ের ব্যাপক উন্নয়ন করা হবে। কমিউটার ট্রেন চালু করা হবে।
ঢাকায় যানজট নিরসনের জন্য মেট্রো রেল নির্মাণ করা হবে। পাবলিক ট্রান্সপোর্টের ব্যবস্থা করা হবে। কৃষকদের সহায়তা করা হবে। ছাত্রদের ডিগ্রি পর্যন্ত লেখা পড়া অবৈতনিক করা হবে। বেকারদের জন্য বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার করা হবে।
জাতীয় অর্থনীতি কর্মকান্ডে চট্টগ্রামকে সম্পৃক্ত করা হবে। শিক্ষার ব্যয় কমানো হবে। শিক্ষিত ছেলে মেয়েদের জন্য ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও সম্মান বাড়ানো হবে। পরিত্যাক্ত নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
বয়স্ক ভাতা বাড়ানো হবে।
দুপুর আড়াইটায় বেগম খালেদা জিয়া মঞ্চে এসে উপস্থিত হলে করতালি আর শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠে পুরো ঢাকা শহর। বেগম খালেদা জিয়া হাত নেড়ে সারাদেশ থেকে আগত নেতা-কর্মীদের এই প্রাণ উৎসারিত অভিনন্দনের জবাব দেন। ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শাহ মো. নেসারুল হকের কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে মহাসমাবেশের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সভাপতিত্বে, বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ জয়নাল আবদীন ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুস সালামের পরিচালনায় মহাসমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, তরিকুল ইসলাম, লে. জেনারেল অব. মাহবুবুর রহমান, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল অব. আ স ম হান্নান শাহ, এমকে আনোয়ার, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আববাস, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, এয়ার ভাইস মার্শাল অব. আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, মেজর অব. হাফিজুর রহমান, এম মোরশেদ খান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ফজলুর রহমান পটল, ড. এম ওসমান ফারুক, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, অধ্যাপক আবদুল মান্নান, মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, শামুসজ্জামান দুদু, ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, বরকতউল্লাহ বুলু, মিজানুর রহমান মিনু, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, রুহুল কবীর রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান, গোলাম আকবর, এম ইলিয়াস আলী, হারুন-অর-রশিদ, যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি হাবিব-উন-নবী সোহলে, মহিলাদলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন সুলতানা, ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মিয়া গোলাম পরওয়ার, নুরুল ইসলাম বুলবুল, মাওলানা এটিএম মাসুদ, মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, এলডিপি’র চেয়ারম্যান কর্নেল অব. অলি আহমদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. রেদোয়ান আহমেদ, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম বীর প্রতীক, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির এনপিপি চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নীলু, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি এনডিপির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্তুজা, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ারুল হক, মুসলিম লীগের নির্বাহী সভাপতি এএইচ এম কামরুজ্জামান, ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল মবিন।
মহাসমাবেশ পরিচালনা করছেন বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। মহাসমাবেশের শুরুতেই একজন রিকশাচালক ও তারপর শেয়ারবাজারে সর্বস্ব হারনো একজন বিনিয়োগকারী বক্তব্য দেন। এছাড়া বক্তব্য দেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কামালউদ্দিন আহম্মেদ সবুজ।
এর আগে সকাল দশটা থেকে মহাসমাবেশে আগত নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে মূল মঞ্চ থেকে দলীয় ও গণসংগীত পরিবেশন করে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস। এসময় কণ্ঠশিল্পী আপেল মাহমুদ, গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার, জাসাস সভাপতি এমএ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কণ্ঠশিল্পী মনির খান, ছড়াকার আবু সালেহ, কণ্ঠশিল্পী রিজিয়া পারভীন, হাসান চৌধুরী, বাদশা বুলবুল, নাসির, জাসাস উত্তরের সভাপতি মীর সানাউল হক, দক্ষিণের সভাপতি জাহাঙ্গীর শিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আহ্বায়ক সালাহউদ্দিন শাহীন, সদস্য সচিব আরিফুজ্জামান মামুন, পিয়াল হাসান, রেখা, রিমা রায়, মুহিন, অভিনেতা ডন, শিবাসানু, এসকে রুনা, কিসলু মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
শিল্পীরা বিভিন্ন গণসংগীত পরিবেশন করে নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা রাখেন। এছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া মঞ্চে আসন গ্রহণ করলে জাসাসের তৈরী ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচীর থিম সং পরিবেশন করা হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।