আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মার্কিন সেনাবাহিনীতে নারীদের ওপর অসহনীয় যৌন নির্যাতন

(দৈনিক মানবজমিন থেকে সংগৃহীত মূল রিপোর্ট দেখতে আজকের মানবজমিন দেখুন) সামরিক বাহিনীতে নিয়োজিত মার্কিন নারীদের ওপর যৌন হয়রানির হার অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। ডিপার্টমেন্ট অব ভেটেরানস অ্যাফেয়ার্সের অর্থায়নে এক জরিপে দেখা গেছে, ২০০৬ সালে বেসামরিক নারীদের যৌন হয়রানির এ হার মাত্র ১৭ ভাগ। সেক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীর পোশাক পরা নারীদের ওপর এই নির্যাতনের শতকরা হার ২৩ থেকে ৩৩ ভাগ পর্যন্ত। অন্যান্য জরিপেও এ বিষয়গুলো বেরিয়ে এসেছে। সম্প্রতি সামরিক বাহিনীতে নিয়োজিতদের যৌন হয়রানি বিষয়ক পেন্টাগনের এক রিপোর্টে দেখা গেছে, ২০১০ থেকে ২০১১ একাডেমিক বছরে ক্যাডেট ও শিক্ষানবীসরা ৬৫ ভাগ হয়রানিতে জড়িত।

এ খবর দিয়ে গত ৮ই মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে নিয়োজিত নারীদের ওপর যৌন হয়রানির এই হার আরও বেশি। কারণ, অনেক নির্যাতিতা লোকলজ্জার ভয়ে নির্যাতিত হওয়ার কথা গোপন রাখেন। তাদের রয়েছে নানা ঝুঁকি। কারণ, তাদেরকে একই কমান্ডারের অধীনে কাজ করতে হয়।

তারা কর্মক্ষেত্র ইচ্ছে হলেই ছেড়ে যেতে পারেন না। তাদের অনেকেই যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়োজিত। তাদেরকে অবশ্যই কমান্ডিং অফিসারের কথামতো চলতে হয়। এরাই আবার তদন্তকারী, বিচারক ও জুরি হয়ে থাকে। ফলে মুখ বুজে এ নির্যাতন সহ্য করেন অনেক নারী।

নিউ ইয়র্ক টাইমস আরও লিখেছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লিওন প্যানেট্টার ধারণা, ২০১১ সালে সামরিক বাহিনীতে নিয়োজিতদের মধ্যে এক সদস্য অন্য সদস্যকে আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে প্রায় ১৯ হাজার বার। এর আগের চেয়ে এ সংখ্যা ৬ গুণেরও বেশি। এ সব আক্রমণ নারী ও পুরুষ দু’ গ্রুপের বেলায়ই ঘটে। এ সমস্যাটি পেন্টাগণের গবেষণা, টাস্কফোর্সের রিপোর্টে দশকের পর দশক টিকে রয়েছে। এক্ষেত্রে বার বারই ‘জিরো টলারেন্স’ অবস্থান নেয়ার কথা বলা হয়েছে।

তবে লিওন প্যানেট্টা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবার ঘটনা ঘটবে ব্যতিক্রমী। ফেব্রুয়ারিতে তিনি কংগ্রেসে বলেছেন, যখনই যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটবে তখনই তা আমলে নিয়ে তার বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে আমরা কমান্ড কাঠামোকে বলেছি। তাদেরকে বলা হয়েছে, তারা যেন অভিযোগ পেলে তা অবজ্ঞা না করেন। লিওন প্যানেট্টা সামরিক বাহিনীতে সংস্কারকে স্বাগত জানিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে সামরিক গোয়েন্দাদের তদন্তে এবং বিচারক, আইনজীবীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য অধিক অর্থ ঘোষণা করা হয়েছে।

নির্যাতিতাকে ঘটনা রিপোর্ট করার জন্য অধিক সহায়তা, নির্যাতনের তথ্য ও তত্ত্ব সংগ্রহে তদারিক বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে। পোন্টাগনের সেক্সুয়াল অ্যাসল্ট প্রিভেনশন এন্ড রেসপন্স অফিস (সাপরো)-এর পরিচালক মেজর জেনারেল মেরি কে হার্টগ সংস্কারকে কার্যকর করতে আহ্বান জানিয়েছেন। এর ফলে নির্যাতিতা অধিক সহায়তা পাবেন। তবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়েক নির্যাতনের বিচারের ক্ষেত্রে রেকর্ড খুবই হতাশাজনক। ২০১০ সালে এমন ঘটনার মধ্যে শতকরা ২১ ভাগেরও কম ঘটনা নানা কারণে বিচারে তোলা হয়।

তার মধ্যে রয়েছে কমান্ডিং অফিসারের বিচার করা যাবে না অথবা তাদেরকে প্রশাসনিক শাস্তি দেয়া যাবে না। শতকরা প্রায় ৬ ভাগ অভিযুক্তকে এভাবে খালাস দেয়া হয়েছে অথবা তাদেরকে সামরিক আদালতে বিচারের পরিবর্তে পদত্যাগ করতে অনুমতি দেয়া হয়। এর অর্থ দাঁড়ায় তিনি চাকরি ছাড়লে ওই দায় থেকে মুক্ত। যেসব ঘটনা আমলে নেয়া হয় তার মধ্যে মাত্র অর্ধেক ঘটনায় অভিযুক্তের বিচার হয়। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.