আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নবাবের ঢাকা দর্শন

রাজনীতিবীদদের ঘৃণা করি--- একটু পরে দরবারে আসন গ্রহণ করবেন দরবার-ই-তাজ, নবাব বিন জাতির পিতা, রত্ন-ই-চকমকি, পি এইচ ডি বাবা, শাহেনশাহ আক্কেল বিন বেক্কল---হুশিয়ারররর নবাব আসন গ্রহণ করলেন নবাব- সেনাপতি, সেনাপতি। সেনাপতি- জ্বি জনাব। নবাব- সেনাপতি, আমি ঢাকা যাব বলে মনস্থির করেছি। তুমি আমার ঢাকা যাওয়ার সব ব্যবস্হা কর। সেনাপতি- গোস্তাখি মাফ জনাব।

আপনার এখন ঢাকা যাওয়া ঠিক হবেনা জনাব। নবাব- কেন কেন? তোমার কি জানা নেই যে, আমি যা মনস্থির করি তাই করি। সেনাপতি- বেয়াদবি নিবেন না জনাব। জ্বি জনাব, আমি জানি এ কথা। তবে ঢাকার অবস্হা ভাল নয় জনাব।

নবাব- কেন, কি হয়েছে সেখানে? সেনাপতি- সেখানে যাওয়ার সমস্ত পথ বন্ধ জনাব। জনাব, সেখানকার জমিদার ঘোষণা দিয়েছে, মাটিতে, পানিতে, আকাশে সব জায়গায় পাহারা। কেউ সেই ফাক গলে ভেতরে যেতে পারবেনা। আর যে যাবে তাকে শূলে চড়াবে জনাব, সে যেই হোক না কেন। নবাব- বল কি সেনাপতি! তাহ্লে সেখানকার বাচ্চারা কি বিদ্যালয়ে যাচ্ছেনা? সেনাপতি- যাচ্ছে জনাব।

পায়ে হেঁটে। নবাব- কি নির্মম! তাহ্লে সেখানকার অসুস্হ মানুষেরা কি হাসপাতালে যাচ্ছেনা? সেনাপতি- জানিনা জনাব। মনে হয় না জনাব। নবাব- কি নির্মম! অসুস্হ মানুষেরা মারা গেলে তার দায় কে নিবে? সেনাপতি- জানিনা জনাব। অসুস্হ মানুষেরা মারা গেলে তাদের কিছু আসে যায়না জনাব।

১৫ লক্ষ মানুষে ১৫ জন মারা গেলে কিছু আসে যায়না জনাব। এরকম পরিস্হিতি প্রায়শঃ হয় জনাব। নবাব- কি নির্মম! প্রজারা কি বিদ্রোহ করেনা সেখানে? সেনাপতি- না জনাব। ওখানকার প্রজারা খুব শান্তিপ্রিয় জনাব। নবাব- তাহ্লেতো আমাকে যেতেই হবে সেখানে।

তুমি আমার সভাসদদের খবর দাও, ২ মিনিটের মাঝে দরবারে উপস্হিত হওয়ার জন্য। সেনাপতি- জ্বি জনাব। ( ২ মিনিট পরে) নবাব- প্রিয় সভাসদ, আমি আজ এখনি ঢাকা যাব। আমি জানি আপনারা আমাকে নিষেধ করবেন, কিন্তু আমি যাবই। এখন বলুন যাওয়ার উপায় কি? বীরবল- জনাব, আপনাকে কালো রংয়ের মুজিব কোট বানাতে হবে, তাহ্লেই আপনার ঢাকা যাওয়ার পথ পানির মত পরিস্কার।

নবাব- বীরবল, এজন্যই তোমাকে আমার প্রধান উপদেষ্টা বানিয়েছি। বীরবল- নবাবের চরণে আমার জীবন। নবাব- নাসিরুদ্দিন হোজ্জা, তুমি কি বল? নাসিরুদ্দিন হোজ্জা- জনাব, মুজিব কোট বানানো সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, এক কাজ করুন, আপনার ২ গালে জয় বাংলা আর জয় বঙ্গবন্ধু এঁকে নিন। তাহ্লেই পথ পরিস্কার। নবাব- মারহাবা, মারহাবা।

নাসিরুদ্দিন হোজ্জা-নবাবের চরণে আমার জীবন। নবাব- গোপাল ভাঁড়, তোমার কাছে কি কোনো পরামর্শ আছে? গোপাল ভাঁড়- আছেন মানে! আলবৎ আছে জনাব। নবাব- বলে ফেল হে! গোপাল ভাঁড়- জনাব, প্রথমতঃ আপনাকে যেতে হবে নৌকায় চড়ে। এখন যারা বিরোধী দলে, তারা ক্ষমতায় থাকলে কয়েক বস্তা ধানের শীষ নিলেই হত। দ্বিতীয়তঃ স্বাধী্নতার ঘোষক নিয়ে যেসব গান বেরিয়েছে তার একটি ঝটপট মুখস্হ কএ ফেলুন।

সরকারি দলের গান- শোনো ১টি---- থেকে লক্ষ ------ এই জাতীয়। এই গান আবার ৫ বছর পর পর পরিবর্তন হয় জনাব। তৃ্তীয়তঃ জনাব পার্শ্ববর্তী ভারত রাজ্য থেকে আপনার ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট আনতে পারলেও ঢাকা যাওয়া সহজ হবে জনাব। এর পরে আরো আছে জনাব-- নবাব- থাম, থাম। আমার মাথাটা ব্যথা করছে গোপাল ভাঁড়।

ঢাকা রাজ্যের মানুষের কথা ভেবেতো আমার কষ্ট হচ্ছে! আর সরকারি আর বিরোধী দলের আচরণ দেখে আমার ঐ গানটার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। সভাসদ- কোনটা জনাব? নবাব- ঐ যে, ম্যা কারুতো শালা, ক্যারেক্টার ঢিলা হ্যায়--- নবাব আর সভাসদ সকলে সমস্বরে গেয়ে উঠল---ম্যা কারুতো শালা, ক্যারেক্টার ঢিলা হ্যায়। গানের তালের সাথে উদ্দাম নৃ্ত্য নবাব আর তার সভাসদগণদের ভুলিয়ে দিল যে ঢাকা যেতে হবে জনগণের কষ্ট লাঘব করার জন্য। এভাবেই নবাব আর তার সভাসদগণ গানের তালে হারিয়ে যান আর নিরীহ জনগণ হা করে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে ১ ফোঁটা বৃষ্টির জন্য। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।