১৯৬৩ সালের আবিস্কৃত খাগড়াছড়ির একমাত্র গ্যাসত্রে মানিকছড়ির “সেমুতাং” ৪৮ বছর পর পুরোদমে উৎপাদনে রয়েছে। কিন্তু গ্যাস ব্যবহারে স্থানীয়দের চাহিদা মেটানোর দাবী অগ্রাহ্য করায় জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে । চলছে অবরোধ, সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল। কর্তৃপক্ষ এসব দাবী আমলেই নিচ্ছে না।
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার কালাপানি মৌজার ২১ একর ভূমির উপর ১৯৬৩ইং সনে ব্রিটিশ কোম্পানির একটি অনুসন্ধানী দল সিমুতাং গ্যাসত্রেটি আবিস্কার করে।
৫টি কুপের মাধ্যমে ১৯৬৯ইং সালে সর্বপ্রথম পরীক্ষা মূলকভাবে ১ বছর ধরে গ্যাস ও তেল উত্তোলন করে তা স্থানীয়ভাবে ব্যবহার ও বাজারজাত করা হয়েছিল। প্রচুর পরিমান তেল ও গ্যাসের মজুত পাওয়ায় এই গ্যাসত্রে নিয়ে বিশ্বব্যাপি আলোড়ন সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ২ নং কুপে সন্ত্রাসীরা বোমা মেরে রিগ মেশিনসহ ওয়েলহেডটি সমপূর্ণরূপে ভূ-গর্ভে তলিয়ে দিলে গ্যাস উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭০ সালে পূনঃরায় কার্যক্রম শুরু হলেও স্বাধীনতা যুদ্ধের কারণে সম্ভব হয়নি। পরবর্তিতে পেট্রোবাংলা ১৯৮৩, ১৯৯৪, ১৯৯৭, ২০০০, ২০০৪ সালে বিভিন্ন কোম্পানির সাথে চুক্তি ও গ্যাসের ব্যবহার নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্তে না পৌছার কারণে গ্যাস উত্তোলনে ব্যর্থ হয়।
ফলে গ্যাসত্রেটি একপর্যায়ে অভিবাবকহীন হয়ে পড়ে। সর্বশেষ ২০০৯ সালে মন্ত্রনালয়ের একনেক সভার সিদ্ধান্তানুয়ায়ী বাপেক্স প্রথমে ২০১১ এবং পরে ২০১৩ সাল থেকে গ্যাস উত্তোলনের টার্গেট নিয়ে কাজ করে। যথারীতি ৩৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে এক্সপোরেশন এন্ড প্রডাকশন ক্যাপাসিটি বিল্ডিং, ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক মেরামত, ৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সিমুতাং গ্রসেন প্রসেস রিগ ওয়াকওভার অপারেশন প্রকল্প শেষে গত ২৪ জুন কুপে আগুন দিয়ে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হয় যে দৈনিক ১৫-২০ মিলিয়ন কিউবিক ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যে চট্রগ্রাম শহর থেকে গ্যাসত্রে পর্যন্ত ৬৫ কি.মি. পাইপ লাইনটি কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানীর মাধ্যমে শেষ করা হয়। চট্টগ্রামে গ্যাসের তীব্র সংকট থাকায় কর্তৃপ দ্রুত গ্যাস সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় গ্যাস প্রসেস প্ল্যান নির্মাণে কর্তৃপ এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
অন্য একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিজয় দিবসের আগেই আনুষ্টানিকভাবে উদ্বোধনের প্রস্তুতি চলছে।
এ দিকে স্থানীয়ভাবে এ গ্যাস ব্যবহার অথবা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের দাবীতে গত এক সপ্তাহ ধরে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ সভাÑসমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ করে দাবী আদায়ের চেষ্টা করছে। কিন্তু সরকার কিংবা বাপেক্স এ বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানী উপদেষ্টা ড. তৌফিক এলাহীসহ একটি প্রতিনিধিদল গত সেপ্টেম্বর মাসে গ্যাস ক্ষেত্র পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন এ গ্যাসত্রে থেকে প্রাপ্ত গ্যাস চট্টগ্রামের গ্রাহকদের জন্য সরবরাহ করা হবে। পরে নতুন কুপ খনন সাপেক্ষে স্থানীয় চাহিদার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
কিন্তু খাগড়াছড়ি বাসীর দাবী সেমুতাং এর গ্যাস পাওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় চাহিদাকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দেয়া হোক................ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।