কিচ কিচ কুচ কুচ কাচ কাচ কোচ কোচ!!! ১
পৃথিবীর শেষ মানুষটি একা একটা অন্ধকার ঘরে বসে ছিল। হঠাৎ কে যেন দরজায় টোকা দিল, "টক টক টক"।
মানুষটি, মানে মেয়েটি চমকে উঠল। গত দশ বছর ধরে সে-ই পৃথিবীর একমাত্র মানুষ, দশ বছর আগে এক ভয়াবহ নিউক্লিয়ার বিস্ফোরণে ও তার পরবর্তী বিকিরণজনিত কারণে সে ছাড়া পৃথিবীর আর সব মানুষ মারা যায়, সে অজ্ঞাত কোন কারণে বেঁচে যায় ঐ তাণ্ডবলীলা থেকে।
সুতরাং, এ মুহূর্তে দরজায় ধাক্কা মেয়েটির আত্মারাম খাঁচাছাড়া করার জন্য যথেষ্ট।
২
মেয়েটি ভয়ে ভয়ে দরজাটি খুলে দিল।
ভিতরে প্রবেশ করল মেয়েটির পোষা রোবট জিনি। মেয়েটি স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ল।
জিনি এই নিঃশ্বাস ফেলা দেখে খুব অবাক হয়ে গেল। সে তৃতীয় প্রজাতির রোবট, নিঃশ্বাস কি এবং মানুষ কেন নিঃশ্বাস ফেলে এই নিয়ে বিশদ ডাটা তার কপোট্রনে নেই।
জিনি বলল, "তুমি এটা কি করলে?"
মেয়েটি বলল, "কি করলাম?"
"এই যে আমাকে দেখে শ্বাসনালী দিয়ে প্রচুর পরিমাণ বায়ু নির্গত করলে?"
"ও এইটা? একে বলে নিঃশ্বাস ছাড়া। "
"নিঃশ্বাস তুমি কেন ছাড়লে?"
"আসলে তুমি কখনও দরজায় টক টক করো না তো, তাই আজকে টক টক শব্দ শুনে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম..."
"কি ভেবেছিলে?"
"প্রথমে ভেবেছিলাম ভূত। আর আমি পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম ভৌতিক গল্পের নায়িকা। কিন্তু পরে বুঝলাম..."
"কি বুঝলে?"
"আসলে তা নয়।
এই গল্পের লেখক সালেহ তিয়াস। তার মানে গল্পটা ভৌতিক দিকে যাবে না, সায়েন্স ফিকশনের দিকে যাবে। সুতরাং দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে আমি বুঝতে পারলাম তুমিই টক টক শব্দ করেছ, এবং আসলেই তাই। "
জিনি নিথর হয়ে দাড়িয়ে রইল। মেয়েটির সাপ্তাহিক মেডিকেল চেক আপের রুটিন তার হাতে।
মেয়েটি একটু অবাক হল। হঠাৎ করেই একটা আশঙ্কা গ্রাস করে নিল তার অন্তর। এই গল্প লিখছেন সালেহ তিয়াস...
এবং তার মানে...
গল্পটা যাবে বীভৎস কোন সাইকো থ্রিলারের দিকে...
আর সেটায় হয়তো তাকেই গ্রাস করতে হবে ভয়াবহ কোন পরিণতি...
নিজের অজান্তেই একটা আর্তচিৎকার বেরিয়ে এল মেয়েটার মুখ দিয়ে।
৩
জিনি যান্ত্রিক কণ্ঠে মেয়েটাকে বলল, "তোমার রুটিন ইউরিন এক্সামিনেশনে অ্যান্টিবডি ধরা পড়েছে"।
মেয়েটি ভয়ার্ত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল, "তার মানে?"
জিনি বলল, "তার মানে, তুমি প্রেগন্যান্ট"।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।