আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সেনা স্ত্রীদের কান্নায় নয় রাষ্ট্রের প্রয়োজনেই বিচার হোক।

শেষ বারের মতো সতর্ক করছি... বিডিআর বিদ্রুহে নিহত সেনা অফসারদের স্ত্রীরা এই হত্যা কান্ডের বিচার চায়। স্ত্রীরা স্বামী হত্যার বিচার চাইতেই পারে। কেউ এই বিচার ঢিলাঢালা ভাবে হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন। কেউ কেই অভিযোগ করছেন, বিনাঅপারাধে অনেকেই শাস্তি পাচ্ছে। এই ব্যর্থ অভ্যুত্থানের নায়কদের বিচার হোক এটা আমিও চাই।

তবে তা ব্যক্তিগত সুখ, দুঃখ বেদনা থেকে নয়। আমার জানার আগ্রহ , এই সেনা অফিসাররা যদি রাষ্ট্রের স্বার্থে কোন যুদ্ধে নিহত হতেন তখন পরিস্থিতি কি হতো?আমাদের সুসংহত বাহীনিতে যখন ব্যর্থ অভ্যুত্থান ঘটানো হলো,একটি বাহীনির আস্থা,মনোবল ধুলিসাৎ করে দেয়া হলো , যেখানে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন হলো সেখানে ব্যক্তির সুখ,দুঃখ,বেদনার মূল্য কোথায়? আমি মনে করি আমাদের যে কোন একটি বাহিনীকে যদি অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য তাদের মধ্য থেকে কয়েক হাজার মেরে ফেলতে হয়, জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে তা করতে হবে। কয়েক হাজার অফিসার হত্যার মাধ্যমে যদি একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা যায় তবে তাই করতে হবে। ব্যক্তি ইচ্ছার আকাঙ্খার আলাদা ভাবে কোন মূল্য নেই। যারা সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন বুলেট বুকে নেবার পণ করেই নিয়েছেন।

দেশের স্বার্থে তারা প্রাণ দিবেন ,বুকে বুলেট ঠেকিয়ে রাষ্ট্রকে রক্ষা করবেন এই তো প্রতিজ্ঞা? তবে এত ব্যক্তি চিন্তা আসে কেন? আমাদের অফিসারদের হত্যা করা সেনা বাহিনীর জন্য অবশ্যই ক্ষতিকর। বাহিনীর ক্ষতি মানেই তো আমাদের ক্ষতি। তাই এই বিচার কাজের জন্য আমি রাষ্টের উপরই নির্ভর করতে রাজি। এই বিষয় নিয়ে কোন রকম ক্ষমতা দখলের রাজনীতি কিংবা আবেগের রাজনীতি কোনটারই পক্ষে নেই। কথাটা কেন মনে আসলো? এই কয়দিন ধরে প্রায়ই রেডিও,টিভিতে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্ত্রীদের আবেগ,তাদের অবুঝ সন্তানদের কান্না দেখিয়ে একটা চটকদার নিওজ করার প্রবনতা থাকছে।

কে কি ভাবে এই খবর উপস্থাপন করতে পারেন, তার একটা প্রতিযোগিতা হয়ে গেছে। (অবশ্য ২৬ ফেব্রুয়ারীর পরে আর দেখা যায়নি। আবার হয়তো সামনের বছরের ২৫ ফ্রেব্রুয়ারী এলে শুরু করবে। ) তো সেই মাইক্রোফো হাতে যখন নিহত অফিসারদের স্ত্রীদের মুখে নিয়ে ধরেন। এবং তারা যখন কান্না কান্না কন্ঠে তাদের স্বামী হত্যার বিচার চান, তখন মনে হয় তারা স্বামী হত্যার বিচার না পেয়ে কান্না কাটি করছেন।

আমাদের দেশে যেখানে অনেক হত্যা কান্ডেরই বিচার হচ্ছে না। অনেক স্বামী হত্যার বিচারই হয়নি। সেই সব হত্যা কন্ডের রিপোর্ট গুলো এমনই হয়ে থাকে। সাধারন খুন এবং এই হত্যা কান্ড এক করে ফেলার কোন সুযোগ নাই। কারন ব্যক্তিগত লোভ লালসা, ব্যাক্তি গত ক্ষোভ, কিংবা ব্যক্তি গত অবেগ এই হত্যার পেছনে ছিলনা।

তাই এই হত্যাকে ব্যক্তি গত আবেগ দিয়ে ঢেকে ফেলতে রাজি নই। আমরা যেখানে সেই সেনা অফিসারদরে আমাদের রাষ্ট্রিয় সম্পদ মনে করি, যেখানে তাদের নিহত হওয়াকে রাষ্ট্রিয় ক্ষতি হিসেবে দেখি,এবং এই হত্যার মাধ্যমে আমাদের বিডিআর কে বিলুপ্ত করতে বাধ্য করা হয়েছে। তাই এর হত্যাকে অন্যান্য হত্যার সাথে মিলিয়ে সেই সেনা অফিসারদের ছোটই করা হয়। রাষ্ট যখন মৃত্যুর দায় নিয়ে নেয়,তখন মিডিয়ার আবেগ কিছুটা মাসির কান্নার মতোই শোনায়। এই বিদ্রুহের বিচার করলে সেনা অফিসারদের স্ত্রীরা যে সান্তনা পাবেন,তাদের পরিবার যে তৃপ্তি পাবেন।

তার চেয়ে এর বিচার আমাদের রাষ্ট্রের জন্য বেশি জরুরি, এই কথা কোন ভাবেই ভুলে গেলে চলবেনা । যে স্ত্রীর কাছে স্বামী হারানোর ক্ষতির চেয়ে একজন সেনা অফিসার হারানো রাষ্ট্রের জন্য বেশি ক্ষতি হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর স্বার্থে, রাষ্ট্রের স্বার্থে সরকারের উচিত এর যথার্থ বিচার করা । যদি সরকার এই বিচার শক্ত হাতে করতে ব্যর্থ হয় তবে আমাদের ভয়াভহ পরিনতির কেউ ঠেকাতে পারবেনা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.