আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিদেশ সফর : ট্যুরিজম বোর্ডের একমাত্র অর্জন !!

মনের মহাজন খুঁজে ফিরি.... প্রতিষ্ঠার এক বছর বিদেশ সফর করেই কাটিয়েছেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের কর্মকর্তারা। পর্যটনের উন্নয়নে বোর্ডের কর্তা ব্যক্তিরা কোনও কাজ না করলেও বিদেশ সফরে পিছিয়ে ছিলেন না কেউই। একেক কর্মকর্তা একাধিক দেশও সফর করেছেন। এক বছরের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বোর্ডের অর্জনের ঝুলিতে জমা হয়েছে শুধুই বিদেশ সফর। বাংলানিউজের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গেল এক বছরে বিটিবির ১০ কর্মকর্তা চীন, জাপান, সিঙ্গাপুর, ইংল্যান্ড ও স্পেন সফর করেছেন।

প্রতিটি দেশ সফরে গিয়েছেন তিনজন কর্মকর্তা। সর্বশেষ চলতি জানুয়ারি মাসে বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা আকতার হোসেন গিয়েছেন স্পেন সফরে। আগামী মার্চে যাচ্ছেন জার্মানিতে। বোর্ডের সিইও জাপান ও ইংল্যান্ড ঘুরে এসেছেন। প্রতিষ্ঠানের এক্সিকিউটিভ অফিসার রফিকুল ইসলামও ইংল্যান্ড ও জাপান ঘুরে এসেছেন।

বোর্ডের ডেপুটি ম্যানেজার জিয়াউল করিম সফর করেছেন চীন, নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন সিঙ্গাপুর, তৌহিদুল ইসলাম চীন, সহকারী নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ ইংল্যান্ড সফর করেছেন। শুধু বোর্ডের কর্মকর্তাই নয়, তদবির ও নানা কারণ দেখিয়ে এসব সফরে যুক্ত হয়েছেন বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিবও। তিনি সফর করেছেন সিঙ্গাপুর। তৎকালীন বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআর) আবদুল লতিফ বকশী ইংল্যান্ড ও সিনিয়র সহকারী সচিব কেয়া খান জাপান সফর করেছেন। এ ধরনের বিদেশ সফরে কর্মকর্তাদের প্রধান কাজ থাকে দেশীয় পণ্য বিক্রি করা, বিদেশে নিজের দেশকে তুলে ধরা।

কিন্তু যেসব কর্মকর্তা বিদেশ সফরে গিয়েছেন তাদের কারোরই মার্কেটিং জ্ঞান নেই। অভিযোগ রয়েছে, মন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা হওয়ার কারণেই বিশেষ সুবিধা দিতেই বকশীকে বিদেশ পাঠানো হয়। একইভাবে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদেরও বিদেশ টিমের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা ছিল না। পর্যটন করপোরেশনের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, এই সফর কাউকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য নয়। দেশকে তুলে ধরাই সফরের মূল উদ্দেশ্য।

অথচ এসব সফর হয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তিকে বিদেশ ঘুরিয়ে আনতে। বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এসব সফরের আগে যেসব প্রস্তুতি নিয়ে বিদেশে যাওয়ার কথা ছিল তার কিছুই করা হয়নি। চলতি মাসের আগের সফর পর্যন্ত প্রতিটি সফরে বোর্ডের তিনজন কর্মকর্তা বিদেশে গিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে এ নিয়ে মন্ত্রণালয় আপত্তি জানায়। এরপর প্রতি সফরে একজনের বেশি না যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

পর্যটন মেলায় যাওয়ার নাম করেই এসব সফর করা হয়েছে। অথচ দেশের মধ্যে গেল এক বছরে এ বিষয়ে কোনও ধরনের প্রমোশনাল কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়নি। বোর্ডের কর্মকাণ্ডে কর্মকর্তাদের অনীহা থাকলেও বিদেশ সফরের বেলায় তারা সবাই ছিলেন শতভাগ চাঙ্গা। দেশকে প্রমোট করা, বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার কাছে দেশের পর্যটন সম্পর্কে তুলে ধরা, সভা-সমাবেশে যোগদান করা, স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করা- এসব কাজের কিছুই না করে বিদেশ সফরকারী বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের মেলায় শুধু লিফলেট, ব্রোশিওর বিতরণ করেই দায়িত্ব শেষ করেছে। পর্যটন বিশেষজ্ঞ ও পর্যটন বিষয়ক পাক্ষিক বাংলাদেশ মনিটর পত্রিকার সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, ‘অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বিদেশ সফরের প্রয়োজন রয়েছে।

কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠানের পুরো কর্মকাণ্ড যদি হয়ে থাকে বিদেশ সফরনির্ভর -তা মেনে নেওয়া যায় না। ’  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।