তাল মেলাতে তালগোলিয় গোলমালেতে যত গণ্ডগোল ; যুগের সাথে যোগ-বিয়োগের বোল বলাতে হচ্ছি ভন্ড মূল !!!!
আমার এক সহকর্মী গল্প করছিলেন , আমেরিকা বেড়িয়ে এসে তার উচ্ছ্বাস , গাড়িতে করে একটা লেকের মত জায়গা ক্রস করছিলাম, তখন বর্ণনা করছিলেন :
আমেরিকা কেন উন্নত হবে না! বিশাল একটা লেক এর ধারে আমি আর আমার ছোট মেয়েটা মাছ ধরতে যেতাম,একটা পুলিশ কিংবা সিকিউরিটি তো দূরের কথা, কোনো সমর্থ্যবান যুবক পর্যন্ত নেই।
ষাটের ঘাটের কিছু বৃদ্ধ বৃদ্ধা বড়শী নিয়ে যাচ্ছে, সবার হাতে একটা করে স্কেল ! প্রথম দিকে খুব অবাক হয়েছিলাম ! পরে নোটিস বোর্ড টা নজরে এলো
"১৪ ইঞ্চি এর নীচে কোনো প্রকার মাছ ধরা আইনত : দন্ডনীয় অপরাধ "
একেকটা মাছ বড়শীতে আটকানোর সাথে সাথে সবাই দেখি খুব ব্যস্ত স্কেল আর মাপ ঝোক নিয়ে,১৪ ইঞ্চির সামান্য কম হলেই পানিতে ছেড়ে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে তারা । "
মূলত কথা হচ্ছিল রংপুর তারাগঞ্জ এর কাছে একটি খালের পাড় দিয়ে গাড়ি যাওয়ার সময় । মাছ ধরার উত্সব চলছিল খালটিতে। সবাই পাল্লা দিয়ে জাল পেতেছে ।
কোনো একসময় সেনা বাহিনী নিজ উদ্যোগে বেসামরিক সকলের জন্য মাছের পোনা ছেড়েছিল এখানে,স্বনির্ভর বাংলার স্বপ্ন নিয়ে ।
একটা সাইন বোর্ড সকলের নজরে আসতেই প্রসঙ্গটা উঠলো ।
সাইন বোর্ড টিতে বড় বড় করে লেখা "মাছ ধরা নিষেধ !"
ঠিক সাইন বোর্ডটার নীচেই হচ্ছে মাছ ধরার প্রধান আয়োজন .
আদেশ নিষেধ অমান্য করাতে কেনো আমাদের এই বেপরোরা আচরণ!???
অভাব একটা কারণ হতে পারে , কিন্তু সবচেয়ে বড় কারণ মনে হয় ব্যক্তিগত উদাহরণ তৈরিতে আমাদের নিজেদের ব্যর্থতা ।
আমার সাথে একমত আমার আমেরিকা ফেরত সহকর্মী । বললো,
আমেরিকাতে অনেক স্থান আছে যেখানে অবাধে বন্য প্রাণী ঘুরে বেড়ায়।
বিশাল সব গরু, হরিণ এমনকি বিশালকার অজগর। মালিক নেই,হাতেনাতে শিকারিকে ধরার জন্য রক্ষী নেই ,এদিক সেদিক তাকিয়ে পুলিশও দেখা যায় না। এই সব প্রাণী হত্যা করে টু পাইস কামানোর মত বদ লোকের অভাব ওখানে?মোটেই না !
বদ লোক সব খানেই বদ । আসল দরকার উদাহরণ তৈরি !আগ্রহ নিয়ে জানতে পারলাম ,মার্কিন মল্লুকের কিছু নিদৃষ্ট এলাকাতে পশু পাখি জবেহ করা নিষেধ। সে সকল স্থানের অধিবাসীরা দীর্ঘ পথ ভেঙে জঙ্গলে গিয়ে মুরগী জবেহ করে ,আবর্জনা মাটিতে পুতে তবে রক্ষা!
স্বভাবতই বাঙ্গালি ,জানতে চাইলাম ,যদি না করি!
হেসে ফেললেন আমার সঙ্গী ,"চিন্তাই করা যায় না,ধরা পড়লে তিন হাজার ডলার জরিমানা "আমার দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে যোগ করলেন,"মজার ব্যাপার হলো , ওদের পুলিশের দায়িত্ব বোধ এতো যে , প্রতিটি কেস উদাহরণ তৈরির জন্য তারা লাখ লাখ টাকা খরচ করে ,এমনকি একটা মুরগী হত্যা রহস্য বের করার জন্যও ।
"
এমন ও উদাহরণ আছে যে একটা পাখি হত্যা রহস্য বের করার জন্য ইউ এস সরকার পুলিশ , এফবিআই সব এংগেজ করে লক্ষ লক্ষ ডলার খরচ করে।
এবার আমার হাসার পালা ,
"বাংলাদেশকে দোষ দিচ্ছেন কেনো স্যার !আমাদের দেশে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন পুলিশ অফিসার ১৫০০০ টাকা বেতনই পায়, তাকে ১৫০ টাকার মুরগী হত্যা রহস্য বের করার জন্য ১৫০০০০ টাকা খরচ করার সুযোগ দিলে তার মনের অবস্থা কী হতে পারে!সে কতটা সৎ থাকতে পারবে!??
আর কর্তা ব্যক্তিদের আণ্ডারে যারা তদন্ত করছে তাদের বেতন তো আরো কম ;
সুতরাং তারা খুজে পায় সহজ সমাধান ;
"নে তুই ও খা,আমিও খাই !!!"
এভাবেই তৈরি হচ্ছে নতুন সব উদাহরণ!!!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।