Click This Link
কুয়ালা লামপুর কড়চা
শহরটা অনেক সুন্দর। লোকজন বেশ শান্তিপ্রিয়। যে যার মতো কাজ করে যাচ্ছে। প্রচুর লোকজন হেঁটে চলাফেরা করে। প্রচুর মোটর সাইকেল দেখা যাবে শহরে।
সরকারি বাস চলে সকাল ৬ টা থেকে ১১/১২ টা অবদি। ভাড়া নেহায়েত কম। সব বাসই এসি। সামান্য কিছু নন এসি টেক্সি ছাড়া যতো পরিবহন দেখেছি- সবই এসি। আইনের প্রতি অনেক শ্রদ্ধাশীল এরা।
মধ্যরাতেও সবাইকে দেখেছি ট্রাফিক সিগনাল মেনে গাড়ি চালাতে। চায়নিজ, মালে এবং ভারতীয় (বিশেষ করে কেরালার) মানুষজনই বেশি। জিনিসপত্রের দাম বাংলাদেশের তুলনায় বেশি। তবে তরল পানীয় বেশ সস্তাতেই মিলে। যে যার মতো খাচ্ছে, টাল হচ্ছে- সচরাচর কেউ কারো কোনো সমস্যা করে না।
এ শহরের মেয়েদের (বেশিরভাগ) শরীরে পোশাকের চেয়ে গোশতের পরিমান বেশি !!!
তবে অবিশ্বাস্য একটা ব্যাপার আবিস্কার করলাম এখানে এসে। ৫ দিনে একটি বাস, মোটর সাইকেল বা টেক্সি ক্যাবের কোনো হর্ণ শুনিনি। আমার কেনো জানি ধারণা হয়েছে, এ শহরের কোনো গাড়িতে হর্ণ নেই। পরীক্ষা করার জন্য বেশ কয়েকবার আমি আর শান্তনু ইচ্ছে করে সিগনাল না মেনে রাস্তা পার হয়েছি- এই বুঝি গাড়ি হর্ণ বাজালো ! হায় কপাল, ড্রাইভার কষে ব্রেক করলো কিন্তু হর্ণ বাজালো না ! আরো একটি মজার ব্যাপার দেখলাম, প্রতিটি মোটর সাইকেল দিনের বেলাতে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাফেরা করছে। কেনো, কে জানে !
ওদের কাছে জানতে চেয়েও লাভ হয়নি।
তেনারা আবার নো ইংলিশ বলে দায়িত্ব এড়িয়ে যান। ট্রেন / বাস কাউন্টারে বসে ডিউটি করছে- অথচ ইংরেজি জানে না, এমন অনেকের দেখা পেয়েছি। অনেক টেক্সি ড্রাইভার আছে তাদেরও একই হাল ! যেখানে সারা বিশ্ব থেকে এত এত পর্যটক প্রতি দিন আসছে, সেখানের মানুষজনের ইংরেজি না জানা / কম জানার বিষয়টি আমাকে অবাক করেছে। এখানকার কিছু ইংরেজি বানানের নমুনা অদ্ভুত ! Bas (বাস), Ekspres (এক্সপ্রেস), Kaunter(কাউন্টার),Tiket (টিকেট), Taksi (টেক্সি), Farmasy(ফার্মেসি)।
এখানকার হোটেল ভাড়া ২৫ রিঙ্গিত থেকে ২০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত।
শহরের প্রান কেন্দ্রে যে সব হোটেল রয়েছে, তারমধ্যে- হোটেল আনকাসা, সুইস গার্ডেন, সুইস ইন, টাইম স্কয়ার, ফেডারেল হোটেল, হোটেল প্লাজা উল্লেখযোগ্য। খাবারের দোকানের মধ্যে রয়েছে- ম্যাগডোনাল্স, কেএফসি, হোটেল বিসমিল্লাহ, হোটেল ঘরোয়া (এ দুটি হোটেলের অবস্থান হচ্ছে কোতারাইয়া, বাঙ্গালী মার্কেট এলাকায়)। বিসমিল্লাহ আর ঘরোয়াতে আপনি দেশি প্রায় সব ধরণের খাবার পাবেন। নাস্তা খেতে লাগবে-২/৩ রিঙ্গিত। দুপুর বা রাতে খেতে লাগবে ৫ থেকে ৭ রিঙ্গিত।
মনে রাখবেন, ১ রিঙ্গিত সমান বাংলাদেশের ১৯ / ২০ টাকা। একশ ইউএস ডলারের বিনিময়ে আপনি পাবেন, স্থানীয় মুদ্রায় ৩৫০ / ৩৫৫ রিঙ্গিত। সুতরাং সবচেয়ে ভালো হয়, মালয়েশিয়া যেতে চাইলে ডলার না নিয়ে রিঙ্গিত নিয়ে যাওয়া।
কেনাকাটা করতে পারেন- চেইন শপ মানে আমাদের দেশের (ডিপার্ট) মেন্টাল স্টোরের মতো কোটা রায়া, মাই ডিন, পপুলার এ। এছাড়াও বিবি প্লাজা এবং সমগ্র শহর জুড়েই রয়েছে ছোট বড়ো হরেক কিসিমের দোকান।
ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী কিনতে চাইলে চলে যান প্লাজা ল এইট এ। এটির অবস্থান বিবি প্লাজার পাশেই। বিবি প্লাজা বেশ পরিচিত বাঙ্গালীদের কাছে। বিবি প্লাজার আশে পাশে অনেক দোকান আছে যেখানে আমাদের দেশি লোকেরা কাজ করে। আর বিখ্যাত চায়না টাউ তো রইলোই।
যা আমাদের গাউছিয়া মার্কেটের মতো। একই ছাদের নিচে সব পণ্য। ব্যাগ, জুতো, খেলনা, ঘড়ি, জামা-কাপড়, খাবারের দোকান। কেনার সময় শুধু আপনাকে প্রচুর দামাদামি করে কিনতে হবে।
ঘোরাঘুরির জন্য বেছে নিতে পারেন, টেক্সি ক্যাব, বাস বা ট্রেন।
আপনার হোটেল থেকে গাইড ম্যাপ বা লোকেশন ম্যাপ চেয়ে নিন। আগের দিন রাতে শোবার আগে ম্যাপে একটু চোখ বুলিয়ে নিন। সিদ্ধান্ত নিন কোথায় যাবেন- গ্যাংটিন হাইল্যান্ড ? পুত্রাজায়া ? পেনাং জজ টাউন ? কেএল এয়ারপোর্ট ? কেএল সেন্ট্রাল ? টু-ইন টাওয়ার, না অন্য কোথাও ?
হোটেলের লোকজনের কাছ থেকে সাহায্য নিতে পারেন, যদি ওরা আপনার কথা বোঝে ! এরপর সকাল ৯/১০ টার মধ্যে আল্লার নামে বেরিয়ে পড়–ন আপনার গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। উঠে পড়–ন সুবিধাজনক পরিবহনে। যা নিতে ভুলবেন না : ছোট ব্যাগে করে হাল্কা কিছু খাবার, পানির বোতল, যে কোনো ফলের জুশ, ক্যাপ, সানগ্লাস এবং অবশ্যই ক্যামেরা।
সাথে হোটেলের কার্ডটাও রাখা ভালো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।