পরাজিত ============= শূণ্য ===============
আমার দোলনায় আমি ছাড়া আর কেঊ দুলবে না কোনদিন। মাটির গয়না এমনেই পরে থাকল প্লাস্টিকের প্যাকেটে, আলো দেখল বটে- ঘোলাটে; যেখানে কোনকিছুই ঠিক ভাবে ঠাহর করা যায় না, আবছা। আবছা আলো ছায়া ভালোবাসা ধূলার স্তরের অন্ধকারে হারিয়ে গেল ফিকে হতে হতে অবশেষে। দোলনাটা দুলতেই থাকল সাথে নিয়ে অনেক কাল আগের ভালোবাসার কথা যখন ভালোবাসায় অনুভূতি ছিল, প্রেম ছিল।
তুই নেই বলে পাতাগুলো সব ফাকা
তুই নেই বলে মন শুধু করে খা খা।
তুই নেই বলে একলা শালিক ডাকে
তুই নেই বলে মধু নেই মৌচাকে,
তুই নেই তাই মেঘ কাঁদে হয় জল
============== এক ===============
শখ করে কেনা সস্তার টিকলি টা তার কপালে আর পরানো গেল না, ঐ যে ঐ কোণার শেলফে পেপার মোড়া অবস্থাতেই পরে আছে। চেয়েছিলাম মোড়ক টা খুলে সে অবাক হোক। আমার অবাক হবার পালা, যতবারই ঐদিকে তাকাই তার অবাক হওয়া চেহারা টা কল্পনা করি। আমি অবাক হই, কল্পনা না করে বাস্তবেই তো দেখতে পাওয়ার কথা ছিল। উফফ ভালোবাসার কঙ্কাল।
গাছের পাতা আলো ছায়ার তালে তালে
গল্প শোনায় ঘাস ফুলেদের কানে কানে।
তারার মেলা রাত্রি জেগে গল্প করে
খোপায় মেঠো স্বপ্ন বুনে একলা চলে।
খয়েরী সবুজ নীলচে হলুদ কমলা কালো
কেমন করে বলছে কথা বাসছে ভালো?
============= দুই ===============
একদিন মেলায় গিয়ে এক জোড়া কানের দুলের একটা কিনে এনেছিলাম। দোকানি অবাক হয়েছিল বলেছিলাম যাকে পড়াবো তাকে নিয়ে এসে বাকি টা নিয়ে যাবো। ভেবেছিলাম একটা কানের দুলের লোভ দেখিয়ে নানা জায়গায় খোঁজার ছুতায় জায়গা গুলো ঘুরে দেখবো।
আমি আজ ঘরকুণো।
আকাশ তোমার সময় হলে, একটু থেমো
আমার কিছু প্রশ্নের, জবাব দিয়ে যেয়ো
আর কতকাল থাকবো বসে, তার আশায়
এভাবেই যে আমার, দিন কেটে যায়
কেটে যায়
দিন কেটে যায়
=============== তিন ==============
নীল চুড়ি কিনেছিলাম এক বেদেনীর কাছ থেকে, সুতো দিয়ে বাধা ছিল দুই মুঠো চুড়ি। সেগুলো এখনো সুতো দিয়েই বাধা আছে তবে নানা দৈর্ঘ্যে। আমি এগুলো দিয়ে উইন্ড চাইম বানিয়েছি। আমার ঘরে কোন বারান্দা নেই, বিশাল বড় একটা জানালা আছে।
আলো আর বাতাসের বিশাল সখ্য। রাতের আঁধারে চুড়ি গুলো যখন একটার সাথে আরেকটা বাড়ি খেয়ে রিণি রিণি শব্দ করে, তখন আমি ভুলে যাই দরজার চৌকাঠ ধরে সে দাঁড়িয়ে নেই, দাঁড়িয়ে থাকার কথা না।
চাঁদনি গেছে দূরের আঙিনায়
কার ঘরে চাঁদ জেগে রয়,
নাম শুধু নাম জ্বলে অবিরাম
এইখানে আমিও ছিলাম,
বলেছ বারণ বলেছ বিদায়
স্বপ্ন বাড়ায় তবু হাত ডাকে আয়!
============= চার ===============
আইসক্রিম আর চকোলেট তার খুব পছন্দ । এখনো দুই টা আইসক্রিম অর্ডার করে ফেলি, পাশে তাকানোর পর মনে পরে আরেকটা খাওয়ার জন্য কেউ এখানে নেই, ছিলো না কখনো। এক্সপায়ারড চকলেট এর বক্সে আমার বুক শেলফ ভরা।
নিয়ম করে ফেলে দেই, আর চকোলেট খাওয়া হয় না আমার।
বেদনা সিক্ত অশান্ত এই মন
খুঁজে ফেরে মেটায় প্রয়োজন
যতদূর জানে ব্যাকুল হৃদয়
নীল বিষের পেয়ালা মনের বাঁধন।
============= পাঁচ ================
তাকে শুনাবো বলে কয়েকটা কবিতা মুখস্থ করেছিলাম, লিখতে পারি না তাতে কি হয়েছে ? বলতে তো পারি। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হইল সে কবিতা পছন্দ করে আর আমি তারে কিছু একটা শুনাতে চেয়েছিলাম। এখনো কবিতা গুলো মাথায় আছে তবে ঊচ্চারণ করা আর হয়ে উঠে নাই।
পলাতক আমি কোথা চলে যাই, আঁধারের এগান শুনে
জোনাকীর আলো নিভে আর জ্বলে শালমহুয়ার বনে।
কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে রাতের নির্জনে
============== ছয় ===============
তার বৃষ্টি খুব ভালো লাগে বলেই জানি। যদিও সে জানত না কিভাবে ভিজতে হয়, আমি তাকে কথা দিয়েছিলাম আমি তাকে শিখিয়ে দিবো এবং এরপর থেকেই আমি বৃষ্টিতে ভিজা বন্ধ করে দিলাম, যদি কোনক্রমে ভিজার আনন্দে অস্থির আমি হারিয়ে যাই তাহলে তাকে দেয়া আমার কথার কি হবে? আজো আকাশে মেঘ করে, মেঘ ঝরে বৃষ্টি হয় আর আমি ঘরের ভেতর ছাতার আড়ালে লুকাই, ভুল ক্রমেও যদি এক ফোঁটা গায়ে লাগে আমি তাকে ছাড়াই ভিজতে চলে যাব।
এখন আমি জানি বৃষ্টিতে একাই ভিজতে হয়।
কতদিন বৃষ্টি দেখি না,
তোমায় নিয়ে এলোমেলো শব্দ সাজাই না
কতদিন বৃষ্টি ঝড়ে না
কতদিন কারো চুল ভিজে না।
============ সাত ===============
কতরাত একসাথে ভোর হওয়া দেখেছি, সূর্যটাকে একসাথে ছোঁয়ার চেষ্টা করেছি। যদিও সে ছুঁয়েছে চাঁদ।
চিলতে রোদে পাখনা ডোবায়
মুচকী হাসে শহরতলী
রোজ সকালে পড়ছে মনে
এই কথাটা কেমনে বলি?
============= আট ===============
কোন এক দূরদ্বীপবাসিনীর নিষ্পাপ চোখের চাহনি তে আটকা পড়ে ভ্রমময় আমি, মেঘকালো চুলের ঘনঘোর অমানিশা, চম্পক ঠোঁটের কুহক বাণী, বিভ্রম- সময়হীন বিভ্রম। আমি হারিয়ে যাই, আমি হৃত থাকতে চাই। আমি নিখোঁজ, অনুপস্থিত।
আমার বাস্তবে ফেরার কোন ইচ্ছা নাই, এই বেশ ভালো আছি, ভালো থাকতে চাই।
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়, হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে
হৃদয় গভীরে অবাক দৃষ্টিতে থমকে দাড়িয়েছে মহাকাল এখানে ।
শুভ্র বালুর সৈকতে, এলোমেলো বাতাসে গিটার হাতে
নিস্তব্ধতা চৌচির, উন্মাদ ঝংকারে কাঁদি অবাক সুখের কান্না
যেন চুনি হিরা পান্না
সাগরের বুকে আলপনা এঁকে দিয়ে যায়
অবাক ভালোবাসায়, অবাক ভালোবাসায় । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।