আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছাত্রলীগঃ এক আতঙ্কের নাম

মিথ্যাকে বর্জন করি সত্যকে আঁকড়ে ধরি ছাত্রলীগ শুধু অন্যের উপরই অস্ত্রের ধার বা কার্যকারীতা পরীক্ষা করে না বরং তা তাদের নিজেদের উপরও এর কার্যকারীতা পরীক্ষা করতে কুন্ঠাবোধ করে না। তাদের ইচ্ছা হলেই যে কারো উপরই সেই অস্ত্রের কার্যকারীতা পরীক্ষা করতে লেগে যায়। গ্রামাঞ্চলে আমরা কুকুরের সাথে কুকুরের দুষ্টমি দেখেছি। দু’টি কুকুর প্রথমে দুষ্টমি শুরু করে, কিন্তু এক পর্যায়ে এই দুষ্টমি আর দুষ্টমি থাকে না বরং সেটা পরিণত হয় রক্তারক্তিতে, ছাত্রলীগের ক্ষেত্রেও এর ব্যাতিক্রম ঘটে না। আওয়ামীলীগ সরকার ডিজিটাল পদ্ধতিতে মতায় আসার পর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অস্থির হয়ে ইঠেছে।

বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, রংপুর কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, অত্যতম। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলিতে তারা শুধু অস্থিরতা সৃষ্টি করেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা হত্যা করেছে প্রতিপরে ছাত্রসংগঠনের অনেক ছাত্রকেও। শুধু তাই নয় সাধারণ ছাত্রসহ তাদের সংগঠনের নেতা কর্মীদের হত্যা করতেও তাদের হাত কাঁপেনি। সর্বশেষ তাদের এই নির্মমতার শিকার হল চট্রগ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র মুসুদ বিন হাবিব ও মুজাহিদুল ইসলাম। তাদের অপরাধ তারা শিবির করতো ।

শিবির করার অপরাধে(!) ছাত্রলীগ এই মেধাবী ছাত্র দুজনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে। প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করার দৃশ্য আমরা মিডিয়ার কল্যানে দেখতে পেয়েছি। যেই অস্ত্রের মহড়ার দৃশ্য কোটি কোটি মানুষ দেখলো কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে সেই দৃশ্য বর্তমান সরকারের পুলিশ জাতি দেখতে পেল না। উল্টো শিবিরেরই আরও কয়েকজন নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করা হলো। মজার বিষয় হলো ছাত্রলীগ শুধু মাসুদ আর মুজিদকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি তারা সেই লাশেকে ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে চালিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করেছে।

মিডিয়ায় যখন এই বিষয়টা ফলাও করে প্রচার করা হয় তখন ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের সেই দৃশ্য চোখের সামনে ভেসে উঠে । আওয়ামীলীগের গুন্ডা কাহিনী জামায়াতে-শিবিরের নেতা-কর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর তারা আবার সেই লাশকে নিজেদের কর্মী হিসেবে প্রমান করানোর জন্য একজন ব্যক্তিকে টাকা দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিহত ব্যক্তির পিতা সাজিয়ে মিডিয়ার সামনে নিয়ে এসেছিল । পরে অবশ্য মিডিয়ার কল্যানে তাদের সকল অপকর্ম ফাঁস হয়ে যায়। ২০০৬ সালের ২৮ আক্টোবরের ঘটনার সাথে ২০১২ সালেরর ৮ ফেব্র“য়ারীর ঘটনা মিলালে মনে হয় যে, সত্যিই যোগ্য পিতার (আওয়ামীলীগ) সুযোগ্য সন্তানই (ছাত্রলীগ) বটে। মিথ্যা কথা বলাতে, লাশের রাজনীতি করাতে কেউই কারো চেয়ে কম নয়, এ যেন সমান সমান।

আক্ষেপের বিষয় হল বর্তমান সরকারের ৩৭ মাসে যে ২১ জন ছাত্র খুন হয়েছেন তার একটির বিচারও এখন পর্যন্ত শুরু হয়নি এমনকি কোন হত্যাকান্ডের চুড়ান্ত তদন্ত রিপোর্টও জমা দিতে সম হয়নি। যে হত্যাকান্ড নিয়ে সরকারের স্বরাষ্টমন্ত্রী ভাই বলে সম্বোধন করে জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে চিরুনী অভিযান ঘোষনা করেন সেই ফারুক হত্যারও এ পর্যন্ত তদন্ত কাজ শেষ করতে পারেনি। এ থেকে কি এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেনা যে ফারুককে তারা নিজেরাই খুন করে তার দায়ভার জামায়াত-শিবিরের উপর চাপাতে চাচ্ছে? তদন্ত করলে যেহেতু জনসম্মুখে সেই বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে যাবে তাই সেটা আর ভালভাবে তদন্ত না করে বিনা বিচারে জামায়াত শিবিরের নেতা কর্মীদেরকে মাসের পর মাস বছরের পর বছর জেলখানায় বন্দি করে রাখা হচ্ছে। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে এটাও বলা যায় যে বাংলাদেশে প্রতিহিংসার রাজনীতির জন্মদাতা হলো আওয়ামীলীগ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আজ কেউই ছাত্রলীগের খপ্পরের বাইরে নয়।

ভিসি থেকে শুরু করে একজন সাধারণ কর্মচারী পর্যন্ত তাদের নির্যাতনের শিকার । চাঁদা দিতে দিতে অতিষ্ট হয়ে ব্যবসা বন্ধের উপক্রম হয়েছে অনেক ছোট ব্যবসায়ীর। ডাইনিং এ খাবার খেতে গেলে সেখানেও ছাত্রলীগের কর্মকান্ডে অতিষ্ট হতে হয় সাধারণ ছাত্রদের। ছাত্রলীগের শেন্য দৃষ্টি আজ ছাত্রী বোনদের উপরও । এপর্যন্ত অসংখ্যা ছাত্রী তাদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ।

হোস্টেলে সীট পেতে গেলে ছাত্রীলীগের কু প্রস্তাবে সারা না দিয়ে উপায় নেই। এক কথায় সকল ছাত্র-ছাত্রীই আজ ছাত্রলীগের কালো থাবার মধ্যেই অতি কষ্টে সময় অতিবাহিত করছেন । এত কিছু দেখার পরও আমাদের মন্ত্রী এমপিরা এব্যাপারে কোন পদপে নিতে সম্পূর্ন ব্যর্থ হয়েছেন। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আজ আতঙ্কের আর এক নাম হয়ে দাড়িয়েছে ছাত্রলীগ। ছাত্ররা এখন একটা পাগলা কুকুরের চেয়েও বেশি ভয় করে ছাত্রলীগকে ।

ছাত্রলীগকে এখন মানুষ জঙ্গীদের চেয়েও বেশী ভয় করে । জঙ্গী আবির্ভাবের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে যতজন ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে তার চেয়ে কয়েকগুন বেশি হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে শুধু এই সরকারের মাত্র ৩৭ মাসেই। তাই এটা নির্দিধায় বলা যায় যে জঙ্গীদের চেয়েও বেশি ভয়ঙ্কর বর্তমানের ছাত্রলীগ। এখনই যদি ছাত্রলীগের কর্মকান্ডকে নিষিদ্ধ করা না যায় তাহলে দেশের মানুষের ভাগ্যে খারাবীই আছে। খুন , গুম, ধর্ষন এর আর এক নাম ছাত্রলীগ।

কয়েকদিন আগেও মিডিয়ার বদৌলতে আমরা লজ্জার সাথেই খেলাম বিভাবে ছাত্রলীগের এক সভাপতি ও সেক্রেটারী মিলে একজন নর্তকীকে ধর্ষন করলো । প্রধানমন্ত্রীর যদি একটু লজ্জাও থাকতো তাহলে নারী হাওয়ার কারনে ন্যুনতম এই ঘটনার বিচার করতো । মিডিয়ায় এমনভাবে প্রচার হাওয়ার পরেও এর কোন প্রতিক্রিয়া আমরা বর্তমান সরকারের প থেকে দেখলাম না। (চলবে) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।