আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামাতিরা একজন খোমেনী পয়দা করছে--মনে রাখা উচিত এটা ইরান নয় -বাংলাদেশে ইরানী বিপ্লবের বীজ গজাবে না!

দেখে শুনে মনে হচ্ছে জামাত বাংলাদেশে একজন খোমেনিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চলেছে। ইনি বরং খোমেনির চেয়ে কয়েকধাপ উপরে। কিছু হলেই দেশ অচল, সরকার ফেলে দেয়া, সব কিছু জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেবার মত মাস্তানী ঢং এ কথা বলছেন। এসব কি শান্তির ধর্ম ইসলামের মেজাজ? হঠাত গজীয়ে ওঠা একটি দলের এতো সাহস কোত্থেকে আসে? ৩১৩ জনের শহীদী স্কোয়াডে কে কে নাম লিখিয়েছে? কথায় কথায় শহীদ হয়ে যাওয়া--স্বধর্মের লোকেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে কেউ শহীদ হয়? অনেক প্রশ্ন। সব কিছুর মূলে অবশ্যই জামাতিরা।

হেফাজতে ইসলামের এক সংবাদ সম্মেলনে জামাত শিবিরের বেশ কয়েকজন সাবেক নেতাকে চিহ্নিত করা গেছে ইতোমধ্যেই। বাংলাদেশে একজন খোমেনি প্রতিষ্ঠিত হলে তারপর তারা ইরানী ধারায় একটি ইসলামী বিপ্লবের দিকে এগুবার চিন্তা করছে বলেই মনে হয়। তাদের জনভিত্তির দরকার আছে বলে মনে হয় না। এই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় তারা ক্ষমতায় যাবে বাংলাদেশে এটা তাদের জন্য দুঃস্বপ্ন--এটাও বুঝে গেছে। বুঝে গেছে বিএনপির মত দলের সাথে থেকে দুইটা মন্ত্রীত্ব দিয়ে তাদের ইসলামী বিপ্লবও সম্ভব হবে না।

তাই তারা এখন চাইবে মাদ্রাসগুলোর ছাত্র এবং আলেম সমাজকে নিয়েই জিহাদী জোসে একটি বিপ্লব সাধন করতে এবং তারই টেস্ট কেস হিসেবে ৬ তারিখে তারা সকল শক্তি নিয়োগ করে একটা ভিতীর সঞ্চার করবে। যে যত কথাই বলুক--জামাতের সাথে ফেফাজতের সম্পৃক্ততা দিবালোকের মত ষ্পষ্ট। লংমার্চ এর জন্য লোক সংগ্রহের কাজে মরিয়া এখন জামাত। মজার ব্যাপার! সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আর পেশাজীবি সহ আরো অনেকগুলো দল এই লংমার্চ প্রতিহতের ডাক দেয়ায় এখন তারা লং মার্চ থেকে সম্ভবত সরে গেছে বা যাবে কিন্তু লাগাতার হরতালের যে ঘোষণা দিয়েছে দেশ অচল করার তা সত্যিকারের কোন মুসলমানের পক্ষে সম্ভব নয়। ভন্ড, ধর্মান্ধ, ক্ষমতালিপ্সুর পক্ষেই কেবল সম্ভব।

জামাতিরা জানে অতি শীঘ্রই দলটি নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে তাই তারা সমবেত বা বিচ্ছিন্ন ভাবে বিভিন্ন ইসলামিক দলের সাথে মিশে যাবে অঢেল অর্থের জোগান তো তাদের হাতেই আছে। তারপর এইসব দলগুলোর মোর্চা বানাবে এবং জোর করেই ক্ষমতা ছিনিয়ে নেবে। সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে দেশের এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে তারা তাদের পছন্দমত মানুষ রাখে নি। যেহেতু ভোটের রাজনীতিতে তারা আসতে পারবেনা--অতএব এটাই হবে তাদের পথ। এই পথে যদি বাংলাদেশ এগোয় তাহলেই হয়েছে! দেশ এক কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন এখন।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্দিপীত তরুণ সমাজই আর স্বাধীনতার পক্ষের মানুষগুলোই একমাত্র ভরসা। সরকারের উপর নির্ভর করা কঠিন--তারা ঠ্যালায় ধাক্কায় হেলে দুলে পথ মত সব বদলে লেজে গোবরে করে ফেলে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক বাহক সরকার এখন ধর্মপ্রীতি এবং ধর্মান্ধদের সাথে সমঝোতার পথেই এগুচ্ছে বলে মনে হয়। মুক্তমনা ব্লগারদের একে একে বন্দী করে রিমান্ডে নিচ্ছে যা বাইরে দেশের ভাবমূর্তীকে ইতোমধ্যেই মারাত্মক ভাবে প্রশবিদ্ধ করেছে। যত তাড়াতাড়ি স্বাধীনতার নেতৃত্ব দানকারী সরকার তাদের ভ্রান্ত নীতি থেকে সরে এসে মানুষের কাতারে দাড়াবেঁ ততোই তাদের মঙ্গল।

ব্লগারদের ক্রাইম নিরূপনের জন্য কমিটি করা হয়েছে। সেই কমিটিতে আছে কজন পুলিশ আর দুই জন আলেম----এখানে ব্লগারের প্রতিনিধিরা কই? সব ব্লগারই কি ধর্মের বিরুদ্ধে অবমাননাকর কিছু লেখে? কোন ধর্মই এতো ঠুনকো নয় যে কিছু লিখলেই ধর্ম মরমরিয়ে ভেঙ্গে যাবে। ইসলাম ধর্মের নবী (দঃ) কে বহুবার অপমান করা হয়েছে। কই? তিনি তো কারো উপরে রাগ করেন নি। শোনা যায় এক নারী বস্তা টানতে পারছিলেন না।

নবী (দঃ) সেই বস্তা মাথায় করে তাকে সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছিলেন --পাশাপাশি হেঁটে আসার সময় ওই নারী তাঁকে তার উচ্চারণে মুহম্মদ, এবং মুহম্মদের (দঃ) এর নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালাগালি দিচ্ছিল। তিনি নিঃশব্দে সব শুনে যখন গন্তব্যে পৌঁছালেন তখন ওই নারীর সঙ্গী সাথে সাথেই মুহাম্মদ (দঃ) কে চিনতে পেরে বলে--'এ তুমি কাকে সাথে নিয়ে এসেছো এতো তো সেই জঘন্য মুহাম্মদ। ' তখন নারীটি বলে--এই যদি হয় মুহাম্মদ--আমি তাঁকে পছন্দ করলাম। এধরণের আরো বহু ঘটনা আছে। আমরা তাঁর পথে কাঁটা ছিটানো বুড়ির গল্প জানি।

তিনি বুড়ির জীভ টেনে ছিঁড়ে ফেলেন নি বরং অসুস্থতায় সেবা দিয়েছিলেন। এই যে ধর্ম গেল! ধর্ম গেল! এই কাজটিই করা হয়েছিল ৭১ এ। ইসলাম হেফাজতের এরকম কমিটি হয়েছিল মসজিদে মসজিদে, ওদেরই রক্ষা হয় নি। এসব হচ্ছে ইসলামের নামধারী প্রতিক্রিয়াশীল, ক্ষমতালোভী, মৌ-লোভীদের কাজ। আল্লাহর ধর্ম এতো ঠুনকো নয় যে তাকে রক্ষা করতে জামাত বা হেফাজতে ইসলাম কে মাঠে নামতে হবে।

আল্লাহ কি এই ঠিকাদারী একমাত্র বাংলাদেশের ফেফাজতে ইসলাম কে দিয়েছেন? পৃথিবীতে আর দেশ নেই? আর কাউকেই আল্লাহর পছন্দ হল না? --মনে পড়ে সুরা আলফীলের কথা। আবাবীল পাখীদের কথা। স্বয়ং আল্লাহ কিভাবে তাঁর কাবাঘর রক্ষা করেছিলেন সেই বিশাল হাতী বাহিনীর বুরুদ্ধে। কই? তিনি তো তখনো কাউকে এই ঘর হেফাজতের দায়িত্ব দেন নি। একটা কম শিক্ষিত মানুষের দেশে চলছে ধর্মের নামে অপব্যাখ্যা আর ক্ষমতারোহনের খায়েশের কচকচানি।

যারা ব্লগ কি জিনিশ তাই জানেনা তাদের নিয়ে ব্লগারদের নাস্তিক মুরতাদ বানিয়ে আন্দোলন করছে এরা। মহান আল্লাহ বলেছেন ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করো তার মানে এই নয় যে তিনি বলেছেন ক্ষমতা নিয়ে টানাটানি করো। নিজে শুদ্ধ মুসলমান হও আগে, পড়শিকেও সাহায্য করো। সবাইকে দীনের দাওয়াত দাও --তাহলেই দ্বীন প্রতিষ্ঠা পাবে। ধর্মের প্রতীষ্ঠা মানুষের মনে, গভীর বিশ্বাসে, কোন সিংহাসনে নয়।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.