কোথাও আমার হারিয়ে যাবার নেই মানা কাল মাঝ রাতে আমার কোন কারন ছাড়াই ঘুম ভেংগে গেল। অদ্ভুত দুইটা জিনিস আমার মাথায় ঘুরতে লাগল। এক আমার সবচেয়ে প্রিয় ছোট গল্প দুই আমার পড়া শ্রেষ্ট উপন্যাস।
ছোট গল্প এবং উপন্যাস এর প্রতি সবসময় একটা আকর্ষন। প্রতিটি গল্প এবং উপন্যাস পড়ার সময় চরিত্র গুলোকে খূব সুক্ষ্ভাবে দেখতাম।
নিজের জীবনের সাথে মিলানোর চেষ্টা করতাম। প্রতি ক্লাসের পাঠ্য বই পাওয়ার সাথে সাথে প্রথম কাজ হল সব গল্প একবারেই পড়ে ফেলা। আগ্রহ নিয়ে কতবার `ছুটি` গল্পটা পড়ছি তার কোন হিসাব নেই। ছুটি গল্পটা পড়তাম আর ভাবতাম আমি ও মনে হয় ফটিক এর মত হয়ে যাব। অথচ তখন ও আমি কোনদিন ভাবি নাই আমার পড়াশোনার জন্য মামার বাড়ি যাব।
মামার বাড়ি গেলে ও আমার বড় মামী এর মত কোন মামী হতে পারে না। ফটিক এর মামী আর আমার বড় মামী এর মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য। আমার বড় মামী আমাকে অনেক অনেক আদর করে।
কিন্তু এস, এস,সি পর সবকিছু যেন খুব দ্রুত বদলাতে লাগল। আম্মুকে বললাম আমি আর গ্রামে পড়াশোনা করবো না।
আমি ঢাকা চলে যাব আমার মেজ মামার সাথে। মামার বাসায় থেকে পড়ালেখা করব। ফটিক এর মত আমার মেজ মামার হাত ধরে ঢাকাই আমার প্দার্পন আর শুরু হল আমার ফটিক জীবন আর রবীন্দ্রনাথ হয়ে গেল আমার ঘুমানোর সংগী। আমি ভেবে খুব অবাক হয়ে যেতাম, রবীন্দ্রনাথ কিভাবে এত বছর পূর্বে আমার জীবনের চিত্রলিপি লিখে গেছে। রবীন্দ্রনাথকে তো আমার মত মামার বাড়ীতে গিয়ে পড়াশোনা করতে হয় নাই।
বড় বড় লেখকরা মনে হয় এইরকমই হই। বুঝতে শুরু করলাম মা এবং মামীর মধ্যে পার্থক্য, মামা এবং মামীর মধ্যে ব্যবধান। নীরব অবহেলা কিভাবে নীরবে সহে যেতে হয়, তাই শিখতেছিলাম মন প্রাণ দিয়ে। ফটিককে আমার বড়ই আপন মনে হতে লাগল। প্রায় সময় মনে হত আমি ও কি ফটিক এর মত হারিয়ে যাব কালের গহ্বরে?
আমাদের কলেজের বিশাল লাইব্রেরীতে উপন্যাসের ভান্ডার।
মোটামোটি সব বিখ্যাত লেখকের ছোট গল্প এবং উপন্যাস পড়া হয়ে গেছে। বাকী ছিল কিছু উপন্যাস যেগুলোর লেখকের নাম আমি জানতাম না। তেমনি একটা উপন্যাস একদিন বাসায় নিয়ে পড়া শুরু করলাম। পৃষ্টার পর পৃষ্টা পড়ে যাছ্ছি আর মনে হছ্ছিল এই লেখক মনে হয় আমাদের পরিবারকে দেখে এই উপন্যাস লিখতে বসছে। এই উপন্যাস এর প্রতিটি চরিত্র মনে হয়েছে আমার খুব আপন।
একটি যৈথ মধ্যবিত্ত পরিবারের কাহিনী এত সুন্দর করে কেউ ফুটিয়ে তুলতে পারে, আমি না পড়লে কখনোই বিশ্বাস করতাম না। এখন পর্যন্ত মনোয়ারা নজমুলের "আজো কাদেঁ ডাহুকী" উপন্যাসটা আমার প্রিয় উপন্যাস। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।