এডিট করুন
আজকে পরীক্ষা মাসের শেষ দিন ছিল। পাচটা পরীক্ষার মধ্যে চারটা শেষ। মোটামুটি রেজাল্ট। আরো একটা পরীক্ষা বাকী আছে। সেপ্টেম্বরে দিতে হবে।
সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি। জুলাই, আগষ্ট টানা দুই মাস মুক্ত। ক্লাস, প্রাকটিক্যাল, এক্সারসাইজের চাপে দমবন্ধ অবস্থা থেকে অন্তত দুই মাস মুক্তি। এরপর আবার সেই নরক যন্ত্রণা। যাই হোক এত কিছু ভেবে লাভ নেই।
সামনে মিঠাই খাওয়া শুরু কর। আজকে ফান্ডামেন্টাল থিওরী অফ সার্কিটস পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে হোষ্টেলে গেলাম। হোষ্টেলের নেটের লাইন গতকাল থেকে নেই। এখনও পর্যন্ত আসেনি ।
সার্ভার ডাউন খাইছে মনে হয়। কি আর করা, ব্লগে না আসলে পেটের ভাত হজম হয় না। তাই ল্যাপি নিয়া দৌড়াইলাম ফ্রী ওয়াই-ফাই এর খোজে। আপাতত একটা খোলা জায়গায় বসে আছি। চারপাশে খাবারের দোকান।
এক পয়সারও কিছু কিনি নাই। পকেটে কিছু পয়সা ছাড়া আর কিছু নাই। দেশে যাব বলে ঠিক করছি। দুই বছর ধরে এই বিজাতীয় জায়গায় পড়ে আছি। ভার্সিটিতে আমি একা বাঙ্গালী।
ইন্ডিয়ান আছে কয়েকটা কিন্তু বেশী মেশা হয় না। বাংলাদেশীরা অনেকেই হিন্দিতে কথা বলতে পারলেও আমি আজও হিন্দি বুঝি না। আমার সাথে শ্রী'র (ইন্ডিয়ান) প্রথম পরিচয়ের দিনে হিন্দি জানি কিনা জিজ্ঞাসা করেছিল। ইংরেজীতে বেশীক্ষণ আলাপ করে ওরা আমার সাথে শান্তি পায় না। তাই কি আর করা।
আমরা তিনজন একসাথে ছিলাম প্রথম বছর রাশিয়ান ভাষা শিক্ষার কোর্সের সময়। পরের বছর যার যার ডিসিপ্লিন অনুযায়ী একেকজনকে একেক ভার্সিটিতে পাঠিয়ে দেয়। তবে এক শহরেই আছি এই যা ভরসা। তবুও দেখা হয় না। সবসময় চাপের মুখে থাকি।
এখন কিছুটা স্বস্তি। দেখতে দেখতে ফার্ষ্ট কোর্স শেষ করে ফেললাম। আরো চার বছর কাটাতে হবে। ঠিক করছি এই ছুটিতে দেশে যাব। বহুদিন রাস্তাঘাটে, দোকানে বাংলায় কথা বলি না।
কাচাবাজারে মায়ের সাথে সাথে বাজারের ব্যাগ বহন করি না বহু দিন। বহুদিন হল মাকে জড়িয়ে ধরি না। বাবার সাথে তর্ক করে ধমক আর গুতেনবার্গের চাচাতো ভাই বলে গালি খাই না বহুদিন। বাংলা ভাষার মধ্যে বাস করি না বহু দিন। ধ্যাত, খালি নাই নাই করছি।
মানুষ ভাত পায় না আর আমি খাইয়া আরো চাই। নিজেই নিজেকে ধিক্কার দেই। দেখি কি হয়। আপাতত বাসায় মেসেজ দিতে হবে। দেশে গেলে তাড়াতাড়ি ব্যাবস্থা করতে হবে আর নয়তো নাই।
মা বেশী পাগল হয়ে গেছে। বলে এইবার তুই না আসলে আমিই রওয়ানা দেব রাশিয়ায়। আমি বলি, ঠিক আছে, কিন্তু আমার হোষ্টেলের ঠিকানা কই পাবা? বলে, মা এমনিতেই বাচ্চারে খুজে বের করতে পারে, ঠিকানা লাগে না। আসলে আমার মায়ের কাছে যাওয়া দরকার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।