অবিনশ্বর প্রেমের জন্য প্রার্থনা দৃশ্য ১:
মঞ্চের একপাশ বারান্দার মতো করে সাজানো থাকবে। সেখানে একটি ছেলেকে মোবাইল হাতে নিয়ে ব্যস্ত ভঙ্গিতে ফোনরত অবস্থায় দেখা যাবে। মঞ্চের আরেকপাশে একটি মেয়েকে আয়েশিভাবে সোফায় বসে থাকতে দেখা যাবে। আলো কম থাকবে। গভীর রাতের একটি দৃশ্য।
ছেলেঃ হ্যালো জান !
মেয়েঃ এতক্ষনে মনে পড়লো আমায়?
ছেলেঃ সরি সরি। আমি আসলে......
মেয়েঃ আমি তোমাকে কতোবার ফোন দিয়েছি?
ছেলেঃ ১ বার, কিন্তু আমি.........
মেয়েঃ কিসের কিন্তু? আমি ফোন দিলে তোমার বুঝি খুব বিরক্ত লাগে? যাও, আর দিবো না ফোন। আমি রাখলাম......
ছেলেঃ না না, আমি আসলে টয়লেটে ছিলাম......
মেয়েঃ হায় হায়, সত্যি ?
ছেলেঃ হ্যাঁ সত্যি?
মেয়েঃ টয়লেটে কোনও সমস্যা হয়নি তো?
ছেলেঃ আরে কিসের সমস্যা?
মেয়েঃ কি ব্যাপার? তুমি আমাকে ধমক দাও কেন? তোমাকে আমি কতো ভালোবাসি, আর তুমি?
(কান্নার শব্দ পাওয়া যাবে। তবে মঞ্চের মেয়ের চোখ দিয়ে কোন পানি বের হতে দেখা যাবে না)
ছেলেঃ আরে আমার টিয়াপাখি কাঁদেনা প্লিজ। তুমি কাঁদলে আমার যে কষ্ট লাগে?
(কান্নার শব্দ থেমে যাবে।
তার বদলে মেয়ের পাশ থেকে গুনগুন গানের শব্দ পাওয়া যাবে। একটু আগের কান্নার কথা মেয়েটি বেমালুম ভুলে যাবে। ৩ মিনিট এভাবে চলবে। ছেলে ক্রমশ অধৈর্য হতে থাকবে। )
মেয়েঃ এই বলনা, আমি কেমন গান গাই?
ছেলেঃ ভালোই তো গাও।
মেয়েঃ শুধু ভালো? যাও, তোমার সাথে আড়ি, আর গান শোনাবো না। কথাও বলবো না।
(গান গাইবে না শুনে ছেলেটি খুশি হলেও কথা বলবেনা শুনে একটু শঙ্কিত হয়ে উঠলো)
ছেলেঃ আহা, এমন করেনা যাদু (!!!) আমার। তোমার মিষ্টি কণ্ঠ না শুনলে আমি ঘুমাব কিভাবে?
(মেয়েটি মনে মনে আকাসে উড়তে থাকবে একথা শোনার পর)
মেয়েঃ আচ্ছা আজকে তুমি একবারও বললেনা আমি রাতে খেয়েছি কিনা?
ছেলেঃ একদম...............
মেয়েঃ তুমি আমার একটুও খোঁজ নাও না
(মেয়ের গলায় কৃত্তিম অভিমানের ভাব সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে)
ছেলেঃ সরি সরি সরি...............
(মেয়ের ফোন আসবে আরেকটি, তাই মেয়েটি ছেলেটিকে অপেক্ষায় রেখে ফোনটি গ্রহন করবে...... ৭ মিনিট ৩৩ সেকেন্ড পর)
ছেলেঃ কি ব্যাপার, কে ফোন করেছে?
মেয়েঃ কি আশ্চর্য ! আমাকে কেউ ফোন করতে পারবেনা নাকি?
ছেলেঃ না মানে ......
মেয়েঃ দেখ, তুমি আমার উপর খবরদারী করবেনা। এরকম পুরুষ আমার একদম পছদ না।
আমাকে কি কেউ ফোনও দিতে পারবেনা?
ছেলেঃ না মানে............
মেয়েঃ হয়েছে, তোমার সাথে কথা বলে লাভ নেই।
(মেয়েটি “ঠাস” করে ফোন রেখে দিবে। ছেলেটির কালো মুখ আরও কালো হয়ে যাবে)
দৃশ্য ২:
মঞ্চে ২ টি বিছানা দেখা যাবে। একপাশে ছেলেটি বিছানায় বসে থাকতে, আরেকপাসে তার রুমমেটকে ঘুমাতে দেখা যাবে। ছেলেটি ফোন দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে বিছানায় শুয়ে যাবে।
৫ মিনিট পর তার ফোন বেজে উঠবে।
মেয়েঃ কি ব্যাপার এত ফোন দাও কেন?
ছেলেঃ তুমি রাগ করে রেখে দিলে.........
মেয়েঃ তুমি আমাকে একদম বুঝ না।
ছেলেঃ আমি............
মেয়েঃ থাক আর কিছু বলা লাগবেনা, আমি এখন ঘুমাব।
ছেলেঃ আচ্ছা !
মেয়েঃ আচ্ছা মানে?
ছেলেঃ তুমি না ঘুমাবে?
মেয়েঃ তাই বলে তুমি আচ্ছা বলবে? আমার সাথে কথা বলতে তোমার একটুও ইচ্ছা করেনা ??
ছেলেঃ না মানে করে............
মেয়েঃ তাহলে সরি বল?
ছেলেঃ সরি।
মেয়েঃ আরও ১০ বার বল।
ছেলেঃ সরি সরি সরি......
মেয়েঃ থাক আর বলা লাগবেনা। এতবার সরি বলতে বলতে আমার ফোনের সব ব্যালেন্স শেষ হয়ে যাবে। তুমি আজ আমার মোবাইলে ফ্লেক্সি করনি কেন?
ছেলেঃ করেছিলাম তো।
মেয়েঃ ও আচ্ছা। এই শোন, কাল চলোনা মুভি দেখতে যাই।
(ছেলেটির রুমমেট ঘুম থেকে উঠে যাবে। উঠে ছেলেটিকে মারাত্মক ভাষায় গালি দিবে তার ঘুম ভাঙ্গানোর জন্য। ছেলেটি তাই আবার বারান্দায় চলে যাবে। )
দৃশ্য ৩:
আবারো বারান্দার দৃশ্যপট।
ছেলেঃ ও হ্যাঁ কি যেন বলছিলে?
মেয়েঃ কি হল, এত চিৎকার কেন?
ছেলেঃ না মানে কিছুনা।
মেয়েঃ বলছিলাম...
ছেলেঃ ও আচ্ছা মুভি দেখার.........
মেয়েঃ কথার মাঝখানে বাঁধা দাও কেন? আমি কখনও তোমার কথার মাঝে বাঁধা দেই?
ছেলেঃ না মানে......
মেয়েঃ তোমার কথায় আমি কবে বাঁধা দিয়েছি তুমি আমাকে এক্ষন বলবে।
ছেলেঃ সরি।
মেয়েঃ আমি রাখি, তোমার সাথে কথা বলতে আমার বিরক্ত লাগছে।
ছেলেঃ ঠিক আছে রাখ, কিন্তু তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ ছিল।
(মেয়েটি আগ্রহী হয়ে উঠবে)
মেয়েঃ কি কি বল বল প্লিজ।
ছেলেঃ নাহ, বললে কি আর সারপ্রাইজ থাকবে?
মেয়েঃ তাহলে কখন বলবে?
ছেলেঃ কাল মুভি দেখার সময় নিয়ে আসবো।
মেয়েঃ প্রমিজ?
ছেলেঃ প্রমিজ।
মেয়েঃ তুমি এত্ত ভালো কেন জান !!!! তুমি জানো আমি তোমাকে কত্ত ভালোবাসি?
ছেলেঃ আমিও তোমাকে ভালবাসি।
(কিছক্ষন নিরবতা চলবে। দুজনই ঘুমানোর কথা ভাবছে)
মেয়েঃ আচ্ছা জান আমি তাহলে রাখি।
ছেলেঃ আচ্ছা।
মেয়েঃ উম্মম্মম্মম্মম্মম্মম্মাহ !!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!! বাই বাই।
ছেলেঃ গুড নাইট।
বারান্দায় মশার কামড় খেতে খেতে ছেলেটি ভাবতে থাকলো মেয়েটিকে কি সারপ্রাইজ দেওয়া যায়। ২ দিন আগে মেয়ের রাগ থামাতে ১ জোড়া রুপার দুল সারপ্রাইজ দেওয়া লেগেছিল।
কাল কি সারপ্রাইজ দিতে হবে আর তার মূল্য কতো হতে পারে, এই নিয়ে ভাবতে ভাবতে ছেলেটি রুমে প্রবেশ করবে (মঞ্চ ত্যাগ করবে) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।