আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভালোবাসায় ব্যর্থ: কী করব

সব হারিয়ে ফেলেছি মোহিত কামাল | তারিখ: ০৮-০২-২০১২ ভালোবাসার ভিত শক্ত করে বিশ্বাস। যাকে ভালোবাসব, জনম জনম ভালোবাসব—এই বিশ্বাসই বড়। বিশ্বাস ছাড়া ভালোবাসা টিকে না, স্থায়ী হয় না। বাঁধনে বিশ্বাসের ঘাটতি দেখা দিলে ভালোবাসায় প্রতিস্থাপিত হতে পারে ঘৃণা কিংবা প্রতিহিংসা। সাহিত্যের ভাষায়, ভালোবাসার উল্টো পিঠে রয়েছে ঘৃণা।

বিজ্ঞানের ভাষায়ও ঘৃণা হচ্ছে ভালোবাসার বিপরীত আবেগ। যাকে ভালোবাসে মানুষ, যে সুন্দর মুখের জন্য প্রকম্পিত হয় মন, সেই মুখের প্রতি ঘৃণাও জাগতে পারে। তাই বন্ধনের পর পরিচর্যা করতে হবে সম্পর্কের। পরিচর্যা ছাড়া টেকে না সম্পর্ক। পরিচর্যাহীন সম্পর্কে ভাঙন আসতে পারে, ফাটল তৈরি হতে পারে।

তথ্যটা সব সময় মনে রাখার প্রয়োজন নেই। কিন্তু যখন সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়, ব্রেকআপ ঘটে দুজনের, কী প্রতিক্রিয়া হয়? কী করতে হবে তখন? কী করা উচিত? উত্তরগুলো মনে রাখা প্রয়োজন। ধারালো ছুরি দিয়ে পোঁচ দিলে কেটে যায় দেহ, রক্ত বেরোয়। রক্ত দেখে ভীত হই, চিৎকার করি আমরা। ব্রেকআপ হলেও ধারালো ছুরির মতো ভয়ংকর অস্ত্র আমূল বসে যায় বুকে।

মন রক্তাক্ত হয়, সেই রক্ত দেখি না আমরা। তাই বুঝি না কষ্ট কাকে বলে। তীব্র কষ্ট, বেদনা ও যাতনায় ভেঙে যায় মানুষের মন। ভেঙে যায় আত্মবিশ্বাসের ভিত। পুড়ে যায় আত্মপ্রত্যয়ী মন।

কষ্ট হয়, ভীষণ কষ্ট। ওই মুখ ছাড়া বাঁচব কীভাবে? এমনি চিন্তার বড়শিতে গেঁথে যায় মন। ঘুম চলে যায়। খাওয়ার রুচি হারিয়ে যায়, শরীর ভেঙে যেতে থাকে অনিয়মের কারণে। বেঁচে থাকার আগ্রহ, স্বপ্ন মরে যায়।

আত্মহত্যার ইচ্ছা জাগে, পরিকল্পনা জাগে। আত্মহত্যার জন্য প্রবৃত্তও হয় কেউ কেউ। কেউ বেঁচে যায়, কেউ বা চলে যায় ওপারে। মনে রাখা জরুরি, এ অবস্থার বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা রয়েছে। কষ্ট কমানো যায়।

নেভানো যায় কষ্টের আগুন। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ানো যায়। নতুনভাবে আবার জড়ানো যায় ভালোবাসার বাঁধনে। নতুন মুখ সমানভাবে আলোড়িত করতে পারে ব্রেন। নতুন ভালোবাসাও প্রথম ভালোবাসার মতো একই রকম ঢেউ জাগাতে পারে মনে।

এসবের জন্য ভাঙনের শুরুতেই নিতে হবে মনোচিকিৎসা। ভুল পথে যাওয়া চলবে না। মাদক নিয়ে কষ্ট ভোলার অশুভ ধ্বংসাত্মক পরামর্শ দিতে পারে কেউ কেউ। কষ্ট ভোলার এমন ভুল পথ গ্রহণ করে আসছে তরুণ প্রজন্ম। মাদক গ্রহণ এই সমস্যার সমাধান নয়।

মাদক গ্রহণ করলে যে ছেড়ে গেল, বিজয়ী হয়ে গেল সে। আঙুল উঁচিয়ে সে বলবে, ওই যে ওকে ছেড়ে ভালোই করেছি। এমন নেশাখোরের সঙ্গে সম্পর্ক কি চালিয়ে যাওয়া যায়? তাকে আত্মতৃপ্তিতে ভোগার সুযোগ দেওয়া চলবে না। ভেঙে না পড়ে, পড়াশোনার পথ থেকে ছিটকে না গিয়ে, মন জোগাতে হবে পড়াশোনায়। মাথা উঁচিয়ে চলতে হবে।

নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। মনোচিকিৎসায় সেটা অর্জন করা সম্ভব। কোনোমতেই বিট্রেয়ারকে জয়ী হতে দেওয়া যাবে না। এই বিশ্বাসে ঋদ্ধ হতে হবে। ভাঙা সম্পর্ক জোড়া লাগাতে কী করা যায়? কী করা উচিত? প্রথম কাজ হচ্ছে, নিজের অবস্থান শনাক্ত করা।

নিজেকে বোঝা জরুরি। বোঝার জন্য বিশ্লেষণ করতে হবে নিজেকে। সৎভাবে উপলব্ধি করতে হবে নিজের দোষ-ত্রুটি, নিজের ঘাটতি। ভাঙনের প্রাথমিক অবস্থায় নেতিবাচক আবেগের ধোঁয়াশায় ডুবে যাওয়ার কারণে সহজ হয় না নিজেকে বোঝা। এ কারণে প্রফেশনাল হেলপ নিতে হয়।

অবসেশন ঝেড়ে ফেলতে হবে। অবসেসড কাউকে পছন্দ করে না মানুষ। বারবার কল করা, টেক্সট মেসেজ পাঠানো, বারবার ই-মেইল করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ভাঙনের পর এমনটিই বেশি করে থাকে ভুক্তভোগীরা। না, এমন করা চলবে না।

বারবার হান্টিং করার প্রবণতা রুখতে হবে। মন শক্ত করতে হবে। এ অবস্থা থেকে নিজেকে রোখা না গেলে তুচ্ছ হয়ে যেতে হবে সঙ্গীর কাছে। নিজেকে তুচ্ছ করা চলবে না। সম্পর্ক ফিরে পেতে হলে আচার-আচরণ ও মননশীলতায় ফিরে যেতে হবে মধুর সম্পর্ককালীন সময়ে।

সর্বোপরি মনে রাখতে হবে, সঙ্গীকে আয়ত্তে আনা কিংবা নিয়ন্ত্রণের জন্য বেপরোয়া না হয়ে নিজেকেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নিজেকে সামলানো গেলে পুনরায় সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ সফল হওয়া সম্ভব। সঙ্গী যখন বুঝবে তিক্ত ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে পরিবর্তন ঘটেছে, সে-ই ফিরে আসার জন্য বাকি ৫০ শতাংশ চেষ্টা করবে। নিজের ভুলের জন্য সরি বলা যেতে পারে। তবে বারবার ক্ষমা ভিক্ষা চাওয়া কিংবা ভিক্ষুকের মতো হাত না পাতাই ভালো।

বরং সম্পর্কোন্নয়নের জন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।