কিছু না।
ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং,ফোন বাজতে থাকলো। তিন চারবার রিং হবার পর ফোন তুললাম। “হ্যালো,স্লামালিকুম”। “হারামজাদা,এই করে বেড়াস।
’’ অপর প্রান্তে অগ্নিশর্মা পুলক ভাই।
“ভাই, কি হইছে। ”
“সারাদিন পরে পরে ঘুমাস,বুঝবি কেমনে কি হইছে। লেটার বক্স চেক কর। বহুদিন পর একটা চিঠি লিখলাম।
”
“জি ভাই,দেখি। ”
“দেখ,দেখ। জীবনে কোনদিন প্রেমপত্র লিখিনাই,সেই আমি বাধ্য হয়ে তোকে এই চিঠি লিখছি। আমার মান ইজ্জতের ফালুদা বানিয়ে ছাড়লি। আমাকে এভাবে অপমান করার মানে কি?”
“ভাই মাইন্ড খাইলে সরি।
কারন আমরা অপনারে খোচানোর এই বদ স্বভাব ছাড়তে পারবো না। ”
“আরে, না রে। মান থাকলেই তো অপমান। হা হা হা হা। বিরাট ঘটনা ঘটে গেছে।
চিঠি পড়,বুঝবি”
কথা শেষ করার আগেই লাইন কেটে গেল।
ঝটপট লেটার বক্স থেকে চিঠি বের করে পড়া শুরু করলাম। প্রিয় পাঠক,আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম সেই ঐতিহাসিক চিঠি।
(ঈষৎ পরিমার্জিত এবং নিজের কিছু মন্তব্যও সাথে জুড়ে দিলাম। )
স্নেহের শাহরিয়ার
কুশলাদি বিনিময় নিষ্প্রয়োজন মনে করিতেছি।
আদর দিয়ে তোদের বাদর বানিয়েছি। গত সপ্তাহে তোর লেখা “পুলক ভাইযের না বলা কথাগুলো” তার উজ্জল প্রমান। (আমি কিন্তু সত্য ঘটনাই লিখেছি)। যাই হোক,লেখাটি পাঠকমহলে যে সুনামি তৈরী করেছে তাতে কোন দ্বিমত নাই। কিছু না বলেও আমার না বলা কথাগুলো জানিয়ে দিলি, এটা মানব ইতিহাসে ঠাঁই করে নিবে বলে আশা করা যায়।
বিরাট ঘটনা ঘটিয়া গিয়াছে। ম এবং ট গতকাল আমাকে কল করিয়াছিলো। তাহারা বেশ আক্ষেপ করিয়া বলিলো,“পুলক,তুই কি আমার পিছনে ঘুর ঘুর করিস নাই। তুই কি আমাকে কিছু বলতে চাইতি না। ভুলে গেলি এতো সহজে।
” (জনৈকাদের নাম সংগত কারনে প্রকাশ করা হলো না। উনাদের আক্ষেপ বাড়তে থাকুক)। কিছুটা মর্মাহত হইয়াছি,কেন তুই লেখাটি অনেক আগে লিখিস নাই। তাহলে কাহিনী অন্যরকম হইতে পারতো। (উহুম উহুম……….বুঝুন অবস্থা)যাহাই হোক,উইনস্টোন চার্চিল বলিয়াছিলেন “look back and step forward”।
এক গ্রীক নাট্যকার বলিয়াছেন “পুরানো দুঃখকে নিয়ে নতুন করে কেঁদোনা। ”(এই দুই কোটেসান দিয়ে পুলক ভাই উনার জ্ঞানের পদচ্ছাপ রাখলেন। তবে মনে রাখতে হবে,অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী)আইনস্টাইনও বলিয়াছেন “অতীত নয়,বর্তমানটাই আসল”(আদৌ কি এই কথা আইনস্টাইন বলেছেন। নিজে একটা কথা বলে বিখ্যাত কারো নাম দিয়ে চালানো পুলক ভাইয়ের পুরোনো রোগ)যদিও আমি এসব জ্ঞানের কথা শুনাইতে এই পত্র লিখি নাই,তবু জেনে রাখা ভালো। যা বলতে চাই।
আরব বিশ্বে অতি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি আনন্দিত,উদ্বেলিত। প্রথমেই জানিয়ে দেই আমি তাদের সাথে একাত্বতা ঘোষনা করছি। গনতন্ত্রের জন্য তাদের ডাকে সাড়া না দিয়ে থাকা যায়। আমিও চাই আমার মনের রাজ্যে যে স্বৈরশাসন চলছে তার পতন ঘটুক।
একা সেই রাজ্য চালাতে চালাতে আমি ক্লান্তও বটে। আমি চাই কেউ আসুক,আর ক্ষমতার অংশীদার হোক। ক্ষমতার মমতা আমাকে আর টানেনা। আমি বলবো না,আমাকে ভালোবাসতেই হবে। আমি চাই কেউ আমার মনের রাজ্যের ক্ষমতার অংশীদার হোক।
তাহরীর স্কয়ার এর মতো তাই আমার বুকের বামপাশে বিশাল জায়গা খালি রেখেছি। ক্ষমতার ভাগ পেতে আগ্রহীদের জানিয়ে দে।
জুয়েল বাবলু আসিফদের আমার শুভেচ্ছা জানাবি। ভালো থাকিস,সুখে থাকিস,যেনো ভূতে কিলায়।
ইতি
অখ্যাত ছড়াকার পুলক
প্রিয় পাঠক, ক্ষমতার টানাপোড়ন চলতে থাক,চলতে থাক অংশীদারিত্ব নিয়ে মারামারি।
মনে রাখবেন,অধিকারের মতো ক্ষমতাও কেউ কাউকে দেয়না। ক্ষমতা আদায় করে নিতে হয়। ক্ষমতা ধরে রাখতে হ্য় অন্যথায় সেই কথাটি আবার বলতে হবে “পুরুষ দুই প্রকার-জীবিত এবং বিবাহিত”। আর একটা কথা, অতীত-ভবিষ্যতের পীড়াপীড়িতে বর্তমানে বাচুন। আজকে বাচুন,আজকের জন্য বাচুন।
নগিব মাহফুজ এর একটা কবিতা শেয়ার করলাম
“আমার ঘর বলে
আমাকে ত্যাগ করোনা
কারন আমি তোমার অতীত
আমার সম্মুখের রাস্তা বলে
আমাকে অনুসরন করো
কারন আমি তোমার ভবিষ্যত” ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।