একজন অলস কল্পবিলাসি মনু ঈদের দিনের মত বোরিং দিন আর নাই।
অনেকটা স্কুল জীবনের থার্ড টার্ম পরীক্ষার পরের লম্বা ছুটির মত। ঐ যে, পরীক্ষার পর হেন করেঙ্গা তেন করেঙ্গা করার খোয়াব দেখা আর তদানুযায়ী বিশাল ফর্দ তৈরি করতে করতে কোনরকমে পরীক্ষাটা পার করা এবং অতঃপর পুরো ডিসেম্বর ধরে লেপের ওমে শুয়ে সে ফর্দানুযায়ী অশ্বডিম্ব প্রসব এবং আসন্ন বার্ষিক কেয়ামতের (মানে ফলাফল প্রকাশের দিন) দিনের জন্য অধীর অনাগ্রহে অপেক্ষা।
সবার জন্য হয়ত এরকম নয়, তবে আমার জন্য এরকমই।
তাও ভাল, আমাদের জমানায় অন্তঃত অশ্বডিম্ব প্রসবের বিলাসিতা ছিল! এখনকার পোলাপাইনের তো তাও নেই! বৃত্তি পাব এই আশা কেউ কস্মিন কালেও করেনাই, তাই ৫ম/৮ম শ্রেণীতে পেইন সইতে হয়নি।
এসএসসিতে এ+ পাব সেই প্রত্যাশা অবশ্য ছিল, তাই ক্লাস সেভেন থেকেই উপদেশ শুনতাম, ''আর ক'দিন পরেই এসএসসি দিবা, এখন থেকেই ভালভাবে পড়ালেখা করা শুরু কর..। '' আমার বোন, ভাগ্নে/ ভাগ্নিদের ক্লাস থ্রি থেকেই উপদেশ পেতে শুনি ''আর ক'দিন পরেই পিএসসি দিবা, তারপর জেএসসি দিবা, দেন এসএসসি, এইচএসসি, তারপর আছে ভর্তি পরীক্ষা; তাই এখন থেকেই ভালভাবে পড়ালেখা করা শুরু কর....'' আমার বাবা মা শুধু উপদেশ দিয়েই ক্ষান্ত হত, কিন্তু অধুনা সুপার প্যারেন্টসরা ডিসেম্বরেই তাদের সোনামনিদের নিয়ে আগামী বছরের কোচিং এ দৌড়াদৌড়ি করতে শুরু করে দেন। জেএসসি, পিএসসি চালু করার পিছনে লজিকটা আমি বুঝি, কিন্তু পিচ্চিদের উপর এহেন অত্যাচারকে অমানুষিক ছাড়া কিছু বলা যায় না।
ঈদের দিনের অপেক্ষাটা অবশ্য 'ঈদের ছুটি শেষ হয়না ক্যান??' টাইপের। সে অপেক্ষাটা কাটানোর মত কোন টুলও থাকেনা।
কোথাও ঘুরতে যাব? যাবটা কই? টিভি দেখব? রিমোট আব্বুর দখলে. তিনি বসে বসে ঈদের বিশেষ বিজ্ঞাপনমালা দেখবেন। নেটে ঘুমাব? আমার কোন বড় ভাই একই কাজ করছেন, পিসি খালি নাই। সবমিলিয়ে পুরাই হরেন্ডাস অবস্থা।
দেখি, কাল থেকে বুড়োদের অফিস শুরু...এরপর যদি সময়টা একটু ভাল কাটে।
হাসান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।