আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভার আর হেলপারের কারনে এইডস ঝুকিতে বাংলাদেশ

আশায় আছি সমৃদ্ধ দেশের। ভারতীয় ট্রাক চালকদের কারণে এইডস ঝুঁকিতে অবস্থান করছে বন্দর শহর বেনাপোল। ভারত থেকে পণ্য নিয়ে আসা ট্রাক চালক ও হেলপাররা কোনো পদ্ধতি গ্রহণ করতে না চাওয়ায় এ আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। জানা যায়, পণ্যের চালানের সঙ্গে আসা ভারতীয় ট্রাক চালক ও হেলপাররা দীর্ঘদিন বেনাপোলে অবস্থানের সময় তারা ভাসমান দেহ ব্যবসায়ী নারীদের সঙ্গে মেলামেশা করে থাকে। ভারতে যে পরিমাণ এইডস ও এইচআইভি রোগী রয়েছে, তার সিংহ ভাগ ট্রাক ড্রাইভার ও হেলপার।

এ জন্য বেনাপোল থেকে এইডস ছড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। ভারত থেকে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করা হয় তার শতকরা ৭৫ ভাগ আনা হয় বেনাপোল দিয়ে। বেনাপোল বন্দরের পরিচালক গোলাম মোস্তফা জানান, প্রতিদিন ভারত থেকে সাড়ে ৩শ থেকে ৪শ ভারতীয় ট্রাক পণ্য নিয়ে বেনাপোলে আসে। এর মধ্যে অনেকেই পণ্য খালাস না হওয়ায় ওই দিন ফিরে যেতে পারে না। বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক মহসিন মিলন জানান, আমদানি কারক পণ্য ছাড় করিয়ে না নেয়া পর্যন্ত ভারতীয় ট্রাক চালকদের বন্দরের মধ্যেই থাকতে হয়।

এতে ৭/৮ দিন থেকে ১০/১৫ দিন এমনকি কারো কারো এক মাসও থাকতে হয়। বন্দরে সব সময় গড়ে ৮শ থেকে ১ হাজার ভারতীয় ট্রাক চালক ও হেলপার থাকে। বিষয়টি স্বীকার করেন ভারত থেকে পণ্য নিয়ে আসা ট্রাক চালক বাবন রায়। স¤প্রতি বেনাপোল বন্দরে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জানান, ভারত থেকে ট্রাক বোঝাই পণ্য নিয়ে ৫ দিন আগে তিনি বেনাপোলে এসেছেন।

কবে দেশে ফিরবেন জানেন না। তিনি জানান, পণ্য খালাস না হওয়ায় কখনো কখনো ১৫/২০ দিনও থাকতে হয়। বাবন রায়ের চেয়ে বয়সে তরুণ পশ্চিমবঙ্গের বারাসাতের পাইকপাড়ার মোঃ সেলিমের কাছে একটু ইঙ্গিত দিয়ে জিজ্ঞাসা করতেই সে মুচকি হেসে জানায়, দাদা এখানে সবই পাওয়া যায়। তবে কোনো পদ্ধতি তারা গ্রহণ করে কিনা জানাতে চাইলে সে নিরুত্তর থাকে। বেনাপোলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতীয় ট্রাক চালক ও হেলপাররাসহ ট্রাকের সঙ্গে আসা লোকজন পোর্ট কেন্দ্রিক গড়ে ওঠা ভাসমান নারীদের সঙ্গে মেলামেশা করে।

রাতে বন্দর এলাকায় গেলেই এসব দেহ ব্যবসায়ীদের চোখে পড়ে। পোর্টের নিরাপত্তায় নিয়োজিতদের সঙ্গে গোপন আঁতাত করেই তারা এই ব্যবসা করে। আর এ জন্যই বেনাপোল এইডস ছড়ানোর জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বেনাপোল এইডস ঝুঁকি রোধে বেশ কয়েকটি সংস্থা এখানে কাজ করছে। এদের মধ্যে পিডিসি, এসএমসি, মধুমিতা সুরক্ষা ও পদক্ষেপ অন্যতম।

মধুমিতা সুরক্ষার প্রোগ্রাম অফিসার শারমিন আক্তার জানান, ভারতে ২৫ লাখ এইচ আইভি পজিটিভ রোগী রয়েছে। যার মধ্যে বেশির ভাগই ট্রাক চালক। এ জন্যই বেনাপোল বন্দর এইডস ছড়ানোর জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বেনাপোলে যাতে এইডস না ছড়ায় সে জন্য তারা কাজ করছেন। এসএমসির কর্মী রাজু জানান, তারা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছেন।

ভাসমান যে সব দেহ ব্যবসায়ী রয়েছে, তাদের মাধ্যমে যাতে এইডস না ছড়ায় সে জন্য তাদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এমনকি ভারতীয় ট্রাক চালকদের তাদের কাছ থেকে সহায়তা নিতে বলা হয়। কিন্তু তারা তা গ্রহণ করে না। অপর একটি সূত্র জানায়, ভারতীয় ট্রাক চালকরা কোনো পদ্ধতিই গ্রহণ করতে চায় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনজিওর এক কর্মী জানান, তারা মাসে ভাসমান নারী দেহ ব্যবসায়ীর মধ্যে ৮০ থেকে ৯০ জনের টেস্ট করে থাকে।

এ পর্যন্ত তারা দুজন এইডস রোগীও পেয়েছেন। তবে তাদের কোনো তথ্য তিনি প্রকাশ করেননি। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন এইচআইভি পজেটিভ বলেও তিনি জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ কর্মী জানান, ভারতীয় ট্রাক চালকদের বন্দরে থাকার সময় নিয়ম-কানুনের মধ্যে থাকতে হয়। ইচ্ছা করলেই তারা বাইরে যেতে পারে না।

তাই প্রশাসনিক কড়াকড়ি থাকলে ভ্রাম্যমাণ দেহ ব্যবসায়ীদের পদচারণা সেখানে কমতো। আর তা হলে এইডস ছড়ানোর ঝুঁকিও অনেকাংশে কমে যেতো। ভারতকে বাংলাদেশ ট্রান্জিট দেবে ঠিক আছে। কিন্তু এসব ঝুঁকি কিভাবে মোকাবেলা করবে? গওহর রিজভীর কাছে এর কি কোন সদুত্তর আছে? সুত্রঃ - ভোরের কাগজ।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.