লং মার্চ। বাংলাদেশের এই মুহুর্তের সবচেয়ে আলোচিত এবং সমালোচিত বিষয়। আসুন দেখি সংক্ষিপ্ত ইতিহাস কি বলে ।
১৯২৭ সাল। গৃহযুদ্ধ শুরু হয় সমগ্র চীন জুড়ে।
চার বছর পর, ১৯৩১ সাল । নয়া প্রতিষ্টিত সোভিয়েট রিপাবলিক অব চায়নার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় কমিউনিস্ট নেতা মাও সেতং । সোভিয়েট রিপাবলিক অব চায়নার কেন্দ্র ছিল দক্ষিণপূর্ব চীনের জিয়াংজি প্রদেশ। অপরদিকে, ১৯৩০ থেকে ১৯৩৪ সালে চায়না জাতীয়তাবাদীরা সংগঠিত হয় Chiang Kai-shek এর নেতৃত্তে। জাতীয়তাবাদীরা ধারাবাহিকভাবে, পর পর পাঁচবার অবরোধ করে রিপাবলিকানদেরকে ।
গেরিলা কৌশল প্রয়োগ করে প্রথম চারটি অবরোধ ব্যার্থ করে দেয় মাও সেতং। বিপদে পড়ে শেষবার। অর্থাৎ ৫ম বার। এবার, Chiang একটি বিশাল বাহিনী গড়ে তুলে এবং কমিউনিস্ট অবস্থানের আশেপাশে শক্ত ঘাটি গেড়ে অবস্থান নেয়। মাও সেতং কে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।
নতুন কমিউনিস্ট নেতৃত্ত প্রচলিত যুদ্ধ কৌশলের সিদ্ধান্ত নেয়।
পরবর্তিতে, অনিবার্য পরাজয়ের মুখে কমিউনিস্টরা সিদ্ধান্ত নেয় যে, অবরোধ বলয়ের দুর্বল অংশ দিয়ে বেরিয়ে চলে যাবে। ব্যাপক গোপনীয়তা এবং অন্যান্য কৌশল অবল্মবন করা হয় এ ব্যাপারে। লং মার্চ শুরু হয়। দিনটি ছিল অক্টোবর ১৬, ১৯৩৪ সাল।
জাতীয়তাবাদীরা যখন বুঝতে পারে যে রেড আর্মির প্রধান অংশ চলে গেছে, ততদিনে কয়েক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। কমিউনিস্টদের অপসৃত বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল ৮৫ হাজারের মত। এছাড়াও ছিল হাজার হাজার অন্যান্য সদস্য। যুদ্ধাস্ত্র এবং সকল মালামাল সামগ্রী বহন করা হয় মানুষের পিঠে ,ঘোড়া টানা গাড়ীতে এবং যে যেভাবে নিতে পারে। লং মার্চের লাইনটি বিস্তৃত ছিল মাইলের পর মাইল।
কমিউনিস্টরা সাধারনত মার্চ করত রাতের বেলায়। মশালের আলোর এই লাইনটি অনেক দুর থেকে দেখা যেত। দেখা যেত পাহাড় ও উপত্যকের মাঝে একটি আঁকাবাকা আলোর মিছিল এগিয়ে চলছে।
ইতিমধ্যে, মাও ধীরে ধীরে পার্টিতে তার প্রভাব ফিরেয়ে আনতে সক্ষম হয়। ১৯৩৫ সালের জানুয়ারী মাসে, কমিউনিস্ট পার্টির এক সভা অনুষ্ঠিত হয় দখলকৃত Zunyi শহরে।
সভায় সে আবারও নির্বাচিত হয় কমিউনিস্ট পার্টির সর্বোচ্চ সামরিক ও রাজনীতিক নেতা হিসাবে। নতুন কৌশল অবল্মবন করে মাও। লং মার্চকে ভেঙে কয়েকটি ভাগ করা হয়। সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, প্রতিটি ভাগ ভিন্ন ভিন্ন পথে অগ্রসর হবে যাতে শত্রুরা বিভ্রান্ত হয়। নতুন গন্তব্য সানজি প্রদেশ।
সেখানে রয়েছে জাপানী দখলদার বাহিনী। কমিউনিস্টরা আশা করে যে জাপানীদের কে সেখানে পরাজিত করবে। এতে করে আরও বিপুল সংখ্যক চীনা জনতার সর্মথন লাভ করতে সর্মথ হবে।
অবশেষে চরম ক্ষুধা, বিমান আক্রমন এবং প্রায় প্রতিদিন জাতীয়তাবাদী বাহিনীর সাথে স্থলযুদ্ধ পেরিয়ে, ১৯৩৫ সালের অক্টোবরের ২০ তারিখ তারা উত্তর সানজি প্রদেশে এসে থামে। সেখানে তারা রেড আর্মির অন্যান্য দলগুলোর সাথে মিলিত হয়।
লংমার্চ শেষ হয়।
এক হিসাব অনুযায়ী আট হাজার বা তার চেয়ে কম সংখ্যক পুরো লং মার্চ সমাপ্ত করতে সর্মথ হয়। এসময় তারা অতিক্রম করে চার হাজার মাইল, চব্বিশ নদী এবং আঠারটি মাউনট্নে রেন্জ।
Source: history.com
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।