সৌরজগতের বামন গ্রহ প্লুটোর দুটি উপগ্রহের নামকরণ করেছেন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন বা আইএইউয়ের গবেষকেরা। প্লুটোর এই দুই চাঁদের জন্য গ্রিক পুরাণ থেকে নেওয়া হয়েছে দুটি নাম—‘কারবেরাস’ ও ‘স্টিক্স’। এক খবরে জানিয়েছে বিবিসি অনলাইন।
২০১১ ও ২০১২ সালে প্লুটোর এই দুই চাঁদ আবিষ্কার করেছিলেন গবেষকেরা। প্রাথমিকভাবে তাঁরা এগুলোর নামকরণ করেছিলেন ‘পি-৪’ ও ‘পি-৫’।
পরে প্রস্তাবিত ১২টি নামের মধ্য থেকে অনলাইনে ভোটের মাধ্যমে ভলকান, কারবেরাস ও স্টিক্স নামগুলো পছন্দ করেন মহাকাশ-প্রেমীরা। অনলাইন ভোটের শীর্ষে থাকা ভলকান নামটির প্রতি আইএইউয়ের গবেষকেরা ভেটো দিয়ে তালিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা কারবেরাস ও স্টিক্স নাম দুটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন তাঁরা।
নামের রহস্য
গ্রিক পুরাণে কারবেরাস হলো পাতালপুরীর পাহারাদার তিন মাথাওয়ালা একটি কুকুর। অর্থাত্, সব সময় সজাগ থাকে কারবেরাস। গ্রিক পুরাণে হারকিউলিস কাঁধে করে তুলে এনেছিলেন কারবেরাসকে।
আর স্টিক্স হলো মৃত্যুনদী। প্রতিটি মৃত আত্মাকে এ নদী পার হতে হয়। গ্রিক পুরাণের পবিত্র এ নদীর অবস্থান পৃথিবী ও পাতালপুরীর সীমান্তে। স্টিক্স নদীর মাঝি বিশেষ মোহরের বিনিময়ে মৃত আত্মাদের নদী পার করে দেয়। এ নদীর পানিতে ডুবিয়ে পরি থেটিস তার ছেলে অ্যাকিলিসের শরীর অমর করেছিল।
ফলে গ্রিক ও ট্রয়ের যুদ্ধে তার শরীরে কোনো অস্ত্র প্রবেশ করতে পারেনি। তবে গোড়ালির একটি অংশ স্টিক্সের পানিতে না ডোবায় সেটি অ্যাকিলিসের দুর্বল অংশ হয়ে দাঁড়ায়।
প্লুটো
১৯১৫ সালে প্লুটো নামে একটি গ্রহের অস্তিত্বের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন বিজ্ঞানী পারসিভাল পাওয়েল। প্লুটো আবিষ্কৃত হয় ১৯৩০ সালে। বিজ্ঞানী ক্লাইড ডব্লিউ টমবাউ এটি আবিষ্কার করেন।
গ্রহটির নামকরণ করা হয় গ্রিক পুরাণের মৃত্যুদেবতার নামে—‘প্লুটো’। পুরাণমতে, প্লুটো হলো পাতালপুরির দেবতা। সে স্যাটার্ন বা শনির ছেলে, জুপিটার বা বৃহস্পতি ও নেপচুনের ভাই এবং প্রসপারপাইনের স্বামী।
পৃথিবীর হিসাবে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে প্লুটোর সময় লাগে ২৪৮ বছর। সূর্য থেকে প্লুটোর গড় দূরত্ব প্রায় ৬০০ কোটি কিলোমিটার।
কক্ষপথে প্লুটো গতি মাত্র চার দশমিক সাত কিলোমিটার। এর ব্যাস প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার। তবে আবিষ্কারের ৭৬ বছর পরে ২০০৬ সালে এসে প্লুটোকে সৌরজগতের গ্রহতালিকা থেকে বাদ দেন গবেষকেরা। এ সময় নেপচুন গ্রহের বাইরের এলাকায় থালাসদৃশ বরফশীতল অঞ্চল কিউপার বেল্টে অবস্থিত প্লুটোকে বামন গ্রহের মর্যাদা দেন গবেষকেরা।
প্লুটোর পাঁচ চাঁদ
প্লুটোর সর্ববৃহত্ চাঁদ বা উপগ্রহ ‘চ্যারন’ আবিষ্কৃত হয় ১৯৭৮ সালে।
এরপর ২০০৬ সালে হাবল টেলিস্কোপে ধরা পড়ে প্লুটোর দ্বিতীয় ও তৃতীয় উপগ্রহ যথাক্রমে নিক্স ও হাইড্রা। সবগুলো চাঁদের নাম পুরাণ থেকে নেওয়া হয়েছে। ২০১১ সালে পি-৪ উপগ্রহ আবিষ্কার করে হাবল। ২০১২ সালে আবিষ্কৃত হয় পি-৫।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।