বন্যার ক্ষতি রুখতে টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে ভারত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী ২০১২
সংসদ রিপোর্টার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বন্যার ক্ষয়ক্ষতি রুখতেই ভারত টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে। ভারতের নাগাল্যান্ড ও মনিপুর রাজ্যের সীমান্তের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে উৎপন্ন বরাক নদীর বিভিন্ন উপনদীর প্রবাহের কারণে বন্যায় আসাম রাজ্যের কাছাড় এলাকায় প্রায়ই ব্যাপক ক্ষতি হয়। গতকাল জাতীয় সংসদে এমএ মান্নানের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের ১৯৭২ সালের প্রথম বৈঠকে আসামের কাছাড় ও বাংলাদেশের সিলেটে বন্যার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর উভয় দেশের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে একটি সমীক্ষা কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি বন্যার ক্ষয়ক্ষতি প্রশমনে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে সুপারিশ গ্রহণ করে।
তিনি বলেন, কমিটি মাঠ পর্যায়ের পরিদর্শন শেষে একটি প্রতিবেদন নদী কমিশনে পেশ করে। কমিটি দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম গ্রহণের সুপারিশ করে। বরাক নদীর উজানে ভুবন্দর সাইটে বাঁধ নির্মাণ বিষয়ে অনুসন্ধান শিগগিরই সম্পন্ন করার পরামর্শ দেয়। তিনি আরও বলেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল ২০০৯ সালের ২৯শে জুলাই ভারতের প্রস্তাবিত টিপাইমুখ প্রকল্প পরিদর্শন করেন। ওই কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- পরিদর্শনকালে তারা (প্রতিনিধিদল) ওই এলাকায় বাঁধ নির্মাণ সংক্রান্ত কোন অবকাঠামো দেখেনি।
টিপাইমুখ বাঁধের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে দীপু মনি বলেন, ভারতের পক্ষ থেকে ২০০৯ সালের মে মাসে কূটনৈতিক সূত্রে বাংলাদেশকে টিপাইমুখ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বিষয়ে জানায় যে, প্রস্তাবিত প্রকল্পে কোন সেচ উপাদান বা নদী থেকে পানি প্রত্যাহারের কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ভারত আরও জানায়, প্রকল্পের কাজ অধ্যাবধি শুরু হয়নি। এ কে এম মাইদুল ইসলামের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে চীন এখন পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের পানি প্রত্যাহার সংক্রান্ত কোন কার্যক্রম গ্রহণের প্রস্তাব করেনি। চীন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যৌথ আলোচনার একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরকালে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে।
তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশকে নদী ও পানি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি প্রবাহ সংক্রান্ত স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আলোকে চীন বাংলাদেশকে পানি প্রবাহের তথ্যাদি নিয়মিত সরবরাহ করে আসছে। আমরা আশা করি, চীনের মধ্যে বিদ্যমান পানি সংক্রান্ত বিষয়াদি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করা হবে। এডভোকেট সানজিদা খানমের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সংসদকে বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্য পাঠানোর জন্য বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী ও পুলিশের ক্ষেত্রে স্ব স্ব নীতিমালা রয়েছে। বাংলাদেশ শুধু শান্তিরক্ষা মিশনের সদস্য প্রেরণ করে।
মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের উপস্থিতি সুদৃঢ় ও উজ্জ্বল করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচেষ্ট রয়েছে। যে সব দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস রয়েছে সেগুলোকে নিজস্ব জমি ও ভবনে স্থানান্তরের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার।
ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরের সময় নেয়া সিদ্ধান্ত অনুসারে, ভারত ও বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে বার্ষিক বৈঠকের কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফরের কার্যক্রমও এগিয়ে চলছে বলেও জানান তিনি। একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরও জানান, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের সন্ত্রাস, মাদকসহ জঙ্গিবাদ রুখতে বিভিন্ন যৌথ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
এখন পর্যন্ত দক্ষিণ এশীয় টাস্কফোর্স গঠন না হলেও এ মূল কাজ অব্যাহত রয়েছে। বজলুল হক হারুনের প্রশ্নের জবাবে দীপু মনি জানান, অর্থ মন্ত্রণালয় এ বছরের প্রাধিকার ভিত্তিতে নয়টি দূতাবাসের পদ সৃষ্টি ও লজিস্টিক সুবিধার অনুমোদন ও এ সংক্রান্ত বাজেট বরাদ্দের নীতিগত সম্মতি দিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিক সম্মতি পাওয়া গেলে ব্রাজিল, লেবানন, পর্তুগাল, মরিশাস, মেক্সিকোতে পূর্ণাঙ্গ দূতাবাস খোলা হবে। এছাড়া চীনের কুনমিং ও তুরস্কের ইস্তাম্বুলে কন্স্যুলেট, ভারতের মুম্বইতে উপ-হাইকমিশন ও আগরতলায় সহকারী কমিশন খোলা হবে।
(কপি & পেস্ট)View this link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।