ন্সীগঞ্জ, জানুয়ারি ২৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- কুয়েতে খুন হওয়া বাংলাদেশি নাগরিক মহিদুলের পরিবার ২১ লাখ টাকায় তিন আসামিকে ক্ষমা করতে রাজি হয়েছে, যাদের সবাই প্রবাসী বাংলাদেশি।
বৃহস্পতিবার মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে মহিদুলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পরিবারের বৈঠকে এই সমঝোতা হয় বলে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ব্যারিস্টার গোলাম সারোয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
সিঙ্গাইরের তাহের আলীর ছেলে মহিদুল (৪৫) গতবছর কুয়েতে খুন হন। তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম কুয়েতে মামলা করলে সেখানকার আদালত তিন প্রবাসী বাংলাদেশিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। উচ্চ আদালতও এই রায় বহাল রাখে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাগবাড়ি বিবন্ধী গ্রামের ইকবাল ঢালী (২৫), তার ভাই হৃদয় ঢালী (২৩) এবং কুমিল্লার হোমনার রবিউলের ছেলে রমজান।
রায়ের পর থেকেই রমজান ও ঢালী ভাইদের পরিবারের পক্ষ থেকে মৃত্যুদণ্ড মওকুফের জন্য চেষ্টা শুরু হয়। কিন্তু কুয়েতের আইন অনুযায়ী, কেবল নিহতের পরিবার ক্ষমা করলেই সেখানকার সরকার দণ্ড মওকুফ বা লাঘব করতে পারে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে মহিদুলের মেয়ে ও ভাই-বোনের কাছে ইকবাল, হৃদয় ও রমজানের প্রাণভিক্ষা চাওয়া হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। বৃহস্পতিবার সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যস্ততায় দুই পক্ষের বৈঠক হয়।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক গোলাম সারোয়ার ছাড়াও মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নিজাম উদ্দিন এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে রাতে গোলাম সারোয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নিহতের পরিবার ৬০ লাখ টাকা দাবি করেছিল। তবে আলোচনার পর তারা ২১ লাখ টাকার বিনিময়ে ক্ষমা করতে রাজি হয়েছে। ”
বাংলাদেশ সরকার বিদেশের মাটিতে এ দেশের নাগরিকদের এই মৃত্যুদণ্ড মওকুফে সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। সবার সহযোগিতায় এ চেষ্টা সফল হবে বলে আমরা আশা করছি।
”
দণ্ডপ্রাপ্ত দুই ভাই ইকবাল ও হৃদয়ের মামা নরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আগামী সোমবার মহিদুলের পরিবার ক্ষমার কাগজপত্রে সই করবে বলে জানিয়েছে। তবে তার আগে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের যৌথ অ্যাকাউন্টে ২১ লাখ টাকা জমা করতে হবে।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক গোলাম সারোয়ার জানান, নিহতের পরিবারের ক্ষমা করার দলিলে সই করলে আইনজীবীর মাধ্যমে তা কুয়েতের সংশ্লিষ্ট আদালতে পাঠানো হবে। এরপর সেখান থেকেই দণ্ড মওকুফের ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে এক মিশরীয় নিরাপত্তকর্মীকে হত্যার দায়ে গত ৭ অক্টোবর সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে প্রকাশ্যে দিনের বেলা আট বাংলাদেশির শিরশ্ছেদ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৃথক খুনের মামলায় দুই বাংলাদেশির শিরশ্ছেদের দণ্ড মওকুফে নিহতদের পরিবারকে রাজি করানোর চেষ্টা চলছে।
বিডিনিউজ লিংক ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।